নয়াদিল্লি : দিল্লিতে করোনা সংক্রমণের প্রবল প্রভাবে গণচিতার আগুন থামছে না। সারা দেশ এই জ্বলন্ত চিতার আগুন দেখে প্রতি মুহূর্তে মনের দিক থেকে ঝলসে উঠছে। আর সেই দিল্লিতেই নতুন সংসদ ভবন তৈরির কাজ চলছে ঝড়ের গতিতে। চলছে নতুন সংসদ ভবন সংলগ্ন এলাকার সৌন্দর্যায়নের কাজ। সৌজন্যে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর জন্য ব্যয়? বেশি নয়, মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা। বিরোধীরা বলছেন, এই পরিমাণ টাকা দিয়ে দেশে বেশ কয়েকটি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরী হয়ে যেত। করোনা সংক্রমণে একটা স্বাধীন দেশে এতো মানুষকে শ্বাসকষ্ট পেয়ে তাহলে হয়তো মারা যেতে হতো না। এসব দেখে প্রশ্ন উঠছে দেশের নাগরিকদের কাছে ভোট চাওয়া ছাড়া রাষ্ট্রের কী নাগরিকদের কিছু দেওয়ার নেই?
শুনলে অবাক হয়ে যেতে হয়, যেদিন দিল্লিতে করোনা সংক্রমণ ৩০ হাজার হয়েছে, সেদিন তিনটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্রর বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। এর পর আরও আছে, কেন্দ্রীয় সরকার এই কাজ যাতে করোনার জন্য থমকে না যায়, তাই স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজকে জরুরি পরিষেবার আওতায় এনে কাজ করে চলছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সর্বভারতীয় রাজনীতি তো বটেই, বিভিন্ন রাজ্যেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয় দেশের নরেন্দ্র মোদী পরিচালিত সরকার।
করোনা ভাইরাসের চূড়ান্ত আক্রমণে দিল্লি এখন এক কথায় একটা জ্বলন্ত চিতায় পরিণত হয়েছে। আগামী ৩ মে পর্যন্ত দিল্লিতে লকডাউন ঘোষণা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রোজ দিল্লিতে নতুন করে ২০ হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের হাসপাতালে বেড জুটছে না। পাচ্ছেন না প্রাণদায়ী অক্সিজেন। কিন্তু এতো কিছুর পরেও সেখানকার ইন্ডিয়া গেটের কাছে নতুন সংসদ ভবন তৈরির কাজ চলছে জরুরি ভিত্তিতে, রাজকীয়ভাবে। শ্রমিকদের কাজের ছন্দে ও শব্দে এলাকা গমগম করছে। দিল্লির সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউ উন্নয়নের কাজ কাজ চলছে নিজের গতিতে, কোনও দিকে না তাকিয়ে । প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক, লরির আনাগোনা দিনরাত চলছে এখানে । ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে এই কাজ হচ্ছে। কাজ শুরুর ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৯ এর সেপ্টেম্বর মাসে। এর পর নোটবন্দি, জিএসটি-র প্রভাবে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে। তার পর এসেছে করোনা। তবে কারও কোনও সমালোচনায় কান না দিয়ে দিল্লিকে নিজেদের মতো করে সাজাতে বিন্দুমাত্র কুন্ঠা বোধ করেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাই দিল্লিতে কে মারা গেলো তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.