সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : প্রচারে ঝড় তুলেছে জাভেদ খান। এ কথা বললে একটুও অত্যুক্তি হবে না। কখনও চিনা ভাষায় দেওয়াল লিখছেন। প্রতিবাদ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে আঘাত লাগার ঘটনার। কখনও প্রচারে আসছেন গরুর গাড়ি চড়ে। প্রতিবাদ পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। এবারে তিনি নিয়ে এলেন নয়া প্রচার ভঙ্গি। মাস্কহীন জনতাকে মাস্ক পরিয়ে দিলেন , প্রচার গাড়িতেও থাকল বিশাল মাস্ক এবং জন সংযোগ সেরে ছোট করে বড় কথাটিও বলে এলেন। ভোটটা যেন দেওয়া হয় তাঁকেই।
জাভেদ খান বলেন , ‘সময়ের নিরিখে আমার প্রচার খুবই প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি। কারণ, মানুষ মাস্ক পড়া ভুলেছে।’ ভোট পুজোয় রোজ রোজ মিটিং মিছিলে মানুষ দলে দলে যোগ দিচ্ছেন মাস্ক ছাড়াই। ভাবখানা যেন এমন, ‘করোনা? ও সব চলে গেছে। এখন ভোট’। যারা ভোট রঙ্গের বাইরে আছেন তাঁরা চৈত্র সেলে আছেন, কিন্তু বিচিত্র ভাবে। মুখে নেই মাস্ক। মহানন্দে সবাই মাস্ক বিহীন মুখে ভিড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করোনা বাড়ছে বলে সাবধানী চেঁচিয়ে খালাস। এর জন্যই মাঠে নেমেছেন কসবার তৃণমূল প্রার্থী। বিভেদ ভুলে জাভেদ এই প্রচার নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে সবাইকে ডেকে ডেকে মাস্ক পড়ালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে করোনার আক্রান্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৮৭১ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬০৫এ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ১৭২ জন। একদিনে কোভিড মুক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৭১ জন। এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৬৪ জন। পশ্চিমবঙ্গে বুধবার ৩০৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত দেড় মাসে যা সর্বোচ্চ ছিল। কেস পজিটিভি হওয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এ রাজ্যে। সংক্রমণের হার ১.৬৯ শতাংশ। টানা ৩ দিন যা দেড় শতাংশের বেশি রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ জন। রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে একজনের। মহারাষ্ট্রে বুধবার ২৩ হাজার ১৭৯ মানুষের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছিল।
পাঞ্জাবে ফের বন্ধ হয়েছে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে শপিংমল সিনেমাহল গুলিতেও। সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গার্হস্থ্য অনুষ্ঠানেও ১০ থেকে ২০ জনের বেশি মানুষের প্রবেশ করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত ১১ জেলায় রবিবার থেকে শপিং মল বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে পাঞ্জাব সরকারের তরফে। বিবাহ ও শেষকৃত্য বাদ দিয়ে করা যাবে না কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান। তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বিবাহ ও শেষকৃত্যের ক্ষেত্রে ২০ জনের বেশি মানুষের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শব-এ-বারাত, গুড ফ্রাইডে, হোলি, নবরাত্রি, আম্বেদকর জয়ন্তি, হনুমান জয়ন্তি সহ একাধিক পর্বে যাতে ভিড় না হয়, তার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করার পরিকল্পনা রয়েছে একাধিক রাজ্যের। শারীরিক দূরত্ব, মাস্ক পরার মতো নিয়মাবলির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।