বাঁকুড়া: জঙ্গলমহল এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি-র পাখির চোখ। রবিবার বাঁকুড়ায় জনসভা করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । আর সোমবার সেই বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুরে সভা করে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-র নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়াকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবে। এবার রাজ্যের ভোটের আগে আবার বলছে চাল-ডাল দেবে। ওরা মিথ্যে কথা বলে, বিজেপিকে ভোট দেবেন না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সভা থেকে বলেন, “মা বোনেরা মনে রাখবেন, এটা বাংলার নির্বাচন। দিল্লির নয়। যারা গতবার বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের বলছি, বিজেপি বলেছিল অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেবে। দেয়নি। ইলেকশনের আগে মিথ্যে কথা বলে। বলে চাল দেব, ডাল দেব। ইলেকশন হয়ে গেলে পালায়। ডুগডুগি বাজিয়ে দেয়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, রবিবার বিজেপি প্রকাশিত ইস্তেহারে বলা হয়েছে, বাংলায় ক্ষমতায় এলে রেশনে ১ টাকা কেজিতে দেওয়া হবে চাল-গম। অন্নপূর্ণা ক্যান্টিনে ৫ টাকা করে পাওয়া যাবে তিনবেলা খাবার। কেজি থেকে পিজি পর্যন্ত বিনামূল্যে নারী শিক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে বিজেপি-ইস্তাহারে।
রবিবার বিজেপি প্রকাশিত ইস্তেহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে,রাজ্য সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ১৮ বছর হলেই মেয়েরা পাবেন এককালীন ২ লাখ টাকা।কিন্ডারগার্টেন থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারবে রাজ্যের মেয়েরা।গণপরিবহণে বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারবেন মহিলারা। বিধবাভাতা থেকে প্রসূতিদের অনুদানের ক্ষেত্রেও একাধিক ঘোষণা রয়েছে ইস্তাহারে।ভোটের মুখে গরিব মানুষের মুখে ভাত তুলে দিতে ৫ টাকায় মধ্যাহ্নভোজের মা ক্যান্টিন চালু করেছে মমতার সরকার। এবার তার পাল্টা দিতে ইস্তেহারে অন্নপূর্ণা ক্যান্টিনের ঘোষণা করেছে বিজেপি।সেখানে তিন বেলায় ৫ টাকায় মিলবে খাবার।
রাজ্যে ফের ক্ষমতায় এলে বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। পাল্টা রেশনে চাল-গমের দাম কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইস্তেহারে। বলা হয়েছে,বিজেপি ক্ষমতায় এলে রেশনে ১ টাকা মিলবে এক কেজি চাল বা গম। ৩০ টাকা কেজি ডাল,৩ টাকা কেজি নুন এবং ৫ টাকায় মিলবে এক কেজি চিনি।
এছাড়াও ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রের পর রাজ্যেও সপ্তম পে কমিশন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।গতকালই কাঁথি উত্তরের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ত্রিপুরাতেও একই কথা বলেছিল, দেখেছেন তো ওখানে কী হয়েছে।
বিজেপির ইস্তেহারকে মিথ্যের ফুলঝুরি বলে দাবি করে মমতা তৃণমূলের ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “তৃণমূলকে ভোট দিলে বিনামূল্যে দুয়ারে রেশন পাবেন। বাড়ির মেয়েরা মাসে ৫০০ টাকা করে হাতখরচ পাবেন।এখন ৭ দিনে কাস্ট সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, “রান্নার গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে ৯০০ করেছে বিজেপি। বিনামূল্যের চাল, রাঁধতে লাগছে ৮০০ টাকার গ্যাস। আবার বড় বড় কথা। ভোটার আগে শুধু গ্যাস দিতে আসে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, “বিনা পয়সায় গ্যাস দিতে হবে।”
তিনি বলেছেন, “সব বিক্রি করে দিচ্ছে বিজেপি। এরপর ব্যাঙ্কের জমা টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে না।”
তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, “ভাড়া করে বাংলা শিখে বাইরে থেকে এসে ভোট দিতে বলছে। ভেবেছিল পা ভেঙে আমায় আটকে দেবে। “আমি ভাঙি তবু মচকাই না।‘বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বুঝিয়ে দেন, বিনা যুদ্ধে তিনি জমি ছাড়বেন না। আর তাই সভা শেষে বললেন, “কি খেলা হবে তো? যেটা হবে তো? “
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.