কলকাতা: রং, রাজনীতি, বিনোদন জগত এই ফুল থেকে ওই ফুলে লাফ, নানা ধরনের ডায়লগে ভরপুর এবারের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ভোট। তার সঙ্গে লাগামছাড়া মুখের ভাষা তো আছেই। কিছু দলের নেতা-নেত্রীদের মুখের ভাষা শুনে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে, সোশ্যাল সাইট বা গণমাধ্যমের কাছে প্রচারে থাকার জন্যই কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ধরনের ভাষার প্রয়োগ! শালীনতার সীমা লংঘন করে, যা ইচ্ছে বলে যাওয়ার এ রাজনীতি কি এর আগে ভারতবর্ষে হয়েছে?
গত কয়েকদিন আগে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন,’অভিনয় ছেড়ে রাজনীতিতে এলে রগড়ে দেব।’ তার আগে আরেক সংবাদমাধ্যমের আয়োজিত একটি বিতর্ক সভায় যখন একজন অভিনেত্রী এবং সঞ্চালিকা তাঁকে প্রশ্ন করে, তিনি কেন বারংবার কুরুচিকর ও মহিলাদের সম্মানকে আঘাত করে এমন মন্তব্য করেন, দিলীপ ঘোষ প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘ন্যাকামি করবেন না’। ‘অভিনয় ছেড়ে রাজনীতিতে এলে রগড়ে দেব’ এ হেন মন্তব্যকে অস্ত্র করে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনয় জগতের তারকাদের একহাত নিয়ে শ্রীলেখা মিত্র,পালটা প্রশ্ন করেছেন, ‘বিজেপিতে যোগদান করা শিল্পীরা এরপর চুপ কেন?’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলে ‘তুমি’ বিজেপি বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলে ‘তুমি’ তৃণমূল । এ ধারণা এ দেশে নতুন নয় সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মার্চ মাসের শেষের দিকে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের লেখায় মার্চের শেষে ‘নিজেদের মতে, নিজেদের গান’ নামের একটি মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। এই গানের ভিডিওতে কোন দলকে সমর্থন করা হয়নি। বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী, মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে আজ দেশের কী অবস্থা তাই তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা ,নারী সুরক্ষা, অর্থনৈতিক অবস্থা, জিডিপি পতন এই বিষয়গুলিকে সমাজের প্রকৃত ছবি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ঋদ্ধি সেন ও ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই ভিডিওতে একদল রাজনৈতিক রংহীন নির্দল অভিনেতা এবং ব্যক্তিত্বদের দেখা গেছে।পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, অরুণ মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কৌশিক সেন, রাহুল, অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একঝাঁক টলিউড তারকা।
এই গানের প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষের মতামত জানতে চাওয়াতে তাঁর উত্তর,“শিল্পীদের বলছি আপনারা নাচুন, গান। ওটা আপনাদের শোভা পায়। রাজনীতি করতে আসবেন না। ওটা আমাদের জন্য ছেড়ে দিন। নাহলে রগড়ে দেব।” রগড়ে দেব বলতে কী বলতে চাইছেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে আবার বলেন, “ওরা জানে আমি কীভাবে রগড়াই।” দিলীপের এই মন্তব্যের পরই প্রতিক্রিয়া দিয়ে শ্রীলেখা তার ফেসবুক ওয়ালে সেই বক্তব্যের স্ক্রিনশট দিয়ে লেখেন, ‘বিজেপিতে যোগদান করা শিল্পীরা কোথায় গেলেন? লিগ্যাল নোটিশ দেবেন নাকি? এইবার চুপ কেন ? সত্যি বলছি আপনাদের জন্য দুঃখ হয়।’