হিরেন খুনে ষড়যন্ত্রকারী বেজ
যদিও এর পেছনে বেজের উদ্দেশ্য কি ছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট করেননি এটিএস প্রধান। তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানান এবং তার সঙ্গে এও জানিয়েছেন যে মনসুখ হিরেনের খুনে বেজ যুক্ত রয়েছে তার কোনও প্রমাণ নেই। মহারাষ্ট্রের এটিএএস প্রধান জানিয়েছেন যে এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হাই-এনড ভলভো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দমন থেকে এবং তা মুম্বইয়ের ফরেন্সিক টিম খতিয়ে দেখছে। সোমবারই মহারাষ্ট্রের রেজিস্ট্রেশন ভলভো গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এটিএস স্কোয়াডের তদন্তে উঠে এসেছে যে মনসুখ হিরেন খুনের সময় বেজ উপস্থিত না থাকলেও তার নির্দেশেই এই খুনটি হয়েছে। তদন্তকারি দল এর আগই দাবি করেছিলেন এ তারা ধৃত সচিন বেজকে জেরা না করেই এই খুনের ঘটনার মীমাংসা করবে।
ভুয়ো আধার কার্ড ব্যবহার করত সচিন বেজ
এদিন আরও এক তথ্য সামনে এসেছে। তা হল সচিন বেজ ভুয়ো আধার কার্ড ব্যবহার করতেন। মনসুখ হিরেনের স্করপিও গাড়ি চুরি হোয়ার দিন সচিন বেজ ওই আধার কার্ড দিয়ে মুম্বইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে ছিলেন। ভুয়ো ওই আধার কার্ডে সচিন বেজ নিজেকে সুশান্ত সদাশিব খেমকার বলে পরিচিতি দিয়েছেন। তিনি নিজের জন্ম তারিখ দিয়েছেন ১৯৭২ সালের ১৫ জুন। অথচ তার প্রকৃত জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। তবে তিনি ভুয়ো পরিচয়পত্রে নিজের আসল ছবি ব্যবহার করেছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বেজ মুম্বইয়ের একটি হোটেলে ওঠে, ওইদিনই চুরি হয় মনসুখ হিরেনের স্করপিও গাড়িটি, পরে যা মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয়। এটা সন্দেহ করা হচ্ছে যে স্করপিও গাড়িটি সচিন বেজের কাছেই ছিল এবং বেজই গাড়িটি আম্বানির বাড়ির সামনে রেখে দেয়, যা হোটেল থেকে কিছু কিলোমিটার দূরে।
ধৃত আরও দু’জন
সচিন বেজ ছাড়াও এটিএস এই খুনের ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এটিএস গুজরাতের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, যে ধৃত ব্যক্তিদের সিম কার্ড দেয়। গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের এটিএস সাসপেন্ড পুলিশ বিনায়ক সিন্ডে ও এক ক্রিকেট বুকি নরেশ গৌরকে এই মামলায় জড়িত থাকায় গ্রেফতার করে।
হিরেন খুনের তদন্তে এনআইএ
আম্বানি বোমাতঙ্ক কাণ্ডের তদন্ত করছে এনআইএ এবং তারা সচিন বেজকে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য গ্রেফতার করেছে। তদন্ত চলাকালীন বাজেয়াপ্ত হয়েছে পাঁচটি গাড়ি, যার মধ্যে ২টি মার্সিডিজ, ১টি প্রাডো, স্করপিও গাড়ি, যার মধ্যে বিস্ফোরক ছিল এবং একটি ইনোভা গাড়ি। এনআইএ মনে করছে যে বাজেয়াপ্ত হওয়া গাড়িগুলির মধ্যে কমপক্ষে তিনটে গাড়ি ব্যবহার করত বেজ। সচিন বেজ সিআইইউয়ের নেতৃত্বে ছিল, গত ১৩ মার্চ গ্রেফতার করা হয় তাকে। সে আগেও পুলিশ থেকে বহিষ্কৃত ছিল বহুদিন। সোমবার সকালে এটিএস ধৃত শিন্ডেকে নিয়ে বেজের থানের বাড়িতে যায় এবং পরে মুম্বারার খাঁড়িতে, যেখান থেকে হিরেনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। যদিও মনসুখ হিরেনের খুনের ঘটনার তদন্তের ভার ২০ মার্চ এনআইএর হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাও এটিএস এই ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আম্বানি বোমাতঙ্ক কাণ্ড
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে থেকে ২০টি জিলেটি স্টিক ভর্তি স্রপিও গাড়ি উদ্ধার হয়। গাড়ির মধ্যে থেকে আম্বাই পরিবারকে লেখা হুমকি চিঠিও পাওয়া যায়। এরপরই এই ঘটনায় প্রতিদিনই নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।