মঞ্চে চণ্ডীপাঠ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
নন্দীগ্রামের নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় হিন্দু ধর্মগ্রন্থ চণ্ডীপাঠ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টাকে প্রতিহত করার বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যারা হিন্দু-মুসলিম কার্ড খেলছেন, আমি তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই যে আমিও হিন্দু পরিবারের মেয়ে। আমার সাথে হিন্দু কার্ড খেলবেন না।
প্যাটার্ন বদলানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখার সময়ে ধর্মীয় স্তবগুলি আবৃত্তি করছেন। তা শিরোনামে উঠে আসছে। সেইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন্ন নির্বাচনে টিকিট বিতরণ কৌশলও আলোচিত হয়েছে। কারণ এখন পর্যন্ত তৃণমূলই সমস্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা একমাত্র দল। তাতে স্পষ্ট, এবার প্যাটার্ন বদলানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল।
২০২১ সালে কম মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত
তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের তালিকায় মুসলিম প্রার্থী বাদ পড়েছেন। বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিগত বিধানসভা বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় অনেক ভালো ফল করেছিল। তারপরই তৃণমূল ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২১ সালে কম মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এবার ২৯১ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
বিজেপির মেরুকরণ প্রবণতা বিচার করেই সিদ্ধান্ত
তৃণমূল তার পাহাড়ি মিত্রের জন্য তিনটি কেন্দ্র ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৬ ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূল প্রার্থীদের বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায় যে, ২০১৬ সালে ৫৪ জন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল তারা। ২০২১ সালে তারা ৪৫ জন মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির মেরুকরণ প্রবণতা বিচার-বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে বিজেপির উত্থানই কারণেই বদলেছে তৃণমূল!
মুসলিম জনসংখ্যার ভাগের দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ অসমের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এই রাজ্যের জনসংখ্যার সাতাশ শতাংশ মুসলিম ছিল। তবে রাজ্যজুড়ে মুসলিম জনসংখ্যা সমানভাবে ছড়িয়ে নেই। তৃণমূলের মুসলিম প্রার্থী সংখ্যা সবথেকে বেশি হ্রাস পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। এ জন্য ২০১৯ সালে বিজেপির উত্থানই কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কোন কেন্দ্রে কোন ধর্মীয় প্রার্থী দিলে বেশি ফায়দা
সর্বোপরি, টিএমসি এবার ২৭ জন বিধায়ককে টিকিট দেয়নি। তৃণমূল পর্যবেক্ষণ করেছে কোন কেন্দ্রে কোন ধর্মীয় প্রার্থী দিলে বেশি ফায়দা। তবে তৃণমূলের এই অঙ্ক কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। বিজেপির ভোট ২০১৬ সালের ১০.২ শতাংশ থেকে লাফিয়ে বেড়ে ২০১৯ সালে ৪০.৭ শতাংশ হয়েছে। টিএমসির ভোট শতাংশ ৪৪.৯ থেকে কমে ৪৩.৭ শতাংশ হয়েছিল।