করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দেশে লাগামছাড়া সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষার সংখ্যার নিরিখে করোনার ইতিবাচক হার অনেক বেশি এবার। এর আগে করোনা মহামারীতে একসঙ্গে এত ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়নি। এবার করোনা সংক্রমণের সঙ্গে মৃত্যুর হারও বেশ বাড়ছে দেশে।
গত এক সপ্তাহে ১৩.৫ শতাংশেরও বেশি ইতিবাচক পরীক্ষা হয়েছে করোনায়। ইতিবাচক হারের সাত দিনের গড় কখনও এত বেশি হয়নি। বর্তমানের করোনা সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত দেশব্যাপী করোনা মহামারীকে আরও শক্তিশালী আকার দিয়েছে। ভাইরাসটি গত কয়েক মাসের মধ্যে এখন দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে।
গত বছরের তুলনায় আরও অনেক লোককে সংক্রামিত করেছে করোনার এই দ্বিতীয় তরঙ্গ। প্রথম তরঙ্গ চলাকালীন গত বছরের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ইতিবাচক হার শীর্ষে পৌঁছেছিল এবং অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সংক্রমণের ধারা অব্যাহত থাকলেও তারপরে ধারাবাহিকভাবে তা হ্রাস পাচ্ছিল।
জুলাইয়ের বেশিরভাগ সময় পর্যন্ত ভারতে প্রতিদিন পাঁচ লক্ষেরও কম পরীক্ষা হয়েছিল। মাসের শেষের দিকে পরীক্ষার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রতিদিন দশ লক্ষেরও বেশি পৌঁছে যায়। এই মুহূর্তে ভারতে সেপ্টেম্বরের শিখরের তুলনায় প্রায় ২.৫ গুণ বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। পরীক্ষা হচ্ছে সমান সংখ্যক।
মহারাষ্ট্রে সর্বদা করোনা মহামারীর হার ছিল ১৫ শতাংশেরও বেশি। তবে ছত্তিশগড় ও উত্তরপ্রদেশ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য গত বছরের থেকে তুলনামূলকভাবে কম ছিল সংক্রমণের হার। জাতীয় গড়ের থেকেও কম ছিল। এবার ছত্তিশগড়ের সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার বর্তমানে মহারাষ্ট্রের থেকেও বেশি।
করোনার এই হাই পজিটিভিটির কারণ হতে পারে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি। কিংবা করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় স্ট্রেনটি দ্রুত সংক্রমণকারী। এই দুটি জিনিসই কারণ হতে পারে ভারতে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ার। এবার মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলে প্রথম নজরে এসেছিল। এর দুটি গুরুতর রূপান্তর হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় স্ট্রেন দ্রুত সঞ্চারিত হতে পারে। আগ্রাসী পরীক্ষার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের অন্যান্য কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও জরুরি। আরও বেশি সংখ্যক লোককে চিহ্নিত করতে হবে এবং বিচ্ছিন্ন করে অন্যের সংক্রমণ থেকে বিরত করতে হবে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি স্যাচুরেশন পয়েন্টে পৌঁছেছে দেশ, এখন পর্যন্ত প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।