মহাগুরুকে দেখতে মাস্ক ছাড়াই ছুটে ছুটে আসছেন মানুষ! দেখেই ফের কপ্টারে উঠলেন মিঠুন

বাংলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ১৬ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতির জন্যে নির্বাচন কমিশনকেই দায়ি করছে হাইকোর্ট। গত কয়েকদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। এমনকি, আজ সোমবারও মাদ্রাজ হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে।

সেকেন্ড ওয়েভে করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্যে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এই বিতর্কের মধ্যেও মিঠুন চক্রবর্তীর সভায় ফের উপচে পড়া ভিড়!

আজ ফের সভা ছিল মিঠুনের

আজ সোমবার শেষ দফার নির্বাচনে শেষ ভোট প্রচার ছিল। একদিকে রাজ্যে যখন সপ্তম দফার ভোট চলছে, অন্য দিকে এ দিন রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন অভিনেতা মিঠুন। বোলপুরে একটি জনসভা করার কথা ছিল তাঁর। সূচী অনুযায়ী, সভার পাশেই নামে তাঁর হেলিকপ্টার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা তথা বোলপুরের প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ও। কিন্তু হেলিকপ্টার থেকে নেমে জমায়েত দেখেই পিছু হটেন তিনি। মঞ্চে উঠতে রাজি হননি মিঠুন চক্রবর্তী। ব্যারিকেডের ভিতর থেকেই মাইক্রোফোন হাতে বক্তব্য দিতে শুরু করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে।

মহাগুরুকে দেখতে ব্যাপক ভিড়

মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী আসছেন আর সেখানে তাঁকে দেখতে ভিড় হবে না! এ দিন স্বাভাবিকভাবেই ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কমিশনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে বিশাল জমায়েত। ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ জমায়েত দেখা যায়। অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। জমায়েতে সামাজিক দূরত্বও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। সচেতনতার অভাব দেখে নিজেই ব্যারিকেডের ভিতর থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন তিনি। নিজেই হাত দিয়ে সরে দাঁড়াতে বলেন উপস্থিত জনতাকে। ব্যারিকেডের ভিতর থেকে্ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার্তা দেন তিনি। কেন্দ্রের যোজনার টাকা কেন রাজ্যের কৃষকরা পাচ্ছেন না সেই প্রশ্নও তোলেন। হেলিকপ্টারে ওঠার আগে বলে যান, ‘অনির্বান গঙ্গোপাধ্যায় জিতলে আসব, বড় করে অনুষ্ঠান করব।'

গত কয়েকদিন আগেই তাঁর সভায় বিতর্ক

গত কয়েকদিন আগেই মালদহের বৈষ্ণবনগরের একটি জনসভায় অংশ নেন মিঠুন। যা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। ওই সভায় ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষের জমায়েত দেখা যায়। বিজেপির পক্ষ নিয়ে আবেদনও জানানো হয়েছিল যাতে কম মানুষ আসেন। কিন্তু মিঠুনকে দেখতে সে দিনও সভাস্থলে ছিল উপচে পড়ে ভিড়। অধিকাংশের মুখেই মাস্কের বালাই ছিল না। সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় তৃণমূল। এরপরেই উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত

পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আবহেই চলতি মাসের শুরু থেকে গোটা দেশে একটানা বেড়ে চলেছে করোনা গ্রাফ। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টাতেও গোটা দেশে করোনার কবলে পড়েছেন সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষ। যা এখনও পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড। এবার এই বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এমনকী দেশের করোনার পরিস্থিতির অবনতির জন্য নির্বাচনের কমিশনের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত বলেও এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। অন্যদিকে করোনা রুখতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আগামী ২ রা ভোট গণনা বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।