ভাইরাল ভিডিও শীতলকুচির বলে শেয়ার করেও ডিলিট করলেন রাজু! সাবধান করলেন কুণাল

শীতলকুচির ঘটনায় উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এই অবস্থায় আগামিকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হচ্ছে। শনিবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়। আর এরপরেই ঘটনাস্থলে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি, রাজনেতার ঢোকার উপর ৭২ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন। বুধবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।

যদিও সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই চাঞ্চল্যকর একটি ভিডিও পোস্ট করে বিস্ফোরক দাবি এক বিজেপি নেতার। আর সেই ভিডিও ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত ভিডিও

শনিবার ঘটনার পরেই একটি ভিডিও সামনে আসে। যেখানে গ্রামবাসীকে ছুটতে দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে উপরের দিকে ফায়ারিং করতে দেখা যাচ্ছে। আর এই ভিডিও সামনে আসার পর থেকেই তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্ন উঠতে থাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে। সমস্ত রাজনৈতিকদলই বাহিনী নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এই অবস্থায় আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। দাবি করা হয় সেটি নাকি শীতলকুচির। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দএখা যাচ্ছে, কয়েকশ মানুষ বুথে ঢোকার চেষ্টা করছে। আর সামাল দিচ্ছেন বাহিনীর জওয়ান। সেই ভিডিও নিজের পেজে শেয়ার করএন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সেটিকে শীতলকুচির ভিডিও বলেও দাবি করেন কামারহাটির বিজেপি প্রার্থী রাজু। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এর জন্যে আক্রমণ করেন।

বিতর্ক বুঝে ভিডিও ডিলিট করে রাজু

ভিডিও শেয়ার করার পরেই বিতর্ক তৈরি হয়। ভিডিওটি সত্যিই শীয়লকুচির কিনা তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু তাঁর আগেই নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে ওই ভিডিও শেয়ার করেন। যা নিয়ে বিভিন্ন জায়গাতে বিতর্ক তৈরি। ফেক ভিডিও শেয়ার করেছেন বলেও প্রশ্ন উঠতে থাকে। এই অবস্থায় কিছুক্ষণের মধ্যে বিতর্কিত ভিডিওটি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রোফাইল থেকে সরিয়ে নেন। এমনকি কামারহাটি বিধানসভার যে পেজে সেটি ছিল তাও সরিয়ে নেন বিজেপি নেতা।

পুরানো ভিডিও বলে তোপ কুনালের

সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে তা আসল কিনা জানতে তদন্তের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন কুণাল ঘোষ। তবে ভিডিওটি ফেক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ বলেনম, গত কয়েক বছর আগেও ভোটের সময় এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ফের হচ্ছে। এই অবস্থায় দায়িত্ববান মানুষদের আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন কুণাল ঘোষ।

আহতদের দেখতে মাথাভাঙা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বুধবার শীতলকুচিতে কমিশনের ৭২ ঘন্টার সময়সীমা শেষ হচ্ছে। আর তা শেষ হতেই বুধবার শীতলকুচি যাবেন মমতা। এমনটাই সূত্রের খবর। সেখান থেকে আহতদের দেখতে মাথাভাঙা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় এখনও তিনজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁরা। মূলত তাঁদের সঙ্গেই হাসপাতালে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। মাথাভাঙা হাসপাতালে সাক্ষাৎপর্ব শেষ করে আবারও প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নেবেন মমতা।

মমতার নিশানায় শাহ-মোদী

রানাঘাটের সভা থেকে ফের শীতলকুচিকান্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে নিশানা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন অমিত শাহের নির্দেশেই গুলি চলেছে। সেটা জানতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চতুর্থ দফার ভোটের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন এই ঘটনার জন্য। তিনি দাবি করেছিলেন অমিত শাহের নির্দেশেই গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বািহনী।

পুলিশ সুপারের সঙ্গে ষড়যন্ত্র

রাণাঘাটের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন পুলিশ সুপারের সঙ্গে প্ল্যান করেছিল বিজেপি। প্ল্যান করেই আগে এক মহিলাকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনি রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কারা কারা গুলি চালিয়েছে সব তালিকা তৈরি আছে। তদন্ত করে সবার শান্তি হবে। কেউ পার পাবে না। প্রসঙ্গত উল্লখ্য ঘটনার দিন কোচবিহারের পুলিশ সুপার রিপোর্ট দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী আত্মরক্ষায় গুলি চালিয়েছিল। তাঁদের গ্রামবাসীরা ঘিরে ফেলেছিল। রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তাই গুলি চালাতে বাধ্য হন তাঁরা।