সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : খেলা হবে। ইউটিউবে ভাইরাল বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ শামীম ওসমানের বক্তব্য কখন যে এপার বাংলার ভোটের অঙ্গ হয়ে পড়েছে বোঝা যায়নি। প্রথমে এই গান শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের থেকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পের গুণগান করা কথার সঙ্গে ডিজে মিশিয়ে সে এক চটকদার গান…ইউটিউবে এবং লোকমুখে যা ভাইরাল।
সেটাই হয়ে যায় তৃণমূলের এবারের ভোটের অন্যতম ক্যাচলাইন। বিরোধী অনেক নেতা এটাকে ধরেই নানা মন্তব্য করেছেন। এবার সেটিকে ধরেই গান ধরেছেন বিজেপিও। ডিজে গান থেকে সরে এসে বাংলার মাটির গান বাউল সংগীতকে সঙ্গী করে বানানো হয়েছে বিজেপির খেলা হবে ভার্সন। গান গেয়েছেন গৌতম দাস বাউল। গান লিখেছেন প্রণয় দত্ত।
প্রসঙ্গত, প্রথম ভাগের একটি অংশও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। সেখানেও ছিল সেই খেলা হবে লাইনটি। বিদ্যাসাগর মহাশয় লিখেছিলেন , ‘বেলা যায়, তেল মেখে জলে ডুব দিয়ে আসি। তারপর খেলা হবে। একা একা খেলা যায় না। ওই বাড়ি থেকে কয়জন এলে বেশ হয়’। তিনি যদি জানতেন খেলা হবে রাজনীতির স্লোগানের অঙ্গ হবে…কে জানে কি করতেন।
বছর পাঁচেক আগে বাংলাদেশের সাংসদ শামিম ওসমান বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘২৪ তারিখের পর খেলা হবে।’ তবে স্লোগান যারই হোক না কেন, কোনও দলই তার ‘মহিমা’ অস্বীকার করতে পারছে না। তারপরে ২০২১ থেকে বাংলায় খেলা হচ্ছে নানাভাবে। সমস্ত রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে তা উঠে এসেছে টি-শার্ট হয়ে মিষ্টিতেও। সবই বাংলার ভোটরঙ্গকে ধরার চেষ্টা।
দেড় বছর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় ‘আর না, আর না’ স্লোগানটি কার, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। সামনেই বিধানসভা ভোট। তার আগে ‘খেলা হবে’ স্লোগানটির কপিরাইট ঘিরে ফের দড়ি টানাটানির খেলা চলছে। ঘটনা হল, রাম-বাম, গেরুয়া-সবুজ- রাজ্যের প্রথম সারির অনেক নেতা-নেত্রীর মুখেই উঠে আসছে এই স্লোগান। সবার মুখেই একটাই কথা, ‘খেলা হবে খেলা হবে।’
গ্রাম বাংলার ভোটেও এর প্রভাব পড়েছে। এই স্লোগান দিয়ে দেওয়াল লেখাও শুরু হয়ে গিয়েছে। মোহিতলাল ঘাঁটি পাঁচলায় কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেই মোহিত ঘাঁটি এখন বিজেপি শিবিরে। ফলে এই এলাকায় বেশ চাপে তৃণমূল শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তিনি তাঁর নয়া দলের হয়ে দেওয়াল লিখন খেলা হবে স্লোগানটি অন্যভাবে ব্যাবহার করেছেন। তিনি বলছেন , ‘খেলার ঠ্যালা, বুঝবে হলে বেলা।’ উল্লেখ্য, এই স্লোগান ইতিমধ্যেই পাঁচলার বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.