পুরনো স্মৃতি উস্কে দিল মহারাষ্ট্রে লকডাউনের সম্ভাবনা, উদ্বেগ বাড়ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের

মহারাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে এগোচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে রাজ্য সরকার গত বছরের মতো হয়ত লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে। রাজ্য সরকারের এই আশঙ্কাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেক পরিযায়ী শ্রমিক। সরকার এখনও লকডাউন নিয়ে কিছুই ঘোষণা করেননি। কিন্তু তাও পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজের নিজের ঘরে ফেরার উদ্যোগ নিচ্ছেন।

পুরনো লকডাউনের স্মৃতি

গত বছর ২৪ মার্চ ২১ দিনের জাতীয় লকডাউন ঘোষণা করার পর রেশন ও অর্থ ছাড়া আটকে পড়া বহু পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের বাড়ি পৌঁছানোর জন্য শত শত কিমি রাস্তা অতিক্রম করেছে। সেই একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্যই শ্রমিকরা আগে থেকে তৎপর হচ্ছেন। ২৩ বছরের শ্রমিক মেহবুব আলি, মুম্বইয়ের জারি মারি এলাকার এক পোশাকের কারখানায় কাজ করেন। তিনি জানিয়েছেন তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে খবরের আপডেট শুনেছেন। মেহবুব বলেন, ‘‌আমরা জানি এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি কিন্তু কেউই গত বছরের মতো ভুক্তভোগী হতে চায় না। আমার যখন কোনও উপার্জন ছিল না সেই সময় ৩ হাজার টাকা ব্যয় করে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

কিছুমাস আগেই ফিরেছেন শহরে

রবিবার সন্ধ্যায় আলি টিকাট কাটার জন্য স্থানীয় অফিসে যায়, যেখানে টিকিট বুকিং অফিসের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা নিয়েছে এবং জানিয়েছে যে ৮ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশ যাওয়ার জন্য ট্রেনে কোনও বার্থ খালি নেই। গত সপ্তাহে আলি তাঁর ২২ বছরের ভাইকে গ্রামে পাঠিয়ে দেন, তাঁর ভাই তাঁর সঙ্গেই কাজ করত। আলি এখানে থেকে যান, তার কারণ লকডাউন ঘোষণার পর তাঁদের দুই ভাইয়ের চাকরি থাকবে না, তাই একটু বেশি অর্থ উপার্জন করতে চাইছেন তিনি। আলি বলেন, ‘‌অনেক টিকিট বুক রয়েছে আমি দেখেছি, আমি অপেক্ষা করে আর ঝুঁকি নিতে চাইছি না।'‌ অগাস্টেই আলি মুম্বইতে ফিরেছেন। তিনি জানান যে মালিক পক্ষের কাছে যেহেতু মালের চাহিদা নেই তাই শেষ ২ মাসে শ্রমিকদের প্রকৃত বেতনের তুলনায় অনেক কম অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

সরকার বন্দোবস্ত করুক বাড়িতে ফেরানোর

ঘাটকোপারের মুন্না গিরি, যিনি একদল পণ্য বহনকারীদের তদারকি করেন, জানান যে গত সপ্তাহে নৈশ কার্ফু জারি হওয়ার পর লকডাউনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‌দোকানগুলি খোলার পর আমরা ৪-৫ মাস আগে ফিরেছি। বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য আমাদের মধ্যে অধিকাংশ টাকা ধার করেছিল এবং আমরা যা আয় করেছিলাম সেটাই খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল সেই সময়। আমরা এখন শুধু এটাই আশা করতে পারি যে লকডাউনের আগে সরকার আমাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কিছু বন্দোবস্ত করুক। আমি যদি ২দিন আগেও লকচডাউনের কথা জানতে পারি, তবে এখানে আটকে থাকার চেয়ে বাড়িতে ফেরার উপায় খুঁজে নেব।'‌

লকডাউন নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিযায়ীরা

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অজীবিকা ব্যুরোর শীর্ষ আধিকারিক দীপক পরাধকর জানান যে তিনি দিনে লকডাউন সম্পর্কে জানার জন্য শ্রমিকদের থেকে কমপক্ষে ১০টি ফোন পান। তিনি বলেন, ‘‌এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি, কিন্তু শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন, কারণ তাঁদের মনে হচ্ছে তাঁরা ফের আটকে পড়তে পারেন। অনেকেই অনুরোধ করেছেন যে লকডাউন ঘোষণার আগে তাঁদের যেন জানানো হয় যাতে তাঁরা সেই অনুযায়ী বন্দোবস্ত করতে পারেন।'‌ তিনি এও জানিয়েছেন যে অনেক শ্রমিকই ট্রেনের টিকিটের জন্য অনুরোধ করেছেন।

মমতা যা বলেন করে দেখান, বহিরাগতদের বাংলা ছাড়া করার লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান অভিষেকের

More CORONAVIRUS News