প্রথম ম্যাচেই গুরু-বধ শিষ্যের, ধাওয়ান-পৃথ্বীর ব্যাটে আইপিএলে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে পন্থ বাহিনীর দাপুটে জয়

অধিনায়ক হিসেবে ঋষভ পন্থের আইপিএল যাত্রার প্রথম ধাপ সোনা দিয়ে মুড়লেন শিখর ধাওয়ান ও পৃথ্বী শ। চলতি টুর্নামেন্টের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে হেলায় হারাল দিল্লি ক্যাপিটালস। ২০২০ সালের আইপিএলে যেখানে শেষ করেছিল, এবার কার্যত সেখান থেকেই শুরু করল গত বারের রানার্সরা। অন্যদিকে গত মরসুমের ব্যর্থতার পর এবারও হতাশা দিয়ে ২০২১ সালের আইপিএল মরসুম শুরু এমএস ধোনির সিএসকে-র।

আগে ব্যাট করে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১৮৯ রানের লক্ষ্য দেয় চেন্নাই সুপার কিংস। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের পিচে সেই রান তাড়া করে জিততে দিল্লিকে কসরত করতে হবে বলে ভেবেছিলেন ক্রিকেট প্রেমীরা। কিন্তু হল তার উল্টোটাই। দিল্লির ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও পৃথ্বী শ-এর ব্যাটিংয়ের দাপটে গুটিয়ে গেল শার্দুল ঠাকুর, স্যাম কারান, দীপক চাহার, মইন আলি, রবীন্দ্র জাদেজা সম্বৃদ্ধ সিএসকে-র শক্তিশালী বোলিং লাইন আপ।

দিল্লি ক্যাপিটালসের ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও পৃথ্বী শ-এর মধ্যে ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ হয়। ৩৮ বলে ৭২ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংশ খেলে সাজঘরে ফিরে যান তরুণ শ। ৫৪ বলে ৮৫ রান করে আউট হন ধাওয়ান। বলে রান করে অপরাজিত থাকেন গব্বর। শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক ঋষভ পন্থ (১৫)। ১৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মার্কাস স্টইনিস। সাত উইকেটে ম্যাচ জেতে দিল্লি। সিএসকে-র হয়ে একটি করে উইকেট নেন ডোয়েন ব্র্যাভো ও শার্দুল ঠাকুর।

গুরু এমএস ধোনির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে প্রথমবার অধিনায়ক হিসেবে আইপিএল খেলতে নামার আগে বেশ উজ্জীবিত ছিলেন শিষ্য ঋষভ পন্থ। চাপা উত্তেজনা তরুণ উইকেটরক্ষকের চোখেমুখে ফুটে ওঠে। অন্যদিকে শান্ত স্বাভাবের এমএস ধোনি শান্ত মেজাজেই টসে অংশ নেন। তার আগে কিংবদন্তির সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করে নেন উঠতি। তবে মাঠে যে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না, তাও বুঝিয়ে দেন ধোনি এবং পন্থ।

এর আগে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করারই সিদ্ধান্ত নেন তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে হারিয়ে ফেলে চেন্নাই সুপার কিংস। দিল্লির অভিজ্ঞ পেসার আবেশ খানের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে ক্রিস ওকসের বলে আউট হন সিএসকে-র দ্বিতীয় ওপেনার ঋতুরাজ গায়েকোয়াড়ও (৫)।

পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া চেন্নাই সুপার কিংসকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ম্যাচে ফেরান সুরেশ রায়না ও মইন আলি। দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ৫৩ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ হয়। ২৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হন মইন। এরপর আম্বাতি রায়ডুর সঙ্গে জুটি বেঁধে একই গতিতে সিএসকে-র ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন রায়না। তাঁদের মধ্যে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ হয়।

টম কারানের স্লোয়ার বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান রায়ডু। তাঁর ১৬ বলে ২৩ রানের ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস একটি চার ও দুটি ছক্কা দিয়ে সাজানো। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেই ব্যাট চালাতে শুরু করেন রবীন্দ্র জাদেজা। রান আউট হয়ে যান সুরেশ রায়না। তাঁর ৩৬ বলে ৫৪ রানের ইনিংস তিনটি চার ও চারটি ছয় দিয়ে সাজানো।

পাঁচ মাস পর ফের বাইশ গজে ব্যাট হাতে নামা এমএস ধোনির কাছ থেকে ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং আশা করেছিলেন ক্রিকেট প্রেমীরা। তবে ১৬১ দিন পর সবাইকে হতাশই করলেন কিংবদন্তি। কোনও রান না করেই নবাগত আবেশ খানের বলে প্লে-ডাউন হয়ে সাজঘরে ফিরে যান সিএসকে অধিনায়ক। ১৪ বলে ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন স্যাম। চারটি চার ও দুটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। দাদা টম কারানের এক ওভারে ২১ রান করেন ইংল্যান্ডের অল রাউন্ডার। ১৭ বলে ২৬ রান করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তিনটি চার আসে তাঁর ব্যাট থেকে।

দিল্লির হয়ে ৪ ওভার বল করে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তরুণ আবেশ খান। একটি করে উইকেট নেন টম কারান ও ক্রিস ওকস। উইকেট নিলেও ৪ ওভার বল করে ৪৭ রান দিয়েছেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন।