মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ধৃতরাষ্ট্র’ বলছেন তাঁর প্রাক্তন সৈনিকরাই! প্রশ্নে অভিষেক-প্রীতি

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা কি সত্যিই অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো! তিনিও কুরুপতি ধৃতরাষ্ট্রের মতো স্নেহান্ধ! তা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠছেই। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তাঁর দলের প্রাক্তন সৈনিকরা তো ফলাও করে বলতে শুরু করেছেন মমতার ভাইপো-প্রীতির কথা। অর্জুন সিংয়ের পর এবার মমতাকে ধৃতরাষ্ট্রের আসনে বসালেন সদ্য দলত্যাগী দীনেশ ত্রিবেদী।

মমতাকে ধৃতরাষ্ট্র বললেন দীনেশ ত্রিবেদী

২০১৯-এর ভোটের মুখে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আর অভিষেকের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও মমতাকে ধৃতরাষ্ট্র বলে সম্বোধন করেছিলেন। এবার কয়লাকাণ্ডে শুভেন্দু যখন অভিষেককে কাঠগড়ায় তুলেছেন, তখন মমতাকে ধৃতরাষ্ট্র বললেন দীনেশ ত্রিবেদী।

ধৃতরাষ্ট্র যেমন স্নেহান্ধ হয়ে হিতাহিত ভুলেছিলেন

দীনেশ ত্রিবেদীও বলেন, তৃণমূল সরকারের আমলে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। এই কয়লা-কাণ্ডের দুর্নীতি হিমশৈলের চূড়ামাত্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এসব জানতেন না, তা আমি মনে করি না। তিনি বসেছিলেন ধৃতরাষ্ট্র হয়ে। ধৃতরাষ্ট্র যেমন স্নেহান্ধ হয়ে হিতাহিত ভুলে গিয়েছিলেন, সব কিছু সঁপে দিয়েছিলেন দুর্যোধনকে, তেমনই অবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

মমতার অন্ধ অভিষেক-প্রীতিই দলকে ডোবাচ্ছে!

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও অনেকে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। মমতার অন্ধ অভিষেক-প্রীতিই দলকে ডোবাচ্ছে। মমতাও অভিষেকের প্রতি স্নেহান্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো। দুর্যোধনের প্রতি স্নেহান্ধ হয়ে ধৃতরাষ্ট্র ভুলে গিয়েছিলেন তাঁর রাজ্য পাণ্ডবদের হাতেই নিরাপদ থাকত। তাই ধর্মের পথ ছেড়ে অধর্মের পথে হেঁটেছিলেন তিনি। ফলে দুর্যোধনের হঠকারিতা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল কুরুবংশকে।

‘সততার প্রতীক’ তকমা সরিয়ে তিনি ভাইপোকে প্রশ্রয়

অভিযোগ, মমতাও অভিষেকের প্রতি স্নেহান্ধ হয়ে দলকে ডোবানোর রাস্তা তৈরি করে ফেলেছেন। তাই ‘সততার প্রতীক' তকমা সরিয়ে তিনি ভাইপোকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। যার ফলে তাঁর দল ভেঙে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা সবাই একই অভিযোগ করছেন। বলছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই এখন দলে সর্বেসর্বা দুর্যোধনের মতো।

মমতার অভিষেক-প্রীতি নিয়ে বিতর্ক লেগেই রয়েছে

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্তৃত্ব নিয়ে। ধৃতরাষ্ট্রের মতো দলে তাঁর রাশ আলগা হয়ে গিয়েছে বলে আঙুল তুলছিলেন অনেকে। তাঁর জায়গায় যুবরাজ হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই এখন দলের সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন বিদ্রোহীরা। তা আপাতত মিলিয়ে গেলেও মমতার অভিষেক-প্রীতি নিয়ে বিতর্ক লেগেই রয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে নিশানায় শুভেন্দু অধিকারীও

কয়লা-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারী কাঠগড়ায় তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে নিশানায় শুভেন্দু বলেছেন, দায় এড়াতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। ভাইরাল হওয়া অডিও টেপকে হাতিয়ার করে শুভেন্দুর অভিযাগ, কয়লা-কাণ্ডে মাত্র সাত বছরে অভিষেকের কাছে ৯০০ কোটি টাকা পৌঁছেছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। প্রতি মাসে পাচারের ৪০ কোটি টাকা পাঠানো হত বিনয় মিশ্র-লালাদের মারফৎ, তাও অভিযোগ করেন।

পিসিমণি তা জানবেন না তা হয় কী করে!

এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, এই টাকা যেত পুলিশ ভ্যানে করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই দায় এড়াতে পারেন না। পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন ভাইপো। নবান্নকে কাজে লাগিয়ে ভাইপো এই কীর্তিকলাপ করেছেন। আর পিসিমণি তা জানবেন না তা হয় কী করে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন দীনেশ ত্রিবেদী।

কোথাও বোমাবাজি, তো কোথাও ঝরছে রক্ত! তৃতীয় দফার ভোটের আগে রণক্ষেত্র গোটা বাংলাই

Know all about
দীনেশ ত্রিবেদী

More MAMATA BANERJEE News