আইপিএলের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ভুলিয়ে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে দাপুটে জয় হাসিল করল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নীতীশ রানা, শুভমান গিল, সুনীল নারিন ও আন্দ্রে রাসেলের আরও এক ব্যর্থতার দিনে কেকেআরের মান বাঁচালেন রাহুল ত্রিপাঠী ও অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। দুর্দান্ত লড়াই করেও ৫ উইকেটে ম্যাচ হারল কেএল রাহুল শিবির।
পরপর চার ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটিয়ে অবশেষে জয়ের সরণীতে ফিরল কলকাতা। ৬ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এল ইয়ন মর্গ্যানের দল। সমপরিমাণ ম্যাচ খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটের নিরিখে কেকেআরের থেকে একধাপ পিছিয়ে থাকল পাঞ্জাব কিংস।
১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নড়বড়ে শুরু হয় কেকেআরেও। কোনও রান না করেই সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার নীতীশ রানা। মোয়েসেস হেনরিকসের শিকার হন বাঁ-হাতি। দুটি চার সহযোগে ৮ বলে ৯ রান করে মহম্মদ শামির বলে আউট হয়ে সমালোচকদের ফের মুখ খোলার সুযোগ দিলেন শুভমান গিল। কোনও রান না করে পাঞ্জাবের বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার অর্শদীপ সিংয়ের শিকার হন সুনীল নারিনও।
এরপরই পিচ কামড়ে ব্যাটিং শুরু করেন কেকেআর অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান ও রাহুল ত্রিপাঠী। দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ৬৬ রানের পার্টনারশিপ হয়। গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রাহুল। তাঁর ৩২ বলে ৪১ রানের ইনিংস সাতটি চার দিয়ে সাজানো। ৪০ বলে ৪৭ রান করে কেকেআরকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। চারটি চার ও দুটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ৯ বলে ১০ রান করেন রান করে আউট হন আন্দ্রে রাসেল। ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মোয়েসেস হেনরিকস, মহম্মদ শামি ও অর্শদীপ সিং ও দীপক হুডা।
চলতি আইপিএলের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রান তাড়া করে জেতা সহজ হবে বলে মনে করেছিলেন ইয়ন মর্গ্যান। সন্ধ্যায় শিশির পড়লে বোলার এবং ফিল্ডারদের বল গ্রিপিংয়ে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেছিলেন কেকেআর অধিনায়ক।
মর্গ্যানের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে প্রথম থেকেই লাইন এবং লেন্থ ধরে বল করতে থাকেন কেকেআরের ক্রিকেটাররা। অধৈর্য হয়ে মারতে গিয়ে প্যাট কামিন্সের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক কেএল রাহুল। তিনি ২০ বলে ১৯ রান করেন। দুটি চার ও একটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের স্পোর্টিং উইকেটের সুবিধা নিতে ব্যর্থ হন বিধ্বংসী ক্রিস গেইলও। কোনও রান না করেই সাজঘরে ফিরে যান ইউনিভার্স বস।
পয়েন্ট ফিল্ডারের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে আউট হন দীপক হুডা। ৪ বল খেলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি হরিয়ানার অল রাউন্ডার। ধীরে ধীরে পাঞ্জাবের ইনিংস গঠনের কাজ চালিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যান ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করে যান নিকোলাস পুরান। অল্প সময়ে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ১৮ রানের পার্টনারশিপ হয়।
বাকিদের মতো দ্রুত রান করার প্রচেষ্টায় নিজের উইকেট খুইয়ে ফেলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। ৩৪ বলে ৩১ রান করে তিনি সুনীল নারিনের শিকার হন। নারিনের ঘূর্ণি পড়তে ভুল করে মাত্র ২ রান করে বোল্ড হয়ে যান মোয়েসেস হেনরিকস। নিকোলাস পুরানকে (১৯) আউট করেন বরুণ চক্রবর্তী। ১৪ বলে ১৩ রান করে আউট হন শাহরুখ খান। একটি ছক্কা হাঁকান এই তরুণ ব্যাটসম্যান। শেষ বেলায় ব্যাট চালিয়ে পাঞ্জাবকে ১২৩ রানে পৌঁছে দেন ক্রিস জর্ডন। ১৭ বলে ৩০ রান করেন ক্রিস। ৩টি ছক্কা ও ১টি চার আসে তাঁর ব্যাট থেকে। কেকেআরের ৩ উইকেট নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ২টি করে উইকেট নেন প্যাট কামিন্স ও সুনীল নারিন।