শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত: ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের সুরক্ষা ও সহযোগিতা নিয়ে প্রচুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিজেপির ইস্তাহারে মহিলাদের জন্য ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে এবার মহিলাদের ঢালাও সুবিধা পাওয়া যাবে। কেননা রাজ্যে বিজ্রেপি ক্ষমতায় এলে ৩৩% সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকছে, ইটা বিজেপি-র ইস্তাহারে ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়েদের স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনা পয়সায় দেওয়ার কোথাও বলা হয়েছে বিজেপি-র ইস্তাহারে। এছাড়া রাজ্য পুলিশ ৯ এবং রিজার্ভ ফোর্সে ৩ মহিলা ব্যাটালিয়ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বিজেপি মহিলাদের প্রতি খুবই সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেছে তাদের ইস্তাহারে। তবে এরই মধ্যে স্মৃতি ইরানি সোমবার রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেছেন, “দিদি, আপনি বলছেন খেলা হবে। বাড়ির মেয়েরা কখনও বাইরের মানুষের সঙ্গে খেলে?” বিজেপি-র ইস্তাহারে যে ভাবে মেয়েদের সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে সেই মেয়েরা কিন্তু গৃহবন্দী থাকার মেয়ে নয়। তাই স্মৃতি ইরানির এই বক্তব্যের মেয়ে আর বিজেপি-র ইস্তাহারের মেয়ের মধ্যে ফারাক থেকেই যাচ্ছে।
তবে তৃণমূল তাদের ইস্তাহারে বাড়ির মহিলাদের কথা ভেবে তাদের জন্য হাত খরচের ব্যবস্থা করেছে। ইস্তাহারে তৃণমূলের মেয়েদের জন্য প্রতিশ্রুতি ভোটে জিতে রাজ্যে আবার তৃণমূল সরকার তৈরি হলে ন্যূনতম আয় খাতে মাসে ৫০০ টাকা করে পরিবার পিছু কর্ত্রীকে দেওয়া হবে। এই ৫০০ টাকায় হাজার টাকা করে দেওয়া হবে এসসি/এসটি মহিলাদের। তাছাড়া পড়ুয়া মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী, উচ্চ শিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড, বিয়ের জন্য রূপশ্রী, স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের জন্য প্রতি বছর সাইকেল দেওয়া তো আছেই। এছাড়া স্বনিযুক্তি প্রকল্পের মেয়েদের জন্য একগুচ্ছ সুবিধার কথাও ইস্তাহারে বলা আছে।
তুলনায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস তাদের ইস্তাহারে মহিলাদের জন্য কিছুটা প্রথাগতভাবে সুরক্ষার কথা ঘোষণা করেছে। বামফ্রন্ট তাদের ইস্তাহারে বলেছে,নারী নির্যাতন ও গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধে শহরের ক্ষেত্রে পুরসভার ওয়ার্ডে এবং গ্রামের ক্ষেত্রে ব্লকে বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র করা হবে। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গ এবং অন্যান্য যৌন পরিচয়ের মানুষ অর্থাৎ এলজিবিটি- যারা তাদের জন্য অধিকার রক্ষার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা হবে।
এবার মহিলা ভোটারদের প্রতি রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির বিশেষ নজর দেওয়ার কারণ, মহিলা ভোটারের সংখ্যা। রাজ্যে ১৫ জানুয়ারী ২০২১-এ নির্বাচন কমিশন যে সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৮০ জন। এর মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৪ জন। এই সংখ্যাটা প্রায় মোট ভোটারের অর্ধেক। তাই এই মহিলা ভোটারের থেকে ২৫ থেকে ৩০% যদি কোনও রাজনৈতিক দল নিজেদের দিকে টেনে নিতে পারে তাহলেই রাজ্যের ভোটের ফলটা বদলে দেওয়া যাবে। তাই রাজনৈতিক দলগুলি মহিলাদের প্রতি এতো সহৃদয় হয়ে তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছে।
এ ছাড়াও মহিলারা বাড়ির অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন। মহিলাদের মানসিকতাও পুরুষের তুলনায় অনেকটাই নমনীয়। তাই তাদের কাছে পৌঁছনো অনেক সহজ। মহিলারা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ । সেই দিকে নজর দিয়েই যে ইস্তাহারে মহিলাদের জন্য ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেটা সহজেই অনুমেয়।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.