লখনউ : পৃথিবীজুড়ে চলছে কালান্তক করোনার কালবেলা। মারণ ব্যাধির দ্বিতীয় ধাক্কায় বেসামাল গোটাদেশ। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। চারিদিকে শুধুই ত্রাহি ত্রাহি রব।
আর এই অবস্থায় দেশজুড়ে অক্সিজেনের আকাল, বেডের সমস্যা। শ্মশানে, গোরস্থানে মৃতদেহের লম্বা লাইন। সময় নেই স্বজন হারানোর শোক প্রকাশের। দেশের এই অতিমারী পরিস্থিতিতে ফের প্রকাশ্যে এল আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনার খবর।
শুক্রবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ৩০ বছর দেশের সেবা করলেও নিজের জীবনের চরম বিপদের সময়ে কাউকে পাশে পেলেন না কার্গিল যুদ্ধের হিরো। সাহায্যের জন্য ছটফট করলেও এগিয়ে আসেননি কেউ। ফলে বৃদ্ধ বাবার চোখের সামনে ধড়ফড়িয়ে প্রাণ হারালেন একমাত্র ছেলে।
ঘটনাস্থল যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ। নিজের রাজ্যে অক্সিজেন, ওষুধের অভাব নেই বলে বার বার সাফাই দিলেও সেই যোগীরাজ্যের হাসপাতালের চরম অব্যবস্থার ছবি উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা হরিরাম দুবে গত ৩১ বছর সীমান্ত পাহারা দিয়েছেন। জীবনের বিভিন্ন সময় কাটিয়েছেন লাদাখ, কাশ্মীর কখনও বা লুুকুং বর্ডারে। জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন বহুবার। সাক্ষী ছিলেন কার্গিল যুদ্ধের। জীবন যুদ্ধে হারতে শেখেননি কখনও। কিন্তু জীবনের শেষলগ্নে এসে অদৃশ্য ব্যাধির কাছে শত শত মানুষের মতো তাঁকেও মানতে হল হার। মারণ করোনায় একমাত্র ছেলেক হারিয়ে শোকে পাথর সেনানায়ক হরিরাম দুবে। তবুও শোক প্রকাশের সময় নেই৷
একমাত্র ছেলেকে শেষবারের মতো চোখের দেখা দেখতে চেয়ে মেয়ে, বউ আর বৌমাকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালের বাইরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলেও মেলেনি সুযোগ।
প্রাক্তন সেনা অফিসার হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতাকের তরফে মেলেনি পিপিই কিট। অবশেষে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে তড়িঘড়ি সুরক্ষা বিধি মেনে ছেলেকে দেখার বন্দোবস্ত করা হয়।
তবে শুধু এই অবস্থা হরিরাম দুবের একার নয়। চারিদিকে কান পাতলে আর একটু চোখ খোলা রাখলে শোনা যাবে এরকম শত শত হরিরাম দুবেদের কান্না। যুদ্ধের থেকেও এই মহামারী যেন হয়ে উঠেছে আরও দুর্বিষহ। প্রতিনিয়ত ওষুধ, অক্সিজেন পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে নির্বাক দর্শক হয়ে দেখা ছাড়া আর অন্য কোনও উপায় নেই। তবুও যেন এখনও হুঁশ ফিরছে না একশ্রেণির সবজান্তা পাব্লিকের।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.