করোনা আবহে এ বছর কুম্ভ মেলা হরিদ্বারে, ভক্তদের কি কি কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে দেখে নিন

দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভ ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে কুম্ভ মেলা চলার সময় যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ না ছড়ায় তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে জোরদারভাবে উল্লেখ করে উচ্চ–পর্যায়ের কেন্দ্রীয় দল তথা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উত্তরাখণ্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল টিম (‌এনসিডিসি)‌–এর নেতৃত্বে গঠিত কেন্দ্রীয় দলের ডিরেক্টর মার্চের ১৬–১৭ তারিখ উত্তরাখণ্ড পরিদর্শনে আসেন। মূলতঃ, হরিদ্বারে চলা কুম্ভ মেলার জন্য রাজ্য কর্তৃক গৃহীত চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে আসেন তিনি।

কুম্ভ মেলা কি

প্রতি ১২ বছর পর চারটে পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হরিদ্বার, নাসিক, এলাহাবাদ (‌এখন প্রয়াগরাজ)‌ ও উজ্জ্বয়িনি এই চারটে জায়গার মধ্যে একটি তীর্থস্থানে কুম্ভ মেলা হয়। যদিও এই বছর ১২ বছরের পরিবর্তে ১১ বছরেই এই কুম্ভ মেলা হচ্ছে। এই কুম্ভের জ্যোতিষ গণনা অনুসারে, ১১ বছরে জুপিটার তার কক্ষে ঘোরা সম্পূর্ণ করে এবং ২০২১ সালে কুম্ভ প্রবেশ করে, ২০২২ সালে সূর্যের মেষ রাশিতে প্রবেশ করার সময়, বৃহস্পতি প্রবেশ করবে মীনে। ২০২১ সালে বৃহস্পতিকে কুম্ভে ও মেষ রাশিতে সূর্য উপলব্ধ হবে। তাই এই ২০২১ সালেই কুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

কুম্ভ মেলা কেন উদযাপন করা হয়

স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবতা ও রাক্ষসগণের পৌরাণিক যুদ্ধের সময় পাত্র থেকে অমৃত চারটে জায়গায় পড়েছিল, প্রয়াগরাজ, উজ্জ্বয়িনি, হরিদ্বার ও নাসিকে। আর এই চার জায়গাতেই কুম্ভ মেলা হয়। হিন্দু ভক্তরা এই কুম্ভ মেলার সময় এখানে ভিড় করে আসেন এবং তাঁদের বিশ্বাস পবিত্র নদীতে স্নান করলে তাঁদের সব পাপ ধুয়ে যাবে।

কুম্ভ মেলার তারিখ ২০২১

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ বছর কুম্ভমেলা সাড়ে তিনমালের বদলে ৪৮ দিন ধরে চলবে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে। ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়েছে কুম্ভ মেলা, তবে প্রথম শাহি স্নান মহা শিবরাত্রির দিন ১১ মার্চ হয়।

শাহি স্নানের আসন্ন তারিখগুলি

১২ এপ্রিল-অমাবস্যা

১৪ এপ্রিল-বৈশাখি

২৭ এপ্রিল-চৈত্র পুর্নিমা

হরিদ্বারে কুম্ভ মেলার শেষ শাহি স্নান এই মেলার সমাপ্তি হিসাবে ধরা হবে।

কুম্ভ মেলায় তীর্থযাত্রীদের জন্য নির্দেশিকা

ভক্ত ও দর্শনার্থী যাঁরা কুম্ভ মেলায় আসবেন তাঁদের কোভিড-১৯ আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট বহন করতে হবে। মেলায় আসার ৭২ ঘণ্টা আগের রিপোর্ট হতে হবে সেটি।

ভক্ত এবং পর্যটকদের নিকটতম কমিউনিটি হেলথ সেন্টার জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাঁদের রাজ্যের একটি বাধ্যতামূলক মেডিক্যাল শংসাপত্রও পেতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কুম্ভ মেলা ওয়েব পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করার পর ভক্তদের এসওপি অনুযায়ী মেডিক্যাল ফিটনেস শংসাপত্র ও ই-পাস বা ই-পারমিটের প্রয়োজন হবে।

ভক্তদের টেস্ট রিপোর্ট, ফিটনেস শংসাপত্র ও ই-পাস মোবাইলে করে বহন বা হার্ড কপি সঙ্গে রাখলেও হবে, যাতে যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজন পড়লে তা দেখানো যেতে পারে।

গোটা রাজ্য সরকারকে এসওপিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে যাতে ভক্তদের মধ্যে এটি নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি না ঘটে।

ফেস মাস্ক বা ফেস কভার করে রাখা বাধ্যতামূলক

উত্তরাখণ্ড সরকারের ওয়েবসাইটে নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক

যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি, বা প্রবীণ নাগরিক, গর্ভবতী মহিলা, ১০ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ এবং ক্যান্সারের মতো রোগ রয়েছে তাদের কুম্ভ মেলা এড়িয়ে যাওআ উচিত।

প্রত্যেক ভক্ত ও দর্শনার্থী একে-অপরের থেকে সবসময় ৬ ফিটের দুরত্ব বজায় রাখবেন।

ঘন ঘন হাত ধুতে হবে সাবান দিয়ে, যাতে হাত নোংরা না থাকে। অ্যালকোহল রয়েছে এমন স্যানিটাইজার মেলায় উপলব্ধ।

যেখানে সেখানে থুতু ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

প্রত্যেককে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে

এসওপি লঙ্ঘনকারিকে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে

টেররিজম না থাকলেও টেরর আছে! কেন বিজেপিকে পছন্দ জানালেন, রাসবিহারীর প্রার্থী সুব্রত সাহা

More UTTARAKHAND News