মমতা-শুভেন্দুর লড়াইয়ে গণতন্ত্রের উৎসবে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে রইল নন্দীগ্রামের ভোট

হাইপ্রোফাইল কেন্দ্র হিসেবে নন্দীগ্রাম এবার সবার উপরে স্থান করে নিয়েছিল। গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল নন্দীগ্রামের দিকে। এখানে লড়াই ছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির অন্যতম মুখ হয়ে ওঠা শুভেন্দু অধিকারীর। সেই নন্দীগ্রামে কী দৃষ্টান্ত তৈরি হল এবার!

মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে যা হল, তা গণতন্ত্রে কহতব্য নয়!

সারা দেশের সামনে বাংলাকে ফের ছোট করে দিল নন্দীগ্রামের ভোট। এত নিরাপত্তা, এত কেন্দ্রীয় বাহিনী, এতদিন ধরে এরিয়া ডমিনেশন, ভোটের একদিন আগে থেকে ১৪৪ ধারা জারি, তারপরও উত্তপ্ত হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় নন্দীগ্রামে অশান্তি ছড়াল। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে যা হল, তা গণতন্ত্রে কহতব্য নয়।

বুথ দখল, ছাপ্পা, রিগিং, বুথে এজেন্ট বসতে না দেওয়া- কত কিছু

এদিন সকাল থেকেই প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ, বুথ দখল, ছাপ্পা, রিগিং, বুথে এজেন্ট বসতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথারীতি নন্দীগ্রামে তাঁর ভাড়া ঘরেই নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন। চোখে রেখেছিলেন খবরে। আর শুভেন্দু চষে বেড়চ্ছিলেন নন্দীগ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।

মুখ্যমন্ত্রী বুথে, বাইরে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি

শুভেন্দু এদিন দুপুরে ভোট চলাকালীনই দাবি করেন ৭০ শতাংশ ভোট হয়ে গিয়েছে। মাননীয়া এখনও ঘরে বসে রয়েছেন। বুঝতেই পারছেন কী হয়েছে! তারও বেশ খানিকক্ষণ পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুইলচেয়ারে করে বের হন বুথ পরিদর্শনে। বয়ালের বুথে আসতেই ঝামেলার সূত্রপাত হয়। মুখ্যমন্ত্রী যখন বয়ালের বুথে তখন বাইরে তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এত ঘটনায় মুখ পুড়ল কার? কমিশনের নাকি রাজনৈতিক দলগুলির?

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথে বসেই রাজ্যপালকে ফোন করেন, চিঠি লেখেন কমিশনে। ভোট বাতিলের ডাক দেন। প্রায় দু-ঘণ্টা আটকে থাকার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যের পুলিশ এসে কর্ডন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বের করে নিয়ে যায়। এখন প্রশ্ন উঠেছে এই এত ঘটনায় আসলে মুখ পুড়ল কার? কমিশনের? রাজনৈতিক দলগুলির? নাকি নন্দীগ্রামের আমজনতার?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভুল চালেই কি এত কিছু হল

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভুল চালেই এত কিছু হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলবল পরিবেষ্টিত হয়ে কেনই বা বুথ পরিদর্শনে গেলেন। তিনি বুথ পরিদর্শনে গেলে ঝামেলা হতে পারে, এই খবর নিশ্চয়ই গোয়েন্দা পুলিশের কাছে থাকা উচিত, কেন তিনি গিয়ে উত্তেজনা বাড়ালেন।

গণতন্ত্রের উৎসবে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে রইল নন্দীগ্রামের ভোট

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অন্য একটা অংশ মনে করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথ দখলের খবর শুনে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়েছে, তাঁর দিকে আঙুল তোলা হয়েছে সেটা সমীচিন নয়। জয় শ্রীরাম আওয়াজ তুলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে। যার ফলে গণতন্ত্রের উৎসবে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে রইল নন্দীগ্রামের ভোট।

নন্দীগ্রামবাসীর 'স্বপ্নপূরণ' প্রসঙ্গ তুলে মমতাকে অন্য আসনে মনোনয়ন নিয়ে ব্লকবাস্টার প্রশ্নবাণ মোদীর

More SUVENDU ADHIKARI News