সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : জয় বাবা ফেলুনাথ ছবিতে মছলি বাবা চরিত্রটি কার না মনে আছে। ভন্ড সন্ন্যাসী আদতে এক বিশাল চোরা চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে এমন এক ভিডিও যেখানে নরেন্দ্র মোদিকে সেই ভন্ড সাধু হিসাবে দেখানো হয়েছে, সঙ্গী মগনলাল মেঘরাজ অমিত শাহ। ভিডিও বলছে এদের যুগলবন্দী দেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে বলে দেখানো হয়েছে এই ভিডিওতে। তাদের খেল খতম করতে এসেছেন ফেলুদা।
প্রথমেই দেখানো হচ্ছে খেল খতম, কার ? বিজেপির। দেখা যাচ্ছে প্রথমেই সন্তোষ দত্ত বলছেন, ‘এখানে কোনও রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে? উত্তরে ব্যক্তি বলছেন ,সম্প্রতি এখানে এক জাঁদরেল সাধুর আবির্ভাব হয়েছে।’ সাধু হিসাবে দেখানো হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি ২০১৯ নির্বাচনের শেষে তার গুহায় থাকাকালীন লুকটি। অর্থাৎ জাঁদরেল সাধু মোদী। তার আবির্ভাব হয়েছে বাংলায় এমনটা বলতে চাওয়া হচ্ছে। এরপর ফেলুদা জিজ্ঞাসা করছেন এখানে গণ্যমান্য ব্যক্তি আছেন নাকি। দেখানো হচ্ছে তাদের। কারা? রুদ্রনীল, রূপা গাঙ্গুলির মতো ব্যক্তিরা রয়েছেন সেই সাধুর আড্ডায়। রয়েছেন মগনলাল রূপী অমিত শাহও। সাধু ভাষণ দিচ্ছেন, সবাই ভক্তের মতো মন দিয়ে তা শুনছে। এরপর, ফেলুদা দেখেই বললেন, ভেরি সাসপিসিয়স। আবার বলা হচ্ছে , ‘বাবাজি এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না।’ মোদির বিদেশ সফরকে কটাক্ষ করা হয়েছে এভাবেই।
এরপরেই মগনলাল রূপে অমিত শাহের আগমন। তার কাছে পৌঁছে গিয়েছে ফেলুদার কথা। মগনলালের বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত করতে এসেছেন শুনেই তিনি ‘একটু কড়া করে শাসিয়ে দিলেন। এরপর সেই ছুরির খেলা। একের পর ছুরি লালমোহন বাবুর দাঁড়ানো কাঠবোর্ডে বিঁধছে। এই ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে, অমিত শাহ আসলে দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে ধর্ম নিরাপেক্ষতা, মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, সংবিধান সব কিছুকে ছুরি দিয়ে বিধছেন। ভয়ে লালমোহন বাবু ওরফে দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা।
এরপরেই মগজাস্ত্র ব্যবহার করে এই মগনলাল ও ওই সাধুকে ধরে ফেলছেন। গ্রেফতার সাধু আর মগনলালকে বন্দুকের সামনে রেখে স্পেশাল ট্রিটমেন্ট ফেলুদার। এবং খেল খতম।
জয় বাবা ফেলুনাথ সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় নির্মিত তারই রচিত একই নামের ফেলুদার গোয়েন্দা উপন্যাস নিয়ে একটি চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, এবং মগনলাল মেঘরাজের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উৎপল দত্ত । এটা সত্যজিৎ রায় নির্মিত দ্বিতীয় ও শেষ ফেলুদা চলচ্চিত্র।
কাহিনী আবর্তিত হয়েছে কাশী অর্থাৎ বেনারস শহরকে ঘিরে। সেখানকার বনেদি ঘোষালবাড়ির বহুমূল্যবান গনেশমূর্তিকে হাতাতে চায় ক্ষমতাশীল ব্যক্তি মগনলাল। যে মুর্তিকে লুকিয়ে রেখেছিল বাড়ির কণিষ্ঠতম সদস্য রুকু আর গৃহকর্তা, তার দাদু। অন্যদিকে গঙ্গার ঘাটে আবির্ভাব এক রহস্যময় মছলিবাবার। অজানা আততায়ী হত্যা করে মুর্তি গড়ার কারীগর শশীবাবুকে, যিনি কাকতালীয়ভাবে উদ্ধার করেন গণেশমূর্তিটি সিংহের মুখের ভেতর থেকে। দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনের দিন ফেলুদা স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় জাল গুটিয়ে আনেন।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.