বর্ধমান: কমবেশী এই দাবী পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রায় সব বিধানসভা আসনেই। ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই। জেলার বুকে প্রথম ভাতারে এই পোষ্টার পড়াকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। আর ভাতারের পর এবার একই ধরণের পোষ্টার, ফ্লেক্স দেওয়া হল জামালপুর বিধানসভা এলাকার একাধিক জায়গায়। হুমকির সুরে তৃণমূলের নামে বুধবার সকালেই এই ফ্লেক্স এবং পোষ্টারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সব ক্ষেত্রেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে – কারা এই দাবি করছেন? ফ্লেক্স বা পোষ্টারে এলাকার সাধারণ নাগরিকদের নাম দিয়ে এই প্রচার করা হলেও এর মধ্যে খোদ শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ক্রমশই প্রকট হচ্ছে।
প্রায় প্রতিটি বিধানসভা থেকেই এই দাবি উঠেছে। ভাতার বা জামালপুরের মত কোথাও তা প্রকাশ্যে এলেও একই দাবি মেমারী বিধানসভাতেও। এখনও রাজ্যের শাসকদল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। বুধবার একপ্রস্থ প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবার কথা থাকলেও পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা আগামী শুক্রবার প্রকাশিত হবার সম্ভাবনা। তার আগেই এলাকায় এলাকায় প্রার্থীর দাবিতে এই ধরণের পোষ্টারকে ঘিরে ভোটের রাজনীতি তুঙ্গে উঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে এই জামালপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন উজ্জ্বল প্রামাণিক। তিনি জয়ী হন। কিন্তু ২০১৬ সালে এই সিট পুনরায় দখল করেন বামেরা। দীর্ঘকাল ধরেই এই আসনটি বামেদের দূর্গ হিসাবে পরিচিত রয়েছে। যদিও ২০১১ সালে প্রবল তৃণমূল হাওয়ায় ধরাশায়ী হয় বামেরা। আসন্ন ২০২১ -এর এই বিধানসভায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জামালপুর কেন্দ্রকে বিজেপি রীতিমত পাখির চোখ করেছে। জামালপুর কেন্দ্রে জয়ের ব্যাপারেও বিজেপি অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার জামালপুর কেন্দ্রে নতুন মুখ আনার চেষ্টা চলছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় এক যুব নেতার নামও ঘোরাফেরা করছে। তার আগেই এদিন গোটা বিধানসভা জুড়ে স্থানীয় ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই বলে পোস্টার, ফ্লেক্স দেওয়ায় জোরকদমে চর্চা শুরু হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এদিন দেখতে পাওয়া এই ফ্লেক্সে হুমকির সুরও রয়েছে। বলা হয়েছে “পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভার নাগরিকরা কোনও ডিটেনশন ক্যাম্পের বাসিন্দা নন। তাই বলছি এখনও সময় আছে, প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে তৃণমূলের নেতারা সাবধান হন। এবারও যদি (উজ্জ্বল প্রামাণিক কার্যত বর্ধমান পুরসভার ৩২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা) বহিরাগত কাউকে জামালপুর বিধানসভায় প্রার্থী করা হয় তবে পরিণাম ভয়ংকর হবে”।
ফ্লেক্সে আরও লেখা হয়েছে – “ভোটের দিন সাপ লুডো খেলা খেলে দেবে জামালপুরের জনগণ”। উল্লেখ্য, এই জামালপুর বিধানসভা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই উজ্জ্বল প্রামাণিক বনাম মেহেবুব খানের মধ্যে বিরোধ চলছে। কখনও তা প্রকাশ্যে কখনও তা অপ্রকাশ্যে। স্বাভাবিকভাবেই এই পোস্টার এবং ফ্লেক্সের ঘটনায় জামালপুরের ভোট আবহাওয়া তপ্ত হতে শুরু করেছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মেহমুদ খানের অনুগামীরা মেহমুদ খানকেই প্রার্থী হিসাবে চাইছেন। এখন দেখার পালা চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর কি পরিস্থিতি দাঁড়ায় জামালপুর কেন্দ্রে।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.