কলকাতা ২৪x৭: তখন গুরুং-মমতার তুমুল বৈরি সম্পর্ক।দার্জিলিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই মোর্চা নেতার নিজস্ব বাহিনির বিরুদ্ধে ‘হামলা’ চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। তীব্র উত্তেজনা চলছিল শৈলশহর জুড়ে। গুরুং বাহিনির হাতে খুন হন পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিক। ২০১৭ সালের রক্তাক্ত গোর্খাল্যান্ড দাবি ভিত্তিক আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি দেখেছিলেন রাজ্যবাসী।
আশির দশকে সুবাস ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে গোর্খাল্যাল্ড আন্দোলনে দার্জিলিংয়ে হাজারের বেশি রাজনৈতিক খুন হয়েছিল। আড়ে বহরে ততটা রক্তাক্ত না হলেও আগ্রাসী গুরুংয়ের রূপ দেখা গিয়েছে বারবার।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (গোজমুমো) নেতা বিমল গুরুং কে ধরতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। কখনও সিকিম তো কখনও নেপালে ঢুকে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। বারে বারে অভিযোগ উঠেছিল, গুরুংয়ের এই আত্মগোপন পর্বে বিজেপির মদত রয়েছে। অবশ্য তখন গুরুং ও বিজেপি সখ্যতা বজায় ছিল।এখন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট। এই গোর্খা নেতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে গুরুংকে ঘিরে থাকা তার নিজস্ব বাহিনি জিএলপি (গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল) ভূমিকা বিতর্কিত। পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিকের খুনে অভিযুক্তরা সবাই জিএলপি সদস্য, একথা পরে প্রকাশ্যে আসে। সরকারি খাতায় ‘নিখোঁজ’ বিমল গুরুং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মহা সাড়ম্বরে দার্জিলিংয়ে এসে বিরাট জনসমাবেশ থেকে বিজেপির প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন।
দার্জিলিংয়ের চকবাজারে সেই জনসমাবেশে সাদা পোশাকের গুরুং বাহিনি (জিএলপি) উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। সমাবেশ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন জানান মোর্চা নেতা। তখন থেকেই প্রশ্ন, নির্বাচনে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পার্বত্য এলাকায় ‘ভোট করাবে’ জিএলপি।
গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন ও মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠীর বিজেপির প্রতি ঝুঁকে থাকা মনোভাবে দার্জিলিংয়ে রাজনৈতিক গরম হাওয়া বইছে। একসময় মুখ্যমন্ত্রীর কাছের লোক তামাং এখন অন্য শিবিরে। তিনিও ‘ভোট করাতে’ প্রস্তুত। তবে ধারেভারে গুরুংয়ের জিএলপি অনেক এগিয়ে।
২০১৭ সালে ‘পলাতক’ গুরুংয়ের বিশেষ বাহিনি জিএলপি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে। ভয়ঙ্কর নাগা জঙ্গিদের সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল (জিএলপি) সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করে গোয়েন্দা বিভাগ৷ সূত্রের খবর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বাছাই করা সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে নাগা জঙ্গি সংগঠন৷ সেক্ষেত্রে সন্দেহটা যায় এনএসসিএন (খাপলাং) সংগঠনের দিকেই৷ এই সংগঠনটি পৃথক নাগালিম (‘স্বাধীন নাগা ভূমি’ ) গঠনের লক্ষ্যে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র পথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর পূর্ব ভারতের অত্যন্ত আগ্রাসী এনএসসিএন(কে)। মায়ানমার ও ভারতের সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনির উপর বারবার হামলায় অভিযুক্ত।
বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে, দার্জিলিঙে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে জিএলপি বাহিনিকে ব্যবহার করবে গুরুং। আশির দশকে সুবাস ঘিসিং নেতৃত্বে চলা একই আন্দোলনে রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরির দায় যেমন গিয়েছিল সশস্ত্র জিএসএলএফ ক্যাডারদের উপর।
গুরুং নির্দেশে চলা জিএলপির নজর পাহাড়ি এলাকায় নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে ভোট করানো। নির্বাচন হবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীর নজরদারিতে। অভিযোগ, পাহাড়ি বাঁকের আনাচে কানাচে থাকবে জিএলপির সশস্ত্র উপস্থিতি।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.