রোড শো-পদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করল কমিশন, ভোটের বাকি দফা একসঙ্গে করতে জরুরি বৈঠক

দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এই ঢেউয়ে কার্যত ভেসে চলেছে দেশের মানুষ। রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও ছবিটা এক। এখানেই দৈণিক সংক্রমণ কার্যত ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতেও বঙ্গে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। এখনও বাকি দুই দফার ভোট। সে ভোট একসঙ্গে করতে চেয়ে ফের নতুন করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। একই সঙ্গে ভোট করার আবেদন বিরোধী দলগুলিও জানিয়েছে।

জরুরি বৈঠকে বসছে কমিশন

এই অবস্থায় চাপ বাড়ছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। আর সেদিকে তাকিয়েই শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। করোনা আবহে কীভাবে সম্পন্ন হবে বাংলার ভোট? সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে সেই নিয়েই আলোচনা হতে পারে। কমিশন সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেল ৪টের সময় ভারচুয়াল বৈঠকে বসবে কমিশন। তাতে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকরা। থাকবেন সিইও। এছাড়া দুই পর্যবেক্ষককেও উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনা আবহে দুই দফার ভোট কি একদফাতেই সম্পন্ন করা হবে? মনে করা হচ্ছে, সেই নিয়ে হয়তো আলোচনা করবে কমিশন।

শেষ দফার নির্বাচনের আগে কড়া কমিশন

ষষ্ঠ দফার নির্বাচন শেষ হয়েছে। বাকি আর দুদফার নির্বাচন। আর সেই দফার নির্বাচন করতে কোভিড বিধি কড়া ভাবে মানতে হবে। কি করা যাবে আর কি করা যাবে না সেই সংক্রান্ত বিধি জারি করল কমিশন। এখন থেকে ৫০০ জনের বেশি লোককে নিয়ে আর সভা করা যাবে না। এছাড়াও আগে থেকে যে সভার জন্যে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাও বাতিল করা হল। এছাড়াও যে কোনও ধরনের সাইকেল র‍্যালি, রোড শো, পদ যাত্রা করা যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে কমিশন।

মহামারী, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

ইতিমধ্যে বাংলায় দৈনিক সংক্রমণ ১০ হাজার পার করে গিয়েছে। কিন্তু এখনও রাজ্যে প্রচার চলছে! কিন্তু কী ভাবে রাজনৈতিক দলগুলি হাজার হাজার লোকজন জড়ো করে ভোট প্রচার করছে তা নিয়ে কার্যত এদিন হতবাক আদালত। নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও এরপরেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানায়, কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কিংবা রাজনৈতিক দল প্রচার চলাকালীন যদি কোভিড বিধি মাণতে না পারে তাহলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন এবং মহামারী আইনে মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রয়োজনে আমরা টি এন শেসনের কাজ করব

প্রধান বিচারপতি টিবি এন রাধাকৃষ্ণণ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাতে চূড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করে পর্যবেক্ষণে বলেন , করোনা রুখতে এই মুহূর্তে কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত কঠোর হওয়া উচিৎ ছিল। অথচ তারা সার্কুলার জারি করেই থেমে গিয়েছে। কোনও পদক্ষেপের চিন্তাভাবনাই নেই। প্রধান বিচারপতির কথায়, "সার্কুলার নয় পদক্ষেপ চাই।" একই সঙ্গে আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, এই সময় টি এন শেসনের দশ ভাগের একভাগ করে দেখাক কমিশন। টি এন শেসনের কিছুই করছে না কমিশন। শুধু একটা সার্কুলার দিয়ে জনগণের ওপর সব ছেড়ে দিয়েছে কমিশন। পুলিশ, ক্যুইক রেসপন্স টিম সব আপনাদের আছে। তাও কেন সেসবের ব্যবহার করছেন না?" তিনি বলেন, "সার্কুলার নয় আমরা কমিশনের কাছে পদক্ষেপ চাইছি। আমরা অর্ডার দিতে পারছি না কারণ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি কোর্টে নেই। প্রয়োজনে আমরা টি এন শেসনের কাজ করব", এভাবেই নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করেন প্রধান বিচারপতি। এরপরেই কার্যত নির্বাচন কমিশনের ততপরতা দেখা যায়।