নিতে হবে করোনার দুটি ভ্যাকসিন কিংবা দিতে হবে নেগেটিভ সার্টিফিকেট! গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে একগুচ্ছ নির্দেশ কমিশনের

রাত পোহালেই বাংলায় শেষ এবং অষ্টম দফার নির্বাচন। কোভিড বিধি মেনে বাংলার শেষ দফার নির্বাচনে কমিশন। তবে এই মুহূর্তে দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে করোনা। এর মধ্যেই ভোট গ্রহণ হয়েছে বাংলায়। ভোট হয়েছে অসম, কেরল, তামিলনাড়ু এবং কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরিতে। বাংলার পাশাপাশি এই সমস্ত রাজ্যে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক।

গত কয়েকদিন আগেই মাদ্রাজ হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় কমিশনকে। করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্যে দায়ী করা হয় কমিশনকে। হাইকোর্টের তোপের মুখে নড়েচড়ে বসে কমিশন। একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়। শুধু তাই নয়, আজ বুধবার ২ মে চার রাজ্য ও এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোট গণনার ক্ষেত্রে আরও বেশ কিছু নির্দেশ জারি করল কমিশন।

থাকতে হবে ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ

গণনা কেন্দ্রে মানতে হবে কোভিড বিধি। এজন্যে কমিশন কি ভাবছে তা জানাতে বলে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এরপরেই বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়। ভোট গণনার আগে নতুন করে বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করল কমিশন। গণনা কেন্দ্র থেকে যাতে করোনা না ছড়ায় সেদিকে তাকিয়ে একগুচ্ছ সিদ্ধান্তের কথা জানাল নির্বাচন কমিশন। যেমন গণনা কেন্দ্রে প্রার্থী ঢোকায় কড়া নিয়ম নির্বাচন কমিশনের। কোনও প্রার্থী যদি গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চান, তাহলে হয় তাঁকে ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজ় নিয়ে রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, দেখাতে হবে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে পেশ করতে হবে। অর্থাৎ একেবারে সাম্প্রতিকতম করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে, তবেই গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন প্রার্থী ও তাঁর এজেন্ট।

আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে

করোনা আক্রান্ত কি না তা জানতে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে গণনার ৪৮ ঘণ্টা আগে। যদি করোনা রিপোর্ট না করা থাকে তাহলে প্রার্থী এবং তাঁর এজেন্টকে অবশ্যই আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে।

করা যাবে না ভিড়

করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে প্রত্যেকটি রাজ্যেই গণনাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রের মধ্যে যাতে সোশ্যাল ডিসটেস্ট বজায় থাকে সেদিকে বাড়তি নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কমিশনের তরফে। শধু তাই নয়, কমিশন যে নির্দেশিকা জারি করেছে তাতে বলা হয়েছে যে, বাইরে ভিড় জমাতে পারবেন না দলীয় সমর্থকরা। এখানেই শেষ নয়, প্রার্থীদের কোন এজেন্ট গণনাকেন্দ্রে থাকবেন, গণনার তিনদিন আগে তাঁদের নামের তালিকা জমা দিতে হবে কমিশনের কাছে। এমনটাই নির্দেশিকাতে জানানো হয়েছে।

বিজয় মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি

তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, পুদুচেরি, অসমে ভোটের গণনা রয়েছে ২ রা মে। তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে সেই দিন কোনও রকমের বিজয় মিছিল করা যাবে না। করোনাজনিত পরিস্থিতিতে জন সমাগত এড়ানোর লক্ষ্যে কমিশন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের তীব্র ভতসনার মুখে পড়তে হয়েছে কমিশনকে। এরপরেই এহেন নির্দেশ। শুধু তাই নয়। কমিশনের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, ভোট গণনার পর রিটার্নিং অফিসারের কাছে শংসাপত্র নিতে জয়ী প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধির সঙ্গে দুজনের বেশি থাকতে পারবেন না। এবার নতুন করে আরও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এহেন নির্দেশে খুশি রাজনৈতিক দলগুলি। দেরিতে হলেও কমিশন অবশেষে করোনার বিরুদ্ধে কাজ করছে। এমনটাই দাবি তৃণমূলের। তবে অনেক আগে থেকে পদক্ষেপ করলে করোনা অনেকটাই রোখা যেত বলে দাবি শাসকদলের। কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বঙ্গ বিজেপিও।