উন্নয়ন এবং জনমুখী প্রকল্পই এগিয়ে রেখেছে তৃণমূলকে
মঙ্গলবার ভোট হল হাওড়া ও হুগলির গ্রামীণ এলাকায় এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ষোলোটি আসনে। এইসব এলাকার বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে মনে হল বিজেপি হওয়ার তেমন প্রভাব নেই। যা প্রভাব আছে তাতে তারা অল্প কয়েকটা সিট পেলেও পেতে পারে। কিন্তু সরকার গড়ার মতো গরিষ্ঠতা জোগাড় করার আভাস মিলবে না। এই সব এলাকায় কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে প্রথমেই তাঁরা বলছেন এবার বিজেপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তৃণমূলের। কিন্তু যখনই জানতে চাইছি কোন আসনে কী ভাবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তখন কিন্তু তাঁরা যুক্তি দিয়ে আর বলতে পারছেন না। বরং তাঁদের কথাবার্তায় যা বেরিয়ে আসছে তা হল : এক, উন্নয়নের কাজ বেশ ভালোই হয়েছে। দুই, এই সরকারের আমলে সকলেই কমবেশি জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। আর তিন, মহিলারা বেশিরভাগই মমতার পক্ষে! তাহলে আর হাড্ডাহাড্ডি কোথায়? সবই তো তৃণমূলের পক্ষে। বিপক্ষে কী? মমতার সরকার অপদার্থ। এরাজ্যে শিল্প হয়নি। ছেলে মেয়েদের চাকরি নেই। আর সবচেয়ে বড় কথা মমতা মুসলমানদের খুব মাথায় তুলে রেখেছে। তাদের জন্য সব কিছুতেই ছাড়, সব জায়গায় বাড়তি সুবিধা। বিজেপি এগুলো বলছে। জোর গলায় খোলাখুলি বলছে। তাতেই অনেকে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। তার ফলে এদিক-ওদিক থেকে দু-চারটে সিট বিজেপির মিলে গেলেও যেতে পারে।
লোকের অভাবে বিজেপিকে বাতিল করতে হচ্ছে হেভিওয়েট সভা
বিভিন্ন জেলায় ঘুরে দেখলাম মাঠে নেমে লড়ার মতো কর্মীর খুবই অভাব বিজেপিতে। যে কারণে ছোটখাটো মিছিল বা সভা করার উদ্যোগ তারা নিচ্ছে না। হেভিওয়েটদের সভা আর রোড শো-র ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে প্রথম দিকে এই সমস্ত রোড শো বা সভায় যেটুকু লোকজন আসছিল এখন আর তাও আসছে না। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ বা বিজেপির তা বড় নেতারা এত ঘনঘন এখানে আসছেন যে তাঁদের দেখার বা তাঁদের কথা শোনার আর কোনও আকর্ষণই থাকছে না। মাঠ সাজিয়ে বসে থাকলেও লোক আসছে না। ফাঁকা চেয়ার হাওয়া খাচ্ছে। তার কারণে নানা অজুহাতে হেভিওয়েট নেতাদের সভা বাতিল করতে হচ্ছে।
বিজেপি না তৃণমূল, কে জিতবে?
সোমবার এক ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কলকাতায় কলেজ স্ট্রিট পাড়ায় কাজ করেন। পূর্ব মেদিনীপুরের লোক। ভোট দিতে দেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি ভোটের আগে বেশ জোর দিয়েই বলছিলেন, এবার সব পদ্ম। সবাই পদ্ম চিহ্নে ভোট দেবে। ভোট দিয়ে ফিরে আসার পর তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, সবাই পদ্ম চিহ্নে ভোট দিল? তিনি উত্তর দিলেন ময়নায় মনে হচ্ছে অশোক দিন্দাই জিতবে। ক্রিকেটার অশোক দিন্দা। এবার ময়না কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী। বুঝলাম ভদ্রলোক ময়নার ভোটার। আবার জিজ্ঞেস করলাম, তার মানে পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি ভালোই রেজাল্ট করবে তাই না? এই কথা নিয়ে তার মধ্যে আলোচনার কোনও উৎসাহ দেখলাম না। বললেন, ময়নায় অশোক দিন্দা জিততে পারে। তবে এবার মহিলারা অনেক ভোট দিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই তৃণমূলকে ভোট দেবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটার জন্যেও লোকে মমতাকে ভোট দেবে। তারপরও বলছেন বিজেপি জিতবে? তিনি বললেন, মন তো বলছে বিজেপি জিতবে। দেখা যাক কী হয়!