মনের জোরেই বিরাটরা বাকিদের চেয়ে এগিয়ে, জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে মত সৌরভের

করোনার পর ক্রিকেট শুরুর পর থেকেই ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফদের থাকতে হচ্ছে জৈব সুরক্ষা বলয়ে। মাসের পর মাস বায়ো বাবলে থাকতে গিয়ে অনেকেই মানসিক ক্লান্তিতে ভুগছেন। এই কারণে আইপিএল থেকেও সরে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে আন্তর্জাতিক তারকাকেও। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও মনে করেন, মাসের পর মাস জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার বিষয়টি নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গেও কথা বলা উচিত। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ক্রীড়াসূচিও তৈরি করা উচিত। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা না বললে যাঁরা মানসিকভাবে কম শক্তিশালী তাঁরা দলে টিকে থাকার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়তে পারেন। যাঁরা মানসিকভাবে বেশি শক্তিশালী তাঁরাই তার ফলে খেলবেন এটাও কাম্য নয়। ইংল্যান্ড রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। করোনা পরিস্থিতি যা তাতে এই বছরের পুরোটাই ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের বায়ো বাবলেই থাকতে হবে। এ বিষয়ে এবার মুখ খুললেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

বিরাটরা এগিয়ে

জৈব সুরক্ষা বলয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকা যে কঠিন তা মানছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতে গিয়ে হোটেল আর স্টেডিয়ামের মধ্যেই আবদ্ধ থাকতে হয় ক্রিকেটারদের। বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করা বা বাইরে ঘুরতে যাওয়ার অবকাশ নেই। ঋদ্ধিমান সাহা যেমন বলেন, আমি এমনিতেও দলের সঙ্গে থাকলে নিজের রুমে থাকতে পছন্দ করি। তাই জৈব সুরক্ষা বলয় আমার কাছে খুব সমস্যা তৈরি না করলেও যাঁরা বাইরে মুভি দেখতে বা শপিং করতে বাইরে বেরোতে পারছেন না তাঁদের অসুবিধা। সৌরভ মনে করেন, জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকাকালীন মনের জোরের নিরিখে ভারতীয় দল অন্যান্য দলের চেয়ে এগিয়ে। নিজের ক্রিকেটজীবনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সৌরভের বিশ্বাস, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ভারতের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা।

কঠিন চ্যালেঞ্জ

সৌরভ বলেন, আরও ছয়-সাত মাস টানা প্রচুর ক্রিকেট খেলতে হবে ভারতকে। থাকতে হবে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে। এটা কঠিন। হোটেল রুমে আবদ্ধ থাকার পর মাঠে যাওয়া, চাপ সামলে পারফর্ম করা, তারপর আবার হোটেলে ফিরে আবার মাঠে যাওয়ার অপেক্ষা করা সহজ ব্যাপার নয়। এটা সত্যিই এক অন্যরকম জীবন। তবে সহনশীলতায় ভারত বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে।

মানসিক প্রস্তুতি জরুরি

ভারতের কাছে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারের পর তিনটি টেস্টের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। কোভিড পরিস্থিতির জন্য ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সৌরভ সে প্রসঙ্গে টেনে বলেন, করোনা ভীতি অবশ্যই মনের মধ্যে কাজ করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে আশা করি, আমাদের তেমন কিছু পদক্ষেপ করতে হবে। ইতিবাচক থাকতে হবে। মানসিক প্রস্তুতিও চালিয়ে যেতে হবে। মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকলেই সব কিছু ভালো হবে।

চাপের মোকাবিলা

খারাপ সময় মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকাও জরুরি বলে মনে করেন সৌরভ। তাঁর কথায়, মাইন্ডসেটই আসল কথা। জীবনের কোনও গ্যারান্টি নেই। খেলাধুলো, ব্যবসা, সব ক্ষেত্রেই। চড়াই-উতরাই আসবেই। জীবনে চাপও একটা বড় বিষয়। আমরা সকলেই কোনও না কোনও চাপের মধ্যে দিয়ে যাই। প্রথম টেস্ট খেলার সময় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চাপ থাকে। নিজের অবস্থান বিশ্বকে বুঝিয়ে দেওয়ার সেই চাপ থাকে। আবার অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ধরে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। সামান্য বিচ্যুতিতেই নানা সমালোচনা, খুঁত বের করা শুরু হয়ে যায়। ভালো ক্রীড়াবিদ হতে গেলে এই পরিস্থিতিগুলি সামলাতেই হবে।

More INDIAN CRICKET TEAM News