পুলিশকে রাজধর্ম মনে করালেন মমতা! একই সঙ্গে শীতলকুচি নিয়ে কোচবিহারের এসপিকে দিলেন কড়া বার্তা

বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০ এরও বেশী আসন পেয়েছেন। যা আরও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে তৃণমূলের। তবে ভোট মিটতেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় অশান্তির খবর। একের পর এক জায়গায় বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর। এই অবস্থায় শান্ত থাকার বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

তিনি বলেন, ভোট মিটে গিয়েছে। এখন শান্ত থাকুন। কোনও সমস্যা হলে পুলিশকে জানানোর কথা বলেন মমতা। একই সঙ্গে পুলিশকেও কার্যত কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজধর্ম মনে করালেন মমতা

কার্যত পুলিশকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিশেষ করে যারা উর্দি পরে কাছা খুলে বিজেপির হয়ে কাজ করতে নেমে পড়েছিলেন তাঁদের এবার সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানালেন, 'কয়েকজন পুলিশ বিজেপির হয়ে আসরে নেমেছিল। সেইসব পুলিশ অফিসার মনে করে ঠিক কাজ করেছে, আমি মনে করি না। আইন সামলানোর দায়িত্ব পুলিশের।' একই সঙ্গে কোবিহারের এসপিকেও কড়া বার্তা দেন মমতা। বিজেপি খুন অত্যাচার করছে। সব থেকে বেশি অত্যাচার করছে কোচবিহারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীও খুব অত্যাচার করছে। আর তা বলতে গিয়েই মমতা মন্তব্য, কোচবিহারের এসপি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। সব দেখে নেব। একই সঙ্গে পুলিশকে রাজধর্ম পালানোর কথা মনে করিয়ে দেন মমতা।

কমিশনকে দেওয় এসপির রিপোর্ট ঘিরে ওঠে প্রশ্ন

কোচবিহার জেলার শীতলকুচিতে গত ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফার ভোটের দিন বুথের মধ্যে গুলি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাতে ৪জন ভোটার মারা যান। সেই ঘটনায় কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গুলিচালনার ঘটনায় কমিশনকে পাঠানো এসপির রিপোর্ট নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছিল। কেননা এসপি তাঁর রিপোর্টে বলেছিলেন, 'যে বুথে গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে সেখানে ঘটনার আগে এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাঁর চিকিৎসা করছিল স্থানীয় কয়েকজন যুবক। সেই সময় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিল বাহিনীর কয়েক জন জওয়ান। ঠিক তখনই গুজব ছড়ায়, সিআইএসএফের মারে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার পরই প্রায় তিনশো-সাড়ে তিনশো গ্রামবাসী, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা, জওয়ানদের ঘিরে ধরে। তার জেরেই ওই বুথে উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কাছ থেকে। এমনকী, ব্যালট ছিনতাইয়ের অবস্থাও তৈরি হয়। তখন নিয়ম মেনেই গুলি চালায় বাহিনী। ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। তাতেই ৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় কয়েকজন সিআইএসএফ জওয়ানও জখম হয়েছেন। জখম হয়েছেন হোমগার্ডও।'

শীতলকুচির পরেই পুলিশ বিরুদ্ধ প্রশ্ন তোলেন মমতা

এরপরেই মমতা পুলিশ সুপারকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, 'শীতলকুচির ঘটনা পরিকল্পিত। এসপি-র সঙ্গে বসে প্ল্যান করেছে বিজেপি। ওই ঘটনার তদন্ত করবই। তদন্তে আসল ঘটনা বের করব।' আর এদিন সেই পুলিশ সুপারকে লক্ষ্য করেই বলেছেন, 'এত ভাল জয় হওয়ার পরও বিজেপির অত্যাচারের স্বভাব যায়নি। বিজেপি এটা নিয়ে বাড়াবাড়িও করছে। আজও আমাদের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সব থেকে বেশি অত্যাচার করছে কোচবিহারে। এখনও চলছে সেখানে অত্যাচার। মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের এই বক্তব্যের জেরেই এখন অনেকেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী খুব দ্রুত কোচবিহারের এসপিকে নিয়ে বড়সড় কোনও পদক্ষেপ নিতে চলেছেন।