দু-দিন আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শ্রমিক অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী নদীপ কউর। গত ১২ জানুয়ারি থেকে জেলবন্দি নদীপ। এদিকে মুক্তির পরেই জেল বন্দী অবস্থায় তার উপর হওয়া পাশবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হলেন নদীপ। মুখ খুললেন পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধেও। যা নিয়ে তুমুল চাপানৌতর শুরু হয়েছে সমাজের বিভিন্ন মহলে।
এদিকে হরিয়ানার কারনাল জেলে গত দেড়মাস ধরে বন্দি নদীপ। নদীপের বোন সমাজকর্মী রাজবী কউরের অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন সময়েই তাঁর দিদির অমানবিক শারীরিক অত্যাচার করেছেন পুরুষ পুলিশকর্মীরা। এমনকী তাঁর যৌনাঙ্গেও আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তবে শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, নদীপের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬০ ধারার অধীনে খারাপ আচরণ বা শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনও রেকর্ড মেলেনি। আর এই প্রেক্ষিতেই মিলেছে জামিন।
এদিকে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন নদীপের উপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সোচ্চার হচ্ছিলেন বিভিন্ন সমাজকর্মীরা। কিন্তু কিছুতেই মিলছিল না মুক্তি। এদিন সংবাদমাধ্যমের বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাই শোনান। এমনকী তার দলিত সত্ত্বা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নদীপের আরও অভিযোগ গত ১২ জানুয়ারি যখন তাকে গ্রেফতার করে কুন্দলি থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই সময় তথনও তিনি নির্যাতনের শিকার হয়। একাধিক পুলিশ কনস্টেবল তাঁর চুল ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তোলে বলেও অভিযোগ করেন নদীপ। এরপর থানায় নিয়ে আসার পথে রাস্তাতেও চলে অকথ্য নির্যাতন।
এদিন পুলিশি অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে বারবার শিউরে ওঠেন নদীপ। এমনকী লাঠি, জুতো দিয়ে তাঁর গোপনাঙ্গেও তীব্র ভাবে আঘাত করে পুলিশ। পরবর্তী তীব্র যন্ত্রণায় কাতর হলেও রেহাই মেলেনি রক্তাক্ত নদীপের। এমনকী পরবর্তী থানায় নিয়ে এসেও একটানা চলে অত্যাচার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেই সময় থানায় কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন না বলেও জানান নদীপ।
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করেছিল হরিয়ানা পুলিশ। যদিও হরিয়ানা সরকারের চক্রান্তের জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা রুজু করে হরিয়ানা পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ নদীপের। এমনকী গ্রেফাতির সময় শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঢাকতে তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হয়নি বলেই জানান নদীপ। যা আদপে ফৌজদারি আইনের ৫৪ নম্বর ধারার লঙ্ঘন।