তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া : বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী না করায় ‘বিদ্রোহী’ ‘বিদায়ী’ বিধায়ক শম্পা দরিপা। আর এই প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নিল শাসক দল। দলের জেলা মুখপাত্র দিলীপ আগরওয়ালের নিশানায় শম্পা দরিপা।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালের তৃণমূল নেত্রী ও বাঁকুড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শম্পা দরিপা বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। একই সঙ্গে ওই বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী হিসেবে বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দিতা করেন ও জয়ী হন তিনি। যদিও পরে তথাকথিত ‘উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে’ শামিল হতে ফের পুরোনো দলেই ফিরে যান। কিন্তু এবার আর তাঁকে ভরসা করতে পারেনি তৃণমূল। ‘দলবদলু’ হিসেবে পরিচিত শম্পা দরিপাকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী না করে চিত্রাভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। আর তারপর থেকেই ‘বিস্ফোরক’ ‘বিদায়ী’ বিধায়ক শম্পা দরিপা।
আর এই অবস্থায় দলের অবস্থান স্পষ্ট ও শম্পা দরিপাকে এক হাত নিলেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দিলীপ আগরওয়াল। তিনি বলেন, উনি এখন দলবিরোধী কথা বলছেন। বাঁকুড়ার ‘পালস্ নাকি উনি ভালো বোঝেন’। তা যদি বোঝেন তাহলে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে জিতে আসার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। একজন সাধারণ গৃহবধূকে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড় করানো হয়েছিল বলে মানুষ চেনে, জানে। দলীয় প্রার্থী সায়ন্তিকাকে জেতাতে তৃণমূল কর্মীরা বদ্ধপরিকর। সবে ‘ট্রেলার’ শুরু। পুরো ছবিটা এখনো বাকি বলে তিনি দাবি করেন।
বিনাযুদ্ধে এক ছুঁচও মাটি ছাড়তে রাজী নন ‘বিদায়ী’ বিধায়ক শম্পা দরিপাও। একদিকে কংগ্রেসের প্রতি কৃতজ্ঞতা অন্যদিকে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করা, বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে তৃণমূলকে হারানোর চেষ্টার অভিযোগের পাশাপাশি দলের ‘বাংলার মেয়েকেই চাই’ স্লোগান নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
একই সঙ্গে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র শম্পা দরিপা কে এই প্রশ্নেরও যোগ্য জবাব দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমার দাদু রেভারেণ্ড সি.সি পাণ্ডে। বাবা প্রবীর কুমার পাণ্ডে ভিয়েতনাম যুদ্ধে রেডক্রসের প্রতিনিধি হিসেবে গিয়েছিলেন। আমি সেই পরিবারের মেয়ে। তাই শম্পা দরিপা কে সেনিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে গৌরবময় পুরাণো ইতিহাস জানা উচিৎ বলে তিনি দাবি করেন।
পুরো বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের নেতা ও বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নীলাদ্রি দানা বলেন, তৃণমূল কোন রাজনৈতিক দল নয়, একটা এন.জি.ও। ঐ দলে একটাই পোষ্ট, বাকি সব ল্যাম্প পোষ্ট। তাই আদি তৃণমূলীরা এখন সবাই বিজেপিতে। তৃণমূলের ব্যাপারে তারা উৎসাহিত নন। মাঠে খেলা হবে ও জনগণ তাঁদের সঙ্গেই আছেন বলে তিনি দাবি করেন।
এখন বিদায়ী ও বিদ্রোহী বিধায়ক শম্পা দরিপার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি? যা অবস্থা তাতে কংগ্রেসের দরজার তাঁর কাছে বন্ধ। তাহলে কি তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে নির্দল প্রার্থী হিসেবেই প্রতিদ্বন্দিতা করবেন? উত্তর নেই কারো কাছে। উত্তর দেবে সময়। এখন তারই অপেক্ষা…
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.