হটস্পট নন্দীগ্রাম
ফের হটস্পট নন্দীগ্রাম। এই নন্দীগ্রাম আর সিঙ্গুর আন্দোলনই ছিল বাম জমানার পতনের কারণ। ১০ বছর পর সেই নন্দীগ্রামেই আবার হয়ে উঠেছে শাসক দলের সঙ্গে বিরোধীদের লড়াইয়ের মূল ভূমি। এবার লড়াই সবুজের সঙ্গে গেরুয়ার। তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ এবার বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রার্থী হয়েছেন এই কেন্দ্রে। অন্যদিকে বিজেপির তরুপের তাস শুভেন্দু অধিকারী। আর বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী মীনাক্ষী। নতুন মুখকে সামনে এনে নতুন লড়াইয়ের নতুন বার্তা দিয়েছেন বামেরা।
বুদ্ধবাবুর অডিও বার্তা
প্রথম দফার ভোট শেষ। এবার দ্বিতীয় দফা। এই দ্বিতীয় দফাই একুশের ভোটের সবচেয়ে বড় হটস্পট। ১০ বছর আগে স্মৃতি ফের ফিরে আসছে বাংলার বুকে। সেকারণেই বোধ হয় এবার ফের ভোটের ময়দানে সামিল হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। যদিও তাঁর লড়াই এবার ভার্চুয়াল। দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে অডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। ব্রিগেডে আসার ইচ্ছে থাকলেও শারিরীক অসুস্থতা এতোটাই যে তাঁকে ব্রিগেডের ময়দানে আনার সাহস দেখাতে পারেনি আলিমুদ্দিন। ঘরে বসেই ব্রিডেগের সাফল্য দেখেছেন আর তার অংশিদার হয়েছেন।
বাংলার মানুষকে ভোটবার্তা
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গর সিদ্ধান্তকে অনেকেই সেসময় মেনে নিতে পারেননি। আবার অনেকেই তাতে সমর্থন জানিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন বাস্তবটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে তখন সেসময় যাঁরা সিঙ্গুর আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী হয়েছিলেনতাঁরা স্বীকার করেছেন ভুল করেছিেলন। মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রকাশ্যে সেকথা স্বীকার করেছেন। সেই শিল্পআর কর্মসংস্থানই এবারের ভোটের মূল ইস্যু হয়ে উঠেছে।তাই বুদ্ধবাবু আবারও ভোট বার্তায় সেই শিল্প আর কর্মসংস্থানের জন্য বাংলার মানুষকে ফের বামেদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন।
যুবদের এগিয়ে আসার বার্তা
একুশের ভোটে বামেদের কান্ডারি এবার যুবরাই। প্রার্থী তালিকায় যুবদের নাম সিংহভাগ। কয়েকটি মাত্র আসনে পুরনোদের দেখা যাচ্ছে। নন্দীগ্রামের মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে মীনাক্ষীকে প্রার্থী করার সাহস দেখিয়েছে আলিমুদ্দিন। ভোটবার্তায় তাই ছাত্র, যুবদের বাংলা গড়ার লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এবার সব ছক ভাঙা নিয়মে এগিয়ে এগিয়ে এসেছে বাম শক্তি। আর সেই শক্তিকে জয়ী করে বাংলার উন্নয়নে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে জয়ী করার বার্তা
একুশের ভোটে হঠাৎ করেই ঢুকে পড়েছে ধর্ম। এতোদিন বাংলা ভোটে যা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিত ছিল। সেই ধর্মই এবার লাইমলাইটে। মতুয়া, আদিবাসী, দলিত, মুসলিম, হিন্দু একের পর এক ভাগের রাজনীতি চলছে। প্রচার মঞ্চে হিন্দুত্বের তাস আম বাত হয়ে গিেয়ছে। কথায় কথায় পািকস্তান প্রসঙ্গ টেনে আনা হচ্ছে। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বিজেপির মোকাবিলা করতে গিয়ে হিন্দুত্বের তাস খেলে ফেলছেন। এই ভয়ঙ্কর একটা বিভাজনের রাজনীতি থেকে বাংলার মানুষকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বুদ্ধবাবু। কমাত্র বাম-কংগ্রেস ধর্ম নিরপেক্ষ জোটই পারে সেই ভেদাভেদের রাজনীতির অবসান ঘটাতে এমনই বার্তা দিয়েছেন তিনি।