ধেয়ে আসছে আম্ফানের মতোই ‘সুপার সাইক্লোন’! সোশ্যাল মিডিয়াকে নস্যাৎ করল হাওয়া অফিস

কালবৈশাখীর মরশুম এলেই সাগরে ঘূর্ণিঝড় বাসা বাঁধতে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড় কোন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে পারে তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় উৎকণ্ঠা। এবার তেমন কোনও পূর্বাভাস মেলেনি হাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে। তবু সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবর। তা নিয়ে এবার স্পষ্ট বিবৃতি দিল আবহাওয়া দফতর।

আম্ফানের মতো সুপার সাইক্লোন! ছড়িয়ে পড়েছিল উৎকণ্ঠা

সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকদিন ধরেই ঘুরোফেরা করছে- আম্ফানের মতো সুপার সাইক্লোন ধেয়ে আসতে পারে বাংলা ও ওড়িশা উপকূলের দিকে। তা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়ে অনেকের মনেই। করোনা ফের প্রবল আকার নিচ্ছে, তারপর ভোটের মরশুম। এই পরিস্থিতিতে কী হাল হবে, তা নিয়ে যখন চর্চা চলছে, তখন আলিপুর আবহাওয়া দফতর পরিষ্কার জানিয়ে দিল আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।

ঘূর্ণিঝড় টাউকটের কোনও অস্তিত্বই নেই এখনও

আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের যে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, তা একেবারেই ঠিক নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরে রটেছিল, ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসতে পারে ঝড়। এমনকী এই ঝড়ের নামকরণও করে দেওয়া হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় টাউকটের কোনও অস্তিত্বই নেই বলে জানালেন আলিপুর আবহাওয়া অধিকর্তা।

১০ দিনের মধ্যে ঘূর্ণাবর্তেরই কোনও সম্ভাবনা নেই

আলিপুরের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা জানিয়েছে, একেবারেই ভুল খবর ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঘূর্ণাবর্তের কোনও সম্ভাবনা নেই। কোনওরকম ঘূর্ণিঝড় থাকলে তা আগেভাগেই জানিয়ে দেওয়া হবে প্রেস রিলিজ দিয়ে। গত বছর মে মাসে বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়েছিল আম্ফান। এবারও মে মাসের আগে ঝড়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ।

এক মাসের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা প্রায় নেই এবার

মার্চ এলেই ঘূর্ণিঝড়ের মরশুম শুরু হয়ে যায়। এবার সেই সম্ভাবনা প্রায় নেই। আবহবিদরা জানিয়েছেন, এক মাসের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সম্ভাবনা নেই এবার। এপ্রিলের মধ্যেও ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। সেই অর্থে ঘূর্ণিঝড়ের মরশুমে সাময়িক নিস্তার মিলবে এবার!

ভারতীয় উপকূলে মার্চ মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা কম থাকে

মার্চে ঘূর্ণিঝড় গঠনের সম্ভাবনা সবচেয়ে কম থাকে। তবে মার্চের শেষ শেষ এপ্রিল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা প্রবল হয়। নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে গত ১০০ বছরে মাত্র তিনটি ঘূর্ণিঝড় ঝড় তৈরি হয়েছে মার্চে। এই ঝড়গুলির মাসের শেষের দিকে গঠন হয়। রেকর্ড অনুসারে, মার্চ মাসে এমন কোনও ঝড় নেই যা আমাদের উপকূলবর্তী অঞ্চলে কোনও ক্ষতি করেছে।

গত দশ বছরে প্রাক-বর্ষা মৌসুমে সর্বাধিক তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে

২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২১ বছরের মধ্যে ভারতীয় উপকূলে প্রাক-বর্ষা মৌসুমে কোনও ঝড় রেকর্ড করা হয়নি মাত্র তিন বছর। বিগত ১১ বছরে ভারতীয় উপকূলের যে কোনও দিকে অন্তত ১টি ঝড় দেখা গেছে। বিগত পাঁচ বছর ধরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে দুটি করে ঘূর্ণিঝড় দেখা গেছে। ২০০৭ এবং ২০১০-এ তিনটি ঝড় রেকর্ড করা হয়। গত দশ বছরে প্রাক-বর্ষা মৌসুমে সর্বাধিক তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। সেগুলি বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সমানভাবে হয়েছে।

২০১৯-এ রেকর্ড সংখ্যক ৯টি ঘূর্ণিঝড়, ২০২০-তে ৫টি

২০১৯ সালে ভারতীয় সমুদ্রে রেকর্ড সংখ্যক ৯টি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে ভারতীয় উপকূলে। গত ৫০ বছরের ইতিহাসে এটাই সর্বাধিক সংখ্যক ঘূর্ণিঝড়। ২০১৯-এ যে ৯টি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল তার নাম ছিল পাবুক, ফনি, বায়ু, হিক্কা, কায়ার, মহা, বুলবুল, পবন এবং টিএস ০৭এ বা জেটিডব্লিউসি। গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে প্রাক-বর্ষায় দুটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে। আম্ফান এবং নিসর্গ প্রাক বর্ষায় হয়েছিল। বর্ষা পরবর্তী সময়ে আরও তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়। মোট পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় দেখা গিয়েছিল গত মরশুমে।

দিদির কথা রাখলেন হেমন্ত, ভোটের আগে বিজেপি বিরোধিতার পারদ চড়িয়ে শাহদের বোঝালেন স্টান্স

বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারের কিছু দৃশ্য

More CYCLONE News