রাজ্যজুড়ে হিংসা
নন্দীগ্রাম থেকে শীতলকুচি, এমনকী খোদ কলকাতাতেও একের পর এক হিংসার ঘটনা সামনে এসেছে। বেলেঘাটা, শীতলকুচি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ৬ জন খুন হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকাতেও ভাঙচুরের ঘটনা চলছে। দিলীপ ঘোষ বলেন, আইএসএফের একজনকেও বোমার আঘাতে মেরে ফেলা হয়েছে। শতাধিক বাড়ি, পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রশাসনকে অনুরোধ করব, অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। শান্তিপূর্ণভাবে এই ইস্যুতে আন্দোলনে নামবে বিজেপি। কাল রাস্তায় নেমে ধর্না দিয়েও প্রয়োজনে প্রতিবাদ জানানো হবে।
ইতিহাস গড়েছে বিজেপি
রাজ্যে সরকার গঠনের লক্ষ্যপূরণ হয়নি। তবে দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকাই বিজেপি পালন করবে বলে জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, যাঁদের দম থাকে তাঁরা বড় লক্ষ্য স্থির করতে পারে। আমাদের লক্ষ্যটাও তাই বড় ছিল। তার কাছাকাছি যেতে পারিনি ঠিকই। তবে রাজ্যে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আমাদের পার্টিকেই বেছে নিয়েছেন রাজ্যের মানুষ। ৩ থেকে ৭৮-এ পৌঁছেছি। ২৬ গুণ আসন আগে কোনওদিন বাংলায় কারও বাড়েনি। সেই ইতিহাসকেও তো অস্বীকারের উপায় নেই।
রায় মেনেই উন্নয়ন
দিলীপ ঘোষের কথায়, বাংলার মানুষ বরাবরই ক্লিয়ার ম্যানডেট দিতে ভালোবাসেন। তাই অনেক কিছু আপত্তিকর বিষয় থাকলেও এই সরকারকেই মানুষ চেয়েছেন। একইভাবে গত ১০ বছরে রাজ্যে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের অবস্থা দেখে মানুষই রাজ্যে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আমাদের দিয়েছেন। আমরা সরকার গড়লে সরকারে থেকেই মানুষের উন্নয়ন করতাম। এখন দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে মানুষের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি মানুষের উন্নয়নের কাজই করে যাবে বিজেপি। সিপিআইএম বা কংগ্রেস বিরোধী হলে ম্যানেজ করতে পারতেন। আমাদের পারবেন না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কষ্ট পেয়েছেন বিজেপি বিরোধী আসনে এত বেশি আসন নিয়ে আসায়।
নন্দীগ্রাম নিয়ে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে ফল ঘোষণায় কারচুপির অভিযোগ করেছেন। এজেন্টদের ভয় দেখানো থেকে লোডশেডিংয়ের নানা তত্ত্ব সামনে এনে তিনি জানিয়েছেন পুনর্গণনার দাবি করতে আদালতে যাবেন। এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুতেই হার মানতে চান না। তবু চাইলে তিনি আদালতে যেতেই পারেন। নন্দীগ্রামের ফল ঘোষণায় কোনও ধরনের কারচুপি হয়নি বলেই জোর গলায় দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ভোট গণনা শেষের আগেই ওঁরা প্রচার করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী হেরে গিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনের আধিকারিকদের ভয়ও দেখানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওখানে যে কোনওভাবে জিততে চেয়েছিলেন। কিন্তু নন্দীগ্রামের মানুষ ওঁকে চাননি।
ডোমজুড়ে বড় ধাক্কা বিজেপির, রাজীব হারতেই অনুগামীদের বাড়িতেই রাতভর হামলার অভিযোগ
রাজভবনে বিজেপি
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপি-র প্রতিনিধিদল বিকেলে রাজভবনেও যায়। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, হাজার হাজার বাড়ি, পার্টি অফিস ভাঙচুরের খবর পাচ্ছি, ভিডিও দেখছি। বেলেঘাটায় আমাদের কর্মীকে মেরে ফেলার পাশাপাশি পোষ্যদেরও মারা হয়েছে। বিজেপির পাঁচ কর্মী ও আইএসএফের এক কর্মী রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন। আমরা শক্তিশালী বিরোধী দলের দায়িত্বই পালন করতে চাই। তবে আমাদের পাশাপাশি অন্য দলের লোক, এমনকী সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হচ্ছেন। এর প্রতিবিধান না হলে গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ হবে। রাজ্যপাল আমাদের কথা শুনেছেন।