পাপিয়া অধিকারী-সুজাতা মন্ডলকে মারধরের জের, চতুর্থ দফায় মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

তৃতীয় দফার ভোটে একের পর এক জায়গাতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রার্থীরা। শাসক, বিরোধী সমস্ত দলের প্রার্থীরা প্রহৃত হয়েছেন। এমনকি আরামবাগে সুজাতা মন্ডল খাঁকে বাঁশ হাতে তাড়া করে গ্রামবাসীরা অন্যদিকে উলুবেড়িয়াতে পাপিয়া অধিকারী প্রকাশ্যে চড় খেয়েছেন।

জোট চলাকালীন এভাবে মহিলা প্রার্থীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। এভাবে মহিলা প্রার্থীদের আক্রান্ত হতে হয় তাহলে সমাজে কি বার্তা যাবে? তা নিয়েই কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে কমিশনের। আর তা থেকে শিক্ষা নিয়েই আরও সতর্ক কমিশন।

মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তায় জোর

শেষ দফায় আক্রান্ত মহিলা প্রার্থীরা। তৃণমূল হোক কিংবা বিজেপি, সবদলের মহিলাদের আক্রান্ত হতে হয়েছে। এই অবস্থায় বাকি দফাগুলিতে মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তায় জোর দিচ্ছে কমিশন। এই মর্মে ভোটমুখী জেলাগুলিকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যেখানে বলা হয়েছে যে, মহিলা প্রার্থীদের এবার থেকে নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে। এতে মহিলারা ভোটের সময়ে নিরাপদে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে ভোটের দিন প্রার্থীরা সাধারণত একজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী পেয়ে থাকেন। কিন্তু শেষ দফায় যেভাবে মহিলা প্রার্থীরা মার খেয়েছেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কমিশন। আর সেদিকে তাকিয়েই মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সমস্ত মহিলা প্রার্থীর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সশস্ত্র রক্ষীর সংখ্যা আরও এক জন করে বাড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে কমিশনের। তবে স্পর্শকাতর এলাকার ভিত্তিতে মহিলা প্রার্থীর নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনমতো জেলাগুলিকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও কোনও মহিলা প্রার্থী প্রয়োজনে ভোটের দিন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আবেদন জানাতে পারেন।

মীনাক্ষীর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল

হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হয়েছিলেন বাম প্রার্থী মীনাক্ষী। প্রার্থীর সুরক্ষার কথা ভেবে বাড়ানো হক নিরাপত্তা। এই দাবিতে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বামেরা। সেই মতো ভোটের আগেই বাম প্রার্থী মীনাক্ষীর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। এবার সে বিষয়টিকে সামনে আনা হচ্ছে।

চতুর্থ দফায় একাধিক মহিলা প্রার্থী রয়েছেন

আগামী ১০ তারিখ চতুর্থ দফায় রাজ্যের ৫ জেলার মোট ৪৪টি আসনে ভোটগ্রহণ রয়েছে। কোচবিহারের ৯টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১১টি, হাওড়ার ৯টি, হুগলির ১০টি ও অলিপুরদুয়ারের পাঁচটি আসনে ভোট হবে। এই সবক'টি আসনে প্রার্থী সংখ্যা ৩৭৩। এর মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও নির্দল মিলিয়ে এক চতুর্থাংশের বেশি মহিলা প্রার্থী রয়েছেন। আপাতত তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

আরও বাড়ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

চতুর্থ দফায় অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে কার্যত কোমর বেঁধে নামছে নির্বাচন কমিশন। আরও বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। ১০ এপ্রিল, শনিবার পাঁচ জেলায় ৪৪টি আসনে ভোট রয়েছে। একাধিক স্পর্শকাতর এলাকায় ভোট রয়েছে। আর সেদিকে তাকিয়েই কয়েকশ কোম্পানি বাহিনী নির্বাচন কমিশন মোতায়েন করতে চলেছে। জানা গিয়েছে, শুধু বুথ প্রহরাতে থাকবে ৭৯৩ কোম্পানি বাহিনী। তার মধ্যে কলকাতা পুলিশ এলাকায় থাকবে ৯৪ কোম্পানি, আলিপুরদুয়ারে ৯৬, কোচবিহারে ১৮৩, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে ৯৯, ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলায় ৩৮, হাওড়া গ্রামীণে ৩৫ এবং বারুইপুর পুলিশ জেলায় ৪৪ কোম্পানি বাহিনী থাকবে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে থাকবে ৭৯ কোম্পানি। ইতিমধ্যে এক হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে এসেছে বাংলায়। বাকি বাহিনীকে এরিয়া ডোমিনেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে লাগানো হবে।

More WEST BENGAL ASSEMBLY ELECTION 2021 News