গুরু-শিষ্যের লড়াই
মহেন্দ্র সিং ধোনি ও তাঁর দলের কাছে গতবারের আইপিএল একেবারেই ভালো যায়নি। গোটা আইপিএলেই চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি চেন্নাই সুপার কিংসকে। তারপর নিলামে শক্তিশালী দল গড়া হয়েছে। চেন্নাইয়ে শিবিরে শুরু থেকেই ধোনি যেভাবে অনুশীলন করেছেন তাতেই বোঝা গিয়েছে দলকে ট্র্যাকে ফেরাতে তিনি কতটা বদ্ধপরিকর। মুম্বইয়ে অনুশীলন ম্যাচেও মাহি ম্যাজিক দেখা গিয়েছে, ব্যাট হাতে এবং উইকেটের পিছনেও। অন্যদিকে, ভারতকে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জেতানোর পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ফরম্যাটেই দুর্ধর্ষ ফর্মে রয়েছেন ঋষভ পন্থ। যে কোনও মুহূর্তে বদলে দিচ্ছেন ম্যাচের রং। তবে নেতৃত্ব দেবেন এই প্রথম। তাও আবার দেশের অন্যতম সেরা অধিনায়কের বিরুদ্ধে। গুরু-শিষ্যের স্ট্র্যাটেজিক লড়াইও তাই এই ম্যাচের অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে।
সমস্যায় দিল্লি
প্রথম ম্যাচে সেরা দল নামাতে সমস্যা রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসের। শ্রেয়স আইয়ার নেই। অক্ষর প্যাটেল কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলে কাগিসো রাবাডা ও অ্যানরিক নর্টজে ৬ এপ্রিল দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। ফলে দলের বোলিং আক্রমণের দুই তারকাই এখন কোয়ারান্টিনে আছেন। ম্যাচের আগে দুটি করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত খেলার সম্ভাবনাই নেই অক্ষরের। তাঁকে বাইরে রেখেই তাই প্রথম একাদশ গড়ার ভাবনাচিন্তা চলছে। ওপেন করবেন পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ান। তিনে স্টিভ স্মিথ, চারে পন্থ। এরপর আসবেন মার্কাস স্টইনিস, শিমরন হেটমায়ার, ক্রিস ওকস। রবিচন্দ্রন অশ্বিন নামতে পারেন আটে। তারপর অমিত মিশ্র, উমেশ যাদব ও ইশান্ত শর্মা। বেশিরভাগ ভারতীয় বোলার খেলিয়ে প্রথম একাদশে বিদেশি ব্যাটসম্যান ও অলরাউন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোই পরিকল্পনা দিল্লির। যদিও ওকস, উমেশ, ইশান্তরা থাকলেও দুই তারকা পেসারের অনুপস্থিতি বোলিং বিভাগকে কিছুটা হলেও দুর্বল দেখাতে পারে। চেন্নাই-বধে তুরুপের তাস হতে পারেন চেন্নাইয়ের হয়েই আগে খেলা এবং সম্প্রতি ফর্মে থাকা অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
শক্তিশালী চেন্নাই
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলে ভারতে দেরিতে আসায় ধোনির দলও প্রথম ম্যাচে পাবে না তারকা পেসার লুঙ্গি এনগিডিকে। তবে দিল্লির চেয়ে অনেক বেশি ভারসাম্য রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস দলে। মঈন আলি ও ফাফ দু'প্লেসিকে ওপেন করতে দেখা যাবে। তিনে সুরেশ রায়না, চারে অম্বাতি রায়ুডু, পাঁচে মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে পরিস্থিতি বুঝে ধোনি চারেও আসতে পারেন। ছয়ে রবীন্দ্র জাদেজা, সাতে স্যাম কারান, আটে ডোয়েইন ব্র্যাভো। স্পিনার কৃষ্ণাপ্পা গৌতমের সঙ্গী হতে পারেন জোরে বোলার শার্দূল ঠাকুর ও দীপক চাহার। ধোনির পাশাপাশি সুরেশ রায়না ও রবীন্দ্র জাদেজার কামব্যাক ম্যাচ কেমন হয়, বিশেষ করে জাদেজা ফিনিশারের ভূমিকায় কতটা কার্যকরী হন সেটাও দেখার বিষয়।
নজর থাকবে
অধিনায়ক ঋষভ পন্থের দিকে তো নজর থাকবেই। নজর থাকবে তাঁর দলের পৃথ্বী শ-র দিকেও। আইপিএল খেলতে আসার আগে গত মাসে বিজয় হাজারে ট্রফিতে যথাক্রমে অপরাজিত ১০৪, ২২৭, অপরাজিত ১৮৫ ও ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। মুম্বই চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। ফলে তাঁর ফর্ম নিঃসন্দেহে ভরসা দেবে দিল্লিকে। শিখর ধাওয়ানও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফর্মে ফিরেছেন। তবে ধোনির দলের বেশ কয়েকজনের ম্যাচের মধ্যে না থাকা সমস্যা হতে পারে। ধোনি নিজে গত আইপিএলের পর এই খেলবেন। মঈন আলি ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে খেললেও টি ২০ খেলেননি। দু'প্লেসি শেষ টি ২০ খেলেছেন পাকিস্তান সুপার লিগে। রায়না ও রায়ুডু গত জানুয়ারির পর কোনও ম্যাচ খেলেননি। চোট সারিয়ে ফিরছেন জাদেজা। যদিও অভিজ্ঞতা দিয়ে তাঁরা এই সমস্যা কতটা কাটাতে পারেন তার উপরই নির্ভর করছে চেন্নাইয়ের সাফল্য।