বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই একটি চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানে তিনি ভ্যাকসিনের দামের বৈষম্য নিয়ে জানতে চেয়েছেন কেন্দ্রের অবস্থান। ভ্যাকসিনের দাম কেন্দ্রের জন্য একরকম আর রাজ্যের জন্য আরেক রকম কেন? এই প্রশ্ন তিনি করেছেন। এদিকে, রাজ্য বনাম কেন্দ্রের ভ্যাকসিন-সংঘাতের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে সারা দেশে করোনায় প্রাপ্তবয়স্কদের ভ্যাকসিনেশনের জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে? সেই প্রশ্নের জবাব এসেছে সাম্প্রতিক গবেষণাধর্মী রিপোর্টে।
একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দেশের একটি বার্ষিক জিডিপির থেকে ১ শতাংশ কম হবে প্রাপ্তবয়স্কদের করোনা টিকাকরণের খরচ। গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী ওই রিপোর্ট বলছে, দেখা যাচ্ছে যদি রাজ্য ও কেন্দ্র একত্রে এই টিকাকরণ চালায় তাহলে ১৩৩ কোটির মধ্যে টিকাকরণ করতে হবে ৮৪.২ কোটি প্রাপ্ত বয়স্কদের। যার খরচ কেন্দ্রের তরফে হতে পারে ২০৮.৭০ বিলিয়ন টাকা। রাজ্যের তরফে ৪৬৩.২৩ বিলিয়ন। প্রসঙ্গত বুধবার ভ্যাকসিনগুলির যে দাম জানানো হয়েছে, এটি তার হিসাবে উঠে আসছে ।
পরিসংখ্যান বলছে, ৬৭১.৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ভারতের জিডিপির ০.৩৬ শতাংশ। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র যদি এই ভ্যাকসিনেশন উদ্যোগে জিডিপির ০.১২ শতাংশ বাজেটে রাখে আর রাজ্যের বাজেটের ০.২৬৪ শতাংশ যায় , তাহলে 'ইন্ডিয়া রেটিং' এর মতে করোনার দ্বিতীয় স্রোতের জেরে ভারতে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলায় এই খরচ তেমন বড় অঙ্ক নয়।
দেখা যাচ্ছে, 'গ্রস স্টেট জোমেস্টিক প্রোডাক্ট' এর হিসাব ধরলে উত্তর প্রদেশ , ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা , মধ্যপ্রদেশ , অসম, মনিপুরের মতো রাজ্য বিবিধ সংকটে পড়বে অর্থের যোগানের দিক থেকে। তবে ভ্যাকসিনের ফেল যে অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরে জন্মায় তা ১২ থেকে ১৮ মাস থাকে। সেদিক থেকে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একটি সরকারের যে প্রভূত ক্ষতি হয়, তার তুলনায় এই টিকাকরণ উদ্যোগের খরচ নিতান্তই অঙ্কের দিক থেকে বড় বিষয় নয়।
ইন্ডিয়া রেটিংয়ের সমীক্ষা বলছে, ভারতকে আর্থিক বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে ভ্যাকসিনেশনের দ্রুততা প্রয়োজন। বিভিন্ন বিদেশী ভ্যাকসিনকে দেশে প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়ার মতো সরকারি সিদ্ধান্তকেও সমর্থন করেছে 'ইন্ডিয়া রেটিং'।