সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : রাওলাট সত্যাগ্রহকে কেন্দ্র করে যে ব্যাপক আন্দোলন সূচনা হয় তার চরম পরিণতি ঘটে পাঞ্জাবের এই জালিয়ানওয়ালাবাগের নির্মম হত্যাকাণ্ড। ১৯১৯, ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের বৈশাখী উৎসবের জন্য জনগণ শহরের পূর্ব দিকে অবস্থিত জালিয়ানওয়ালাবাগে একত্রিত হয়েছিল। ভিতরে মঞ্চ গড়ে হচ্ছিল রাওলাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সভাও। এই সময়েই ভিড়ে ঠাসা অঞ্চলে ব্রিটিশরা গুলি চালায়। নির্মম ভাবে হত্যা করে হাজার হাজার মানুষকে। এই বছর ১০২ বছরে পড়ল নারকীয় হত্যাকাণ্ড।
জালিয়ানওয়ালা বাগ উদ্যানে প্রবেশের জন্য একটি চওড়া পথ ছিল এবং বেরোনোর জন্য চারটি পথ ছিল। স্থানটির চারিদিক ঘেরা ছিল বড় বড় বাড়ি এবং ১০০ ফুট উঁচু পাঁচিলে। ওইসময় জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে অমৃতসরের সমস্ত সভা-সমিতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞা জানতেন না। তাই অজান্তেই জমায়েত করেছিল সাধারণ মানুষ। ব্রিটিশ পুলিশ মানুষের কোনওরকম নির্দেশ না দিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে। সেখানে উপস্থিত তখন প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
মানুষের উপর নির্বিচারে জেনারেল ডায়ারের সৈন্যবাহিনী কোন রকম সতর্কবাণী না দিয়েই টানা গুলিবর্ষণ করে। ইংরেজদের দাবী ছিল এই গুলি চালানোর ফলে সরকারি মতে ৩৭৯ জন নিহত এবং প্রায় বারোশো জন আহত হন। অন্য তথ্য বলছে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ইংরেজরা যে নির্মম অত্যাচার শুরু করেছিল তারই একটা অন্যতম রূপ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। শুধু অমৃতসর নয়, লাহোর, কসুর এ শোভা যাত্রীদের ওপর অনর্গল গুলি বর্ষণ করা হয়েছিল। ঘৃণায় ফেটে পড়ে গোটা ভারতবাসী।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাতীয় অবমাননার প্রতিবাদে ইংরেজদের দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি বর্জন করেন। পরবর্তীকালে এই জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য একটি জাতীয় কংগ্রেস তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং সেই কমিটির সদস্য ছিলেন মতিলাল নেহেরু, চিত্তরঞ্জন দাস, ফজলুল হক প্রভৃতি রা। এই কমিটির রিপোর্ট ১৯২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হলে, এই রিপোর্ট অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের জন্য ডায়ারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। শুধু প্রাণগুলো আর ফেরেনি।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.