বামেদের সঙ্গে জোট সম্পূর্ণ
বামেদের সঙ্গে জোট সম্পূর্ণ করে ফেলে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। হায়দরাবাদের মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসির সঙ্গে কথা বলার পরে দল গঠনের আগে থেকেই আব্বাসকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করেছিলেন সিপিএম রাজ্যসম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। অন্যদিকে বামেদের তরফে আব্বাসের সঙ্গে বামেদের জোট মসৃণ করার দায়িত্বে ছিলেন মহঃ সেলিম। ৩৪ বছর বাম শাসনে পুরোটা সময়েই আসন সংখ্যা বেশি থাকায় বেশিরভাগ সময়ে সিপিএম-এর কথাতেই সায় দিতে দেখা গিয়েছিল। এবার ক্ষমতায় না থাকা অবস্থাতে বাম শরিকরা সিপিএম-এর কথাতেই সায় দিয়েছে। এদিন আব্বাস জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বামেরা তাদেরকে ৩০ টি আসন ছেড়েছে।
কংগ্রেসের কাছে ১২ টি আসন দাবি
এদিন আব্বাস সিদ্দিকি জোটের ব্যাপারে ভাই নৌসাদ সিদ্দিকে দেখালেও, সূত্রের, খবর অনুযায়ী আইএসএফ-এর তরফে কংগ্রেসের কাছে তালিকা দিয়ে ১২ টি আসন দাবি করা হয়েছে। এর কমে কিছুতেই হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের আরও খবর কংগ্রেস এর মধ্যে ছয় থেকে সাতটি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে। তবে আব্বাসের দাবির প্রায় সবই মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে হওয়ায়, তাতে এখনও রাজি হতে পারেনি কংগ্রেস। এদিন পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি বলেছেন, সনিয়া গান্ধী চাইছেন, জোট হোক। তিনি কংগ্রেসের কাছে অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি করেছেন। তবে আব্বাস এদিন কংগ্রেসকে আর দুদিন সময় দিয়েছেন। তার মধ্যে জোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে, তিনি বামেদের সঙ্গে জোট করেই লড়াই করবেন এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ব্রিগেডের মঞ্চেই তাল কেটেছে
এদিন ব্রিগেডের মঞ্চেই অবশ্য জোট নিয়ে তাল কেটেছে। আব্বাস সিদ্দিকি মঞ্চে উঠতেই ভাষণ থামিয়ে দেন অধীর চৌধুরী। সবার সঙ্গে পরিচয় সারার পরে মহঃ সেলিম আব্বাসকে জনগণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু সেই সময় অধীর চৌধুরী বলেন তিনি আর বললেন না। সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির সামাল দেন বিমান বসু। অধীর চৌধুরী নিজের ভাষণ দেওয়ার পরে ভাষণ দিতে ওঠেন পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। তিনি শুরুতেই বাম শরিকদের জয়ী করার আহ্বান জানান। কারণ হিসেবে বলেন, তাদের সঙ্গে বামেদের জোট হয়ে গিয়েছে। বন্ধুত্ব করতে চাইলে কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা।
সিপিএম-এর সামনে জোট চ্যালেঞ্জ
তবে এই জোট এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সিপিএম-এর সামনে চ্যালেঞ্জের। ২০১৬-তে জোট দেখাতে রাহুল গান্ধীকে ছুটে আসতে হয়েছিল বঙ্গে। পার্কসার্কাস ময়দানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে সভা করেছিলেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের কোনও জোট হয়নি। এবার মহঃ সেলিমের নেতৃত্বে সিপিএম তথা বামেরা জোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে নিতে পারলেও কংগ্রেস তাতে এখনও রাজি নয়। কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, জোট করার জন্য তাঁরা অনেকটাই কম সময় পেয়েছেন। সোমেন মিত্রের মৃত্যুর ঘটনাও তাঁদেরকে পিছিয়ে দিয়েছে। ফলে কোনও ধর্মগুরুর দল গঠনের পরে (যা এই রাজ্যে প্রথমবার) তাদের নিয়ে ভোটে লড়াই করতে সিপিএম-এর ঝাঁপিয়ে পড়লেও কতটা সাফল্য আসবে, তা ভোটের ফলই বলবে।