মমতার বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ
১০ এপ্রিল ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারের সভা করেছিলেন। সেই সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিআরপিএফ গণ্ডগোল করতে মেয়েদের একটা দল ওদেরকে ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল গিয়ে ভোট দেবেন। তিনি বলেছিলেন, শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট না করতেই ওই পরামর্শ বলে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় বিজেপি। নির্বাচন কমিশমও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিশ দেয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পেরে, তাঁর প্রচারের ওপরে ২৪ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সিআইএসএফ এবং বুথে হামলা
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করেছেন, শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে সিআইএসএফ এবং বুথকর্মীদের ওপরে হামলা করেছিল উন্মত্ত জনতা। তা ওই ছবিতেই প্রমাণিত। প্রসঙ্গত বুধবার ওই বুথের তৃতীয় পোলিং অফিসার দিলীপ মজুমদার জানিয়েছিলেন, ১০ এপ্রিল বুথের মধ্যেকার অবস্থার কথা। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, উন্মত্ত জনতা বুথে হামলা চালায়। ইভিএম, ভিভিপ্যাট ফেলে দেয়। তাঁর মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে গেলে তিনি তা ডান হাত দিয়ে ঠেকান। তাতে তাঁর হাতে আঘাত লাগে।
আনন্দ বর্মনকে হত্যা করেছে এই উন্মত্ত জনতাই
১০ এপ্রিল আনন্দ বর্মন নামে ১৮ বছরের এক যুবক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে দুষ্কৃতী হামলায় প্রাণ হারাণ। বিজেপির তরফে আনন্দ বর্মনকে তাদের সমর্থক বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবারের তরপে বলা হয়েছে আনন্দ বর্মনের দাদাকে না পেয়ে তাঁকে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য দাবি করেছেন, রাজবংশী সম্প্রদায়ের আনন্দ বর্মনকে এই একই উন্মত্ত জনতা হত্যা করেছিল, যারা ১২৬ নম্বর বুথে হামলা করেছিল। অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে পাল্টা আনন্দ বর্মনকে তাদের সমর্থক বলে দাবি করা হয়েছে।
কোচবিহারের পুলিস সুপার এবং ভোটকর্মীদের বয়ান
প্রথমে কোচবিহারের পুলিশ সুপার উন্মত্ত জনতার হামলা এবং তারপরে সিআইএসএফ-এর গুলি চালনার কথা বলে নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। এরপরে বুধবার ওই বুথের ভোট কর্মীদের বয়ান সামনে আসে। এই দুই বয়ানকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। সেদিন বুথে হামলার পরেই কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়, এই দাবিই করছে বিজেপি।
নির্বাচনের সাম্প্রদায়িকরণ করেছেন মমতা
বিজেপির তরফে অমিত মালব্য অভিযোগ করেছেন নির্বাচনের সাম্প্রদায়িকরণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরে প্রচারের গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম ভাই-বোনেদের কাছে ভোট না করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর এই বয়ান নিয়েও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বিজেপি। পাশাপাশি কোচবিহারে ১০ এপ্রিল ১২৬ নম্বর বুথে সিআইএসএফ-এর গুলিতে ৪ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবক ছাড়াও আনন্দ বর্মন নামে এক রাজবংশী যুবকের মৃত্যু হয়েছিল দুষ্কৃতীদের গুলিতে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময়ই চার সংখ্যালঘু যুবককে নিয়েই ব্যস্ত বলে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত মঙ্গলবার মাথাভাঙায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাওয়ার পরে সেখানে হাজির ছিলেন ওই চার যুকবের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আনন্দ বর্মনের দাদু এবং মামাও।