শোভন কি তবে তৃণমূলেই ফিরছেন, ভোটের ফলপ্রকাশের পরই প্রশংসা-বাণীতে চড়ল জল্পনা

শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ছা়ড়াই হয়ে গেল ২০২১-এর মহাযুদ্ধ। সেই যুদ্ধে বিজেপিকে হারিয়ে টানা তিনবারের জন্য ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। একুশের কুরুক্ষেত্রে সেই বিরাট জয় আসার পরই শোভন-বৈশাখীদের সুর বদলে গিয়েছে। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসা করেছেন। তার জেরেই জল্পনার পারদ চড়েছে।

রাজ্যপালকে ফোন করে রাজনৈতিক চমক দেওয়ার চেষ্টা, করোনা মোকাবিলায় মন দিন, মোদীকে পাল্টা তোপ ডেরেকের

মমতাকে অভিনন্দন বার্তায় অন্য সুর

একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার ও শোভনবাবুর পক্ষ থেকে অনেক অভিনন্দন। উনি একজন সুশাসক। ওঁর কাছে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞ। শোভনবাবু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরও উনি কিন্তু নিরাপত্তা তুলে নেননি। একবারও মনে করেননি, শোভনবাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাবেন, নিরাপত্তা তুলে নিই।

তৃণমূলে ঘরওয়াপসি প্রসঙ্গ তাৎপর্যপূর্ণ

শুধু কৃতজ্ঞতার বার্তাই দেননি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলে ঘরওয়াপসি নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, রাজনীতি একটা সম্ভাবনার শিল্প। তাই সবসময় সমস্ত সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাঁর এই মন্তব্য নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে। তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় ফেরার পর শোভন-বৈশাখীরা ফের ঘরমুখী হবেন?

দরাজ প্রশংসা ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক মহলকে

বৈশাখী বলেন, মানুষ যাঁদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন, তাঁদের অভিনন্দন। সবসময় মানতে হবে মানুষের রায়। মানুষের রায়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বাংলার ক্ষমতায়। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি যেভাবে লড়াই করেছেন, যেভাবে জিতেছেন, তাঁর কোনও প্রশংসাই য়থেষ্ট নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর এই দরাজ প্রশংসা ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক মহলকে।

নন্দীগ্রামে মমতার হার আদতে হার নয়!

এদিন নন্দীগ্রামের ফলাফল প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন বৈশাখী। বলেন, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারকে হার হিসেবে দেখছি না। উনি ২৯৪ আসনেই প্রার্থী। তাই একটা সিট কোনও ফ্যাক্টর নয়। তারপর নন্দীগ্রামে গণনায় বিভ্রান্তি হয়েছেস এমনকী ম্যানুপুলেশনের অভিযোগও উঠেছে।

আবেগের সিদ্ধান্ত! আবেগের অপর নামই মমতা

বৈশাখী আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের ঘটনায় আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। আদালত যতক্ষণ না রায় দিচ্ছে, ততক্ষণ সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে এটাকে হার হিসেবে মানা ঠিক নয়। তিনি যে কলকাতা থেকে নন্দীগ্রামে গিয়ে লড়েছেন একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে, সেই সিদ্ধান্তই তাঁকে জয়ী করেছে। হতে পারে সেটা আবেগের সিদ্ধান্ত। কেননা আবেগের অপর নামই তো মমতা।

শোভনের ঘরওয়াপসি! ভবিষ্যৎ বলবে

মমতাকে নিয়ে এমন প্রশংসাসূচক কথা বার্তা বলার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে তৃণমূলে কবে ফিরছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি রাজনীতিকে সম্ভাবনার শিল্প আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ তা বলবে। আর শোভন? বৈশাখীর কথায়, শোভনবাবু এমন একজন নেতা, যিনি তৃণমূল ছাড়ার পরদিনই বিজেপিতে যোগদান করেননি। তৃণমূল ছেড়েছিলেন আদর্শ-নীতির লড়াইয়ে।

যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতেই সমর্থন বৈশাখীর

বৈশাখী বলেন, শোভনবাবু বিজেপিকে বেছে নিয়েছিলেন অনেক পরে। কিন্তু সেখানে কাজের মতো পরিবেশ পাননি। তাই সরে এসেছেন। সব সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন। শোভনবাবুও আবেগপ্রবণ মানুষ। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেন, তাতেই সমর্থন করব। আমরা মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছি না।

দলনেত্রী গড়েন, ভাঙেন তো না! বিজেপিকেও বার্তা

বৈশাখী বলেন, দলনেত্রী গড়েন, ভাঙেন তো না। গড়ার লক্ষ্য তিনি যা করণীয় করেছেন। আর শোভনবাবু ফিরছেন বলে এমন খবর আমার কাছে নেই। আর ফিরে যাওয়ার জায়গাও যে সঙ্কুচিত হয়েছে, সেটাও ঠিক। আর বিজেপির হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কর্মীদের সততা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ নেই। কিন্তু বাংলায় যাঁরা মাথা ছিলেন, তাঁরা গ্রাউন্ড রিয়েলিটি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেছেন।