প্রশান্ত কিশোর যে সব ফ্যাক্টরের কথা বলেছিলেন
প্রশান্ত কিশোরের একটি অডিও টেপ ফাঁস হয় সম্প্রতি। সেখানে প্রশান্ত কিশোর এমন কিছু ফ্যাক্টরের কথা বলেছিলেন, যা নিয়ে বিজেপি দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছে। জয়ের পথ পরিষ্কার করতে প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার লড়াই চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। সিংহভাগ ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছেন। তাই এবার জয়ের লক্ষ্যে ঝঁপিয়েছেন।
তফশিলি ভোটকে সঙ্গে রাখতে নির্দিষ্ট আঙ্গিকে প্রচার বিজেপির
প্রশান্ত কিশোর বলেছিলেন ২৭ শতাংশ তফশিলি ভোটের কথা। তফশিলি ভোট মোদীর সঙ্গেই রয়েছে। প্রতিদিনই মোদী-শাহরা তফশিলি ভোটকে সঙ্গে রাখতে নির্দিষ্ট আঙ্গিকে প্রচার চালাচ্ছেন। তফশিলিদের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈরাগ্যের বার্তা তুলে ধরছেন। তফশিলি ভোট ব্যাঙ্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতাদের টার্গেট করেন।
তফশিলি-বঞ্চনাকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার
বাম জমানায় তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের এলাকায় কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বন করত সিপিএম। তা তখন প্রকট হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়ে তা কিন্তু প্রকট। বিজেপি দলিত ও তফশিলি মন পেতে তাঁদের বঞ্চনাকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছে। পান থেকে চুন খসলেই তফশিলিদের কাছে তৃণমূলের নামে নালিশ করছে বিজেপি।
তফশিলি ভোটকে নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা বিজেপির
বাংলার রাজনীতি এখন জাতপাত নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। ধর্মীয় মেরুকরণ, জাতপাতের মেরুকরণে এবার ভোট হচ্ছে। বিজেপি তফশিলি ভোটকে নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করে গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিজেপি যে তফশিলিদের পাশে আছে, তা জানাতে এলাকায় কাজ করে গিয়েছে নিজেদের টিম। তারপর মতুয়া, রাজবংশী, কুর্মি ভোট নিয়ে পৃথক পৃথক চাল দিয়েছে বিজেপি।
তোষণকে ঢাল বানিয়ে ভোট মেরুকরণে নেমেছে বিজেপি
হিন্দু ও মুসলিম ভোটের মেরুকরণ তো হচ্ছেই। এতদিন সংখ্যালঘু তোষণ করে এসেছে তৃণমূল। সেই তোষণকে ঢাল বানিয়ে ভোট মেরুকরণে নেমেছে বিজেপি। সংখ্যালঘু তোষণের ফলে বিজেপি হিন্দু ভোটকে এক জায়গায় আনতে সম্ভবপর হয়েছে। এমনকী বামপন্থী ভোটও বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের তির ছুঁড়ে।
বিভিন্ন বোর্ড বানিয়ে উন্নয়নের বার্তা আর ছুটি ঘোষণা
আবার হিন্দু ভোটের মধ্যেও বিজেপি টার্গেট করেছে বেশ কিছু সম্প্রদায়কে। তফশিলি জাতি, উপজাতি ছাড়াও মতুয়া, রাজবংশী, কুর্মি ইত্যাদি সম্প্রদায় বিজেপির টার্গেটে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বোর্ড বানিয়ে তাঁদের উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে, তাঁদের জন্য পৃথক ছুটি ঘোষণা করে কাছে টানার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যায়।
তফশিলিদের উন্নয়ন সাধন করতে পারে একমাত্র বিজেপি
কারণ বিজেপি ওইসব সম্প্রদায়কে বুঝিয়েই চলেছে, প্রকৃতপক্ষে সামাজিক কোনও উন্নতি হয়নি। শুধু আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে তৃণমূল ভোট আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উন্নয়ন সাধন করতে পারে একমাত্র বিজেপি। সেজন্যই পরিবর্তন আনা জরুরি। বাংলায় বিজেপি এলেই সকল শ্রেণির উন্নতি হবে, ভেদাভেদ ঘুচে যাবে।
বিজেপি ১০০ আসন ছুঁতে পারবে না, অডিও-বার্তার পর পিকে
প্রশান্ত কিশোর অডিও বার্তায় ওই তফশিলি জাতি-উপজাতি ও মতুয়া-রাজবংশী-কুর্মি সম্প্রদায়ের ভোট নিয়েই ধন্দে। মমতার পাশাপাশি বাংলায় মোদীর জনপ্রিয়তার কথা স্বীকার করে নিয়েই তিনি তফশিলি ও আদিবাসী ভোট নিয়ে সন্দিহান। সন্দিহান মতুয়া ভোট নিয়ে। যদিও তিনি ওই অডিও-বার্তার পরও বলেছেন বিজেপি ১০০ আসন ছুঁতে পারবে না।