অনুব্রতকে রুখতে বিজেপির তাস মণিরুল! চাণক্যের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে জল্পনা

দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ভোটের! এখন নজর প্রার্থী তালিকার দিকে। কে কোথায় কাকে প্রার্থী করবে সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজ্যের মানুষের।

শোনা যাচ্ছে, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকাতে এবার নাম থাকবে একগুচ্ছ সিনে-তারকার। পালটা বিজেপিও তাঁদের প্রার্থী তালিকাতে বেশ কিছু চমক রাখছে বলেই সূত্রের খবর। প্রার্থী নিয়ে গুঞ্জন-আলোচনার মধ্যেই সংবাদ শিরোনামে ফের একবার বীরভূমের বিতর্কিত নেতা মণিরুল ইসলাম। ভোট ঘোষণার পরেই হঠাত কেন বিজেপি দফতরে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন। এমনকি তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভবনাও শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

মুকুলের সঙ্গে বৈঠকে মণিরুল

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই মণিরুলকে ঘিরে বিদ্রোহ তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে লাভপুরের বিতর্কিত নেতা জানিয়েছিলেন তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। এমনকি, এরপর থেকে আর বিশেষ দেখা যায়নি মণিরুল ইসলামকে। কিন্তু আজ শনিবার হঠাৎ করেই হেস্টিংসের বিজেপি অফিসে দেখা গেল মণিরুলকে। শুধু দেখা যাওয়া নয়, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে রীতিমত বৈঠক করার ছবি ধরা পড়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। হঠাৎ করে ভোটের মরশুমে কেন বিজেপি অফিসে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে আসেন মণিরুল

মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মণিরুল। বীরভূমের লাভপুরের বিধায়ক। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে মনিরুল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। দিল্লিতে মুকুল-কৈলাশের হাত ধরে বিজেপিতে যান তিনি। তাঁর বিজেপিতে যোগদানের পরেই কার্যত বিদ্রোহ শুরু হয় দলের অন্দরে। রীতিমতো দল ছাড়ার হুমকি দিয়েছিলেন বিজেপির কালোসোনা মন্ডল-সহ অনেকেই। একটা সময় তাঁর অঙ্গুলি হেলনে বীরভূমে গাছের পাতা নড়ত বলে দাবি। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগও রয়েছে। সেই তাকেই দলে নেওয়াতে তৈরি হয় ক্ষোভ। এমনকি আরএসএসের তরফেও একটা চাপ আসে। যার প্রেক্ষিতে লাভপুরের বিতর্কিত নেতা জানিয়েছিলেন তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। এমনকি মুকুল রায় জানিয়েছিলেন যে, মণিরুলের দল ছাড়ছে। পাশাপাশি তিনি এজ জানিয়েছিলেন যে, ‘তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়নি বা এ নিয়ে কোনও কথাও হয়নি।' কিন্তু একুশের ভোটের মুখে বিজেপি অফিসে মনিরুলের উপস্থিতি এবং মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁকে আলোচনা করতে দেখে ফের তুঙ্গে উঠল জল্পনা।

প্রার্থী হওয়ার জল্পনা!

বিধানসভা ভোটে বীরভূমে বিজেপির তাস কি মনিরুল! কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছে বিজেপি। বীরভূমে অনুব্রত মন্ডলের খাস তালুক। সেখানে তাঁর নির্দেশেই সব কিছু হয়। ফলে তাঁর একদা ডানহাতকে দিয়েই কি এবার বীরভূম পেতে চায় বিজেপি। শুরু গুঞ্জন। সূত্রের খবর, মনিরুলকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। এমনকি এও শোনা যাচ্ছে যে, সরাসরি তাঁকে না মনিরুলের বড় ছেলে আসিফ ইসলাম বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হতে পারেন। তবে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু নয়। সবটাই আলোচনাস্তরে বলে জানা গিয়েছে।

বিজেপি সর্বভারতীয় দল, পাড়ার ক্লাব নয়

ভোট ঘোষণা হওয়ার পরই প্রশ্ন ওটে, তাহলে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে কবে? সেই প্রশ্নের উত্তরে মুকুল রায় বলেন, বিজেপি সর্বভারতীয় দল, পাড়ার ক্লাব নয়। তাই বিজেপি তার মতো করেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হব। তাহলে কি প্রার্থী ঠিক করবে দিল্লিই। সে ব্যাপারে মুকুল রায় তাৎপর্যপূর্ণ উত্তর দিয়েছেন। মুকুল রায় বলেন, বিজেপির প্রার্থী তালিকা দিল্লি থেকেই হয়, সেটাই সচরাচর হয়ে এসেছে। তবে এবার কী হবে বলতে পারব না। বিজেপিকে সর্বভারতীয় দল বলে সুখ্যাতি করলেও তিনি যে এবার নির্বাচনে সে অর্থে কোনও দায়িত্ব নেই, তা বুঝিয়ে দিলেন ছোট্ট একটা কথায়। এবার প্রার্থী তালিকা দিল্লি থেকে হবে নাকি কলকাতায় ঘোষিত হবে, তাঁর জানা নেই।

More WEST BENGAL ASSEMBLY ELECTION 2021 News