করোনা থেকে মুক্তি পেতে চবনপ্রাস খাওয়ার পরামর্শ, সমালোচিত ভিকে পালের মন্তব্য

দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ চলছে ঠিক সেই সময় সরকারের এক শীর্ষ অফিসারের কোভিড সংক্রান্ত উপদেশ নিন্দিত হল। তিনি জানিয়েছেন এই সময় আয়ুর্বেদের অভ্যাস করা ভালো। যদি কারোর হাল্কা বা উপসর্গহীন কোভিড–১৯–এ লক্ষণ থাকে তবে আয়ুর্বেদের ওষুধ ও চবনপ্রাস এবং কারা পান করা শরীরের পক্ষে ভালো ও এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সরকারি শীর্ষ আধিকারিকের এই নিদান রীতিমতো সমালোচিত হয়েছে চিকিৎসকদের কাছে । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে এ ধরনের ধারণা মানুষকে যাচাই না করা চিকিৎসা পদ্ধতি চেষ্টা করতে উৎসাহিত করবে এবং মেডিক্যাল সহায়তা চাইতে অনেক দেরি করাবে।

নীতি আয়োগের সদস্য (‌স্বাস্থ্য)‌ ডাঃ ভিক পাল মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেন। সরকারের সাপ্তাহিক কোভিড বিবৃতি দেওয়ার সময় তিনি নাগরিকদের কাছে আবেদন করেন যে দেশে বর্তমানে যে করোনার প্রকোপ চলছে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মানুষকে যথাযথ অনুশীলনের প্রতি অনুগত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, '‌আপনি যদি কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হন, যদি উপসর্গ হাল্কা বা উপসর্গহীন হন তবে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এই রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য যথাযথ পরামর্শের পর চিকিৎসক যে ওষুধ দেবে সেটা খান। এটাও একটি চিকিৎসার পদ্ধতি এবং এটা গ্রহণ করা প্রয়োজন।’‌

ভিকে পাল আরও বলেন, '‌মহামারির সঙ্গে লড়াই করতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আয়ুর্বেদ ও আয়ুষ পণ্য গ্রহণ সহ সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে। নির্দিষ্ট সুপারিশে বলা হয়েছে যে প্রতিদিন দু’‌বার করে চবনপ্রাস খান, দিনে একবার হলেও হলুদ দেওয়া দুধ পান করুন। আমাদের সমীক্ষায় দেখেছি যে এগুলি খুব জনপ্রিয় সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। এছাড়াও গরম দুধে তুলসী, দারচিনি এবং গোলমরিচ দিয়ে পান করার পাশাপাশি যোগাভ্যাস নিয়মিত করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।’‌ তিনি এও জানান যে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কোভিডে আক্রান্ত তাঁদের ফুসফুসের সক্ষমতার শক্তি বাড়াতে যোগাভ্যাস করা খুব ভালো। এগুলি সত্যি সহায়তা করে এবং সরকারের পক্ষ থেকে নীতি আয়োগ এটা অনুরোধ করছে বলেও জানিয়েছেন পাল।

ভিকে পালের এই মন্তব্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে চিকিৎসক মহলে। আইএমএর প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি ডাঃ রজন শর্মা বলেন,'‌এই কথার অবশ্যই কোনও অর্থ হয় না। যদি আপনার কোভিড–১৯ হয়, চবনপ্রাস বা কারা পান করুন কিন্তু হাসপাতালে আসবেন না?‌ দেশকে বোকা বানাচ্ছে। এটা যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতো তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ত না।’ তিনি এও বলেন, '‌এটা শোনার পর, অনেকেই বাড়িতে কারা বা হলুদ দুধ খাওয়া শুরু করবে এবং যখড় তাঁরা হাসপাতা‌লে আসবেন তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে।’‌ তিনি এও জানান, করোনায় মৃত্যুর জন্য অনেকেই চিকিৎসকদের গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি করে থাকেন।

করোনাবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই মহাসমারোহে চলছে কুম্ভমেলা, গত ২ দিনে হরিদ্বারে আক্রান্ত ১ হাজার