মালদহ: বিষ্ফোরক অভিযোগ সাংসদের বিরুদ্ধে। টাকার বিনিময়ে প্রার্থী দেওয়ার অভিযোগ তুললো বিজেপির খোদ দলেরই নেতারা। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় প্রার্থী পদে মনোনীত হয়েছেন মতিউর রহমান।
প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালালো দলেরই কর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায়। ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদা থেকে পুরো রাজ্যে।
বিধানসভা নির্বাচনের আর দিন কয়েক বাকি। এরমধ্যে প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর থেকে ভোট বয়কটের ডাক দিল হরিশ্চন্দ্রপুরের বিজেপি কর্মী নেতারা। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় মোট ২১জন প্রার্থী পদের দাবিদার ছিলেন। তারমধ্যে ১৯ জন হিন্দু আর দুজন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
সূত্রের খবর মতিউর রহমান মাস ছয়েক আগেই বিজেপিতে যোগদান করেছেন। মাত্র ছয় মাস আগে দলে এসে কীভাবে কেউ টিকিট পেতে পারে? ক্ষোভ দলীয় কর্মীদের। এছাড়াও কর্মীদের একাংশের দাবি রীতিমতো টাকা নিয়ে এই টিকিট দেওয়া হয়েছে মতিউর রহমানকে এবং তা ছোটো অংকের টাকা নয়,একটা মোটা অংকের টাকার খেলা রয়েছে বলে অভিযোগ কর্মীদের।
ক্ষোভে হরিশ্চন্দ্রপুর বিজেপি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে ভোট বয়কট করার হুমকি দেয় তারা। প্রার্থী পরিবর্তন না করা হলে নির্দলে ভোট দেবেন তারা, প্রয়োজনে অন্য কোনও দলকেও ভোট দিতে পেছপা হবেন না বলে জানাচ্ছেন।
এইদিন উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মুকে সরাসরি আক্রমন করেন মালদা বিজেপি মন্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। তাদের বক্তব্য খগেন মুর্মু সরাসরি জড়িত এই ঘটনায়। এছাড়াও রয়েছে এলাকার সাংসদ সহ অন্যান উঁচুতলার কর্মীরা। যারা এতদিন কষ্ট করে দলকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে প্রার্থী পদের দাবিদার তারাই। কেউ দুদিন দলে এসে টিকিট পেয়ে যাবে এটা তারা মানবেন না। এমনকি তারা এটাও বলে মতিউর রহমান আগে ক্রিমিনাল ছিল। এরকম মানুষকে কখনোই তারা ভোট দেবেনা। মতিউর রহমানকে কোনো ভাবেই প্রার্থী হিসেবে মান্যতা দেবেনা মানুষ। দরকারে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন সবাই, এমনটাই হুমকি হরিশ্চন্দ্রপুরের বিজেপি কর্মীদের যদিও জেলা সভাপতি জানিয়েছেন এই বিষয়টি নিয়ে তিনি সেন্ট্রাল কমিটির সাথে কথা বলবেন।
মালদা জেলা মন্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়ালের অভিযোগ, “মতিউর রহমান যে নাকি আগে একটা ক্রিমিনাল ছিল। সাতটা আটটা বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু ভারতীয় জনতা পার্টির দালাল উচ্চস্তরের নেতারা টাকা খেয়ে তাকে টিকিট দিয়েছে। আমরা নীচুস্তরের কর্মীরা তাকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। আমরা ভোট বয়কট করলাম। প্রয়োজনে কোনও নির্দল প্রার্থীকে ভোট দেব তবু ভারতীয় জনতা পার্টিকে ভোট দেবনা। দরকারে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবো। প্রয়োজনে অন্য কোনও দলকে ভোট দেব। সবাই একটা আশানুরূপ প্রার্থী আশা করেছিল। দরকারে হেস্টিংসে যাবো। আমাদের উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু টাকা খেয়েছে। টিকিট বাতিল করলেই সবকিছু বেরিয়ে যাবে।”
বিজেপির জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, “আমরা যারা দলকে এতদিন ধরে দাঁড় করিয়েছি তাদের বাদ দিয়ে নতুন একজনকে টিকিট দিয়ে দেওয়া হল। আমাদের হরিশ্চন্দ্রপুরে ২১ জন প্রার্থী পদের দাবিদার ছিল।  যার মধ্যে ১৯ জন হিন্দু ও দুইজন মুসলিম ছিল। আমরা বলেছিলাম আমাদের হিন্দুর মধ্যে লোকাল কোনো ব্যক্তি টিকিট পেলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। যে ব্যক্তি এখানে থাকে না, সাতজন সিকিউরিটি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় সে টাকা ছাড়া কীভাবে টিকিট পায়? খগেন মুর্মু টাকা খেয়েছে, কোটি টাকার খেলা। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার কর্মীরা, সাংসদ সবাই এতে জড়িত আছে। আগামী দিনে আমরা ভোট বয়কট করব। হিন্দু প্রার্থী না থাকলে আমরা নোটাতে ভোট দেব।”
বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডলের বক্তব্য “কারা করছে কেন করছে সেটা তো দেখতে হবে। অর্থের বিনিময়ে ক্যান্ডিডেট করা এই শব্দটাই ভুল। প্রার্থী নির্বাচন করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটি। যেখানে অমিত শাহ্, জে পি নাড্ডা আরও অন্যান্য রয়েছেন। সেক্ষেত্রে জেলা সভাপতি ও সাংসদের বিরুদ্ধে এইসব কথা বলা ভিত্তিহীন।”দলীয় কর্মীদের ভোট বয়কট করার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “এইমুহুর্তে আমার কাছে সেরকম কিছু আসেনি। যদি সেরকম কিছু হয়ে থাকে তারা আমাদের জেলা পার্টি অফিসে আসুক। আমরা সেন্ট্রালে পাঠাবো। মতিউর রহমান মাস ছয়েক আগে এখানে এসেছেন। আমাদের কথা ছিল যেহেতু এটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এলাকা তাই আমাদের ভাবনা ছিল প্রার্থী হিসেবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকে দাঁড় করানো হবে।”
এই নিয়ে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার বলেন,” বাংলার মানুষ মমতা ব্যানার্জির পাশে আছে। বিজেপির নিজেদের মধ্যেই ঠিক নেই। সব জায়গায় এমনি হচ্ছে। মানুষ সব দেখছে। তাই ক্ষমতায় তৃণমূলই আসবে।”
এদিকে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। ২ দিন আগেে বিজেপির রাজ্য কার্যালয়ের সামনে দেখা গিয়েছিল কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ।যা নিয়ে দলের মধ্যে যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়ছে।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

করোনা পরিস্থিতির জন্য থিয়েটার জগতের অবস্থা কঠিন। আগামীর জন্য পরিকল্পনাটাই বা কী? জানাবেন মাসুম রেজা ও তূর্ণা দাশ।