২০১৮-র পর শোভনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি তৃণমূলের
কংগ্রেসের কাউন্সিলর থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু। স্বল্পদিনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদরের কানন হয়ে উঠেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। একাধিক মন্ত্রিত্ব থেকে শুরু করে কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন। ২০১৮-র পর তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের। তৃণমূলে ৯ মাস অজ্ঞাতবাসে কাটানোর পর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
বিজেপিতে দু-মাসও স্থায়ী হল না তাঁর সক্রিয়তা
বিজেপিতে গিয়েও তাঁর সক্রিয় হতে সময় লেগে যায় ১৭ মাস। তারপর বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে যদিও বা তিনি বিজেপির প্রচারে বেরোলেন। কিন্তু দু-মাসও স্থায়ী হল না তাঁর সক্রিয়তা। প্রার্থী নিয়ে মতানৈক্যের জেরে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ডাক দিলেন। তারপর থেকেই নিভৃতবাসে তিনি।
রণে আবির্ভূতই হলেন না ‘ব্রাত্য’ শোভন চট্টোপাধ্যায়
মঙ্গলবার দক্ষিণ ২ পরগনার ১৬ কেন্দ্রে ভোট হল। এই ভোটে টিকিও দেখা গেল না শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। রাজনৈতিক মহল আশা করেছিল, এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শোভন চট্টোপাধ্যায়ের লড়াই দেখবে বাংলা। কিন্তু রণে আবির্ভূতই হলেন না শোভন চট্টোপাধ্যায়।
তৃণমূলে সিঁদ কাটার আগেই সম্পর্কে ভাঙন শোভনের
২০১৯-এর ভোটের পর বিজেপির দিকে ঝোঁকেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। শোভনের যোগদানে হাতে চাঁদ পেয়েছিল বিজেপি। কারণ কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তারা নেতৃত্বের অভাবে ভুগছিল। শোভনকে দিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সিঁদ কাটাও সুবিধা হত। সিঁদ ইতিমধ্যে কাটা শুরু হয়ছিল। কিন্তু তার আগেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন ধরে যায় শোভনের।
শোভন ব্যবহৃত হয়েও একা হয়ে গেলেন ভোটের আগে
বিজেপির প্রার্থী তালিকায় শোভনের নাম নেই। শোভন নাকি স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে লড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে প্রার্থী না করে অভিনেত্রী পায়েল সরকারকে প্রার্থী করে। তা মানতে পারেননি শোভন। প্রার্থী করা হয়নি বান্ধবী বৈশাখীকেও। তাই প্রতিবাদটো জোরদারই করছিলেন। শোভন ব্যবহৃত হয়েও একা হয়ে গেলেন ভোটের আগে।
রাজনীতির লোক শোভন, রাজনীতি থেকেও উধাও
বিজেপিতে ব্যবহৃত হওয়ায় আর ফেরার পথও ছিল না তৃণমূলে। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোট হয়ে গেল তিনি রয়ে গেলেন উপক্ষিত। হতাশার দলেই থেকে গেলেন শোভন। তৃণমূলকে জবাব দেওয়া হল না। বিজেপিকেও না। এমনকী রাজনীতির লোক শোভন, রাজনীতি থেকেও উধাও হয়ে গেলেন। অন্তত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৬ আসনের ভোটের দিন সেই চিত্র নজর এড়াল না রাজনৈতিক মহলের।
শোভন রাজনীতির লোক, রাজনীতিতেই থাকুন
স্ত্রী রত্না থেকে ছেলে সপ্তর্ষি কিংবা বান্ধবী বৈশাখীও চেয়ে এসেছেন শোভন রাজনীতির লোক, রাজনীতিতেই থাকুন। তাঁর রাজনৈতিক সন্ন্যাস হয়ে যাক চান না কেউই। বৈশাখী মনেও করেন না এই রাজনৈতিক সন্ন্যাস চিরস্থায়ী। শোভন শীঘ্রই ফিরবেন। কিন্তু কোথায় ফিরবেন? কালীঘাটে তিনি জায়গা পান, নাকি বিজেপি তাঁকে ফিরে চায়, তা বলবে ভবিষ্যই।