বিধানসভা নির্বাচনে খেলোয়াড়দের খেলায় তৃণমূল এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে

খেলা হবে। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই স্লোগান উঠে এসেছিল বিজেপির প্রচারেও। খেলা হলো, খেলা শেষও হলো। আজ ২ মে ছিল চূড়ান্ত ফলাফলের পালা। দেখা গেল, নির্বাচনের খেলাতেও বিজেপিকে ২-০ গোল দিল তৃণমূল কংগ্রেস।

কারা গেলেন, কারা এলেন

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করেছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা ও দীপেন্দু বিশ্বাস। লক্ষী এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলকে জানিয়ে দেন, বিধায়ক হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করলেও সক্রিয় রাজনীতি আর করবেন না। বসিরহাট দক্ষিণের বিদায়ী বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাসকে দল প্রার্থী না করায় তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে গিয়েও টিকিট মেলেনি। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌমিক দে তৃণমূলে যোগ দিলেও তিনি উত্তরপাড়ায় প্রার্থী হতে পারেননি। বরং প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুকে দাঁড় করানো হয় উলুবেড়িয়া পূর্বে। সৌমিকের সঙ্গে এক মঞ্চে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মনোজ তিওয়ারিকে দাঁড় করানো হয় হাওড়ার শিবপুরে।

মনোজের জয়

হাওড়ার শিবপুর আসনে ৩২,৩৩৯ ভোটে জয়লাভ করে বিধানসভায় যাওয়ার টিকিট পেয়ে গেলেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। তৃণমূল কংগ্রেস এই আসনটি দখলে রাখল বিদায়ী বিধায়ক জটু লাহিড়ী বিজেপিতে যোগদানের পরেও। মনোজ টুইটে লেখেন, এই জয় শিবপুরের প্রতিটি মানুষকে উৎসর্গ করছি। আমাকে যাঁরা সমর্থন করেছেন এবং করেননি এই জয় তাঁদেরই। কিন্তু এখন এই জয় সেলিব্রেট করার সময় নয়। করোনার বিরুদ্ধে বাংলার জয়ের পরই এই জয়ের আনন্দে আমরা মাতোয়ারা হবো। সকলে নিরাপদে সুরক্ষিত থাকুন। জয় বাংলা।

বিদেশের গোল

উলুবেড়িয়া পূর্ব তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিদেশ বসুর কাছে ছিল সেফ সিট। এখানে তৃণমূলের ভিত শক্তিশালীই ছিল। বিদেশ বসুকে রিফিউজি হ্যান্ডিক্র্যাফটসের দায়িত্ব আগেই তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সংস্থা থেকেই তৈরি হয় জয়ী বল-সহ নানা ক্রীড়া সরঞ্জাম। বাম আমলে দেনার দায়ে ডুবে থাকা এই সংস্থাকে বিদেশ বসু, মানস ভট্টাচার্য-সহ প্রাক্তন ফুটবলাররা মিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো দিশায় লাভের মুখ দেখান। আজকে জয়ের পর গ্রামে-গঞ্জে আরও ফুটবল দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উলুবেড়িয়া পূর্বে আইএসএফ যতটা মুসলিম ভোটে থাবা বসাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছিলেন বাস্তবে তা হয়নি। ১৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতে ময়দানের দাপুটে এই ফুটবলার এবার তাই বিধায়ক হিসেবে নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন।

বোল্ড দিন্দা

তৃণমূল কংগ্রেসের সংগ্রাম দোলইকে বোল্ড করার লক্ষ্য নিয়ে ময়নায় লড়তে নেমেছিলেন বিজেপির ক্রিকেটার-প্রার্থী অশোক দিন্দা। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর শুভেন্দু অধিকারীকে দেখেই রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন এই পেসার। বিপক্ষের রানে রাশ টানতে পারলেও বোল্ড করতে পারলেন না। ফলে ম্যাচ বের করতে বেগ পেতে হয়নি তৃণমূলকে। ভোটের আগে ও ভোটের সময়ও ময়নায় হিংসা চালানোর অভিযোগ করেছিলেন দিন্দা। একদা শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ সংগ্রাম দোলই ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন ১২ হাজারের বেশি ভোটে। এবার জয়ের ব্যবধান কমাতে সক্ষম হলেও রাজনীতির অভিষেকটা মনোজের মতো স্মরণীয় হলো না নৈছনপুর এক্সপ্রেস দিন্দার।শেষ লাইনে যোগ করে দিও বিজেপির গোলকিপার প্রার্থী কল্যাণ চৌবেও লোকসভা নির্বাচনের পর এবার বিধানসভা ভোটেও হেরে গিয়েছেন।