নন্দীগ্রামে মমতার লড়াইয়ের পথ 'কঠিন' করতে কোমর বেঁধে নামছেন আব্বাসরা! তুঙ্গে প্রস্তুতি

সিপিআই কার্যত জোট রাজনীতির ময়দানে তাবড় স্ট্রোক দিয়ে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে দিতে চলেছে আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফকে। কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটের মাঝে আব্বাসদের আসনের দাবি একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। তারই মাঝে শোনা যাচ্ছে , নন্দীগ্রামে ভোটের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জোট শিবিরের প্রার্থী হতে পারেন আব্বাসদের পক্ষের কেউ। এই নিয়ে কার্যত কোমর বেঁধে নামছে আব্বাসক্যাম্প।

৯০ আসনে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক 'ডিসাইডিং ফ্যাক্টর'

বামেদের মসনদ থেকে সরাতেও মমতার কাছে হাতিয়ার ছিল মুসলিম ভোট। ২৯৪ আসনের বাংলা বিধানসভার লড়াই জিততে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই ভোটব্যাঙ্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভালোই জানে প্রশান্ত কিশোরের থিঙ্কট্যাঙ্ক। ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপি যেখানে হিন্দুত্ব কার্ডে বহু লড়াই জিতে নিতে মরিয়া ছিল, সেখানে তৃণমূলের জোর ছিল মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক। সেই জায়গা থেকে নন্দীগ্রামে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির আইএসএফ দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই তা তৃণমূলের পক্ষে ভাববার বিষয় হবে।

মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ও তৃণমূল

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ২.৪৭ কোটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। সেই জায়গা থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল ১২ আসন খুইয়েও (২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের তুলনায়) ৫ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে। তৃণমূলের দখলে শেষ লোকসভা ভোটে ৪৩ শতাংশ ভোট শেয়ার ছিল। যা মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। ঠিক এই জায়গায় দাঁড়িয়ে হুগলির ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি বাংলার কোণে কোণে একটা বড় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে নিজের দিকে আনতে চাইছেন। যা ২০২১ সালে তাঁর ভোট-অভিষেকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। উল্টো দিকে, এই ফ্যাক্টরই মমতা ক্যাম্পকে উদ্বেগে রাখতে পারে নন্দীগ্রামে, যদি আইএসএফ প্রার্থীপদ চূড়ান্ত করে।

আইএসএফএর তরফে নৌসাদ কী বলছেন?

এদিকে আব্বাসের ভাই তথা আইএসএফর নেতা নৌসাদ সিদ্দিকি বলছেন, 'হ্যাঁ, আমাদের ও বাম কংগ্রেসের মধ্যে আলোচনা চলছে। যাতে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আইএসএফ প্রার্থী দিতে পারে।' একথা তিনি এক নামী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি , খুব শিগগিরিই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সামনে আসবে।

মমতার বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামছেন আব্বাসরা!

শোনা যাচ্ছে যে আব্বাস সিদ্দিকিরা খুব শিগগিরিই নন্দীগ্রামে একটি বড়সড় 'ব়্যালি' করতে চলেছেন। সেই মেগা ব়্যালির আগে নৌসাদ টিভি এইট্টিনকে জানিয়েছেন, ' আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে একটি মেগা ব়্যালি আমরা করব। তার আগে প্রার্থীপদ নিয়ে সমস্ত ফরম্যালিটি সম্পন্ন হবে। ' তিনি জানান, এই বিষয়ে আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরিই তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে এর ঘোষণা করবেন।

মমতা কী বলেছিলেন?

এদিকে, শুভেন্দুদের অধিকারীগড় হিসাবে পরিচিত নন্দীগ্রাম থেকে নিজের প্রার্থীপদ আগেই ঘোষণা করেছেন মমতা। তেখালির সভায় গত ১৮ জানুয়ারি মমতা বলেছিলেন, নন্দীগ্রাম তাঁর কাছে খুবই আবেগের একটি জায়গা। তাছাড়াও এটি তাঁর 'লাকি' জায়গা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজে তৃণমূলের হয়ে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াতে চান।

নন্দীগ্রামে অ্যাডভান্টেজে কি বিজেপি?

প্রসঙ্গত, মনে করা হচ্ছে, নন্দীগ্রামে যদি আইএসএফ বাম-কংগ্রেসেদের তরফের জোট থেকে দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক অবশ্যই তাঁরা টার্গেট করবেন। সেই জায়গা থেকে উদ্বেগ বাড়তে পারে মমতা শিবিরের। যা অবশ্যই বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে পারে। তবে এই সমস্ত ফ্যাক্টরের মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন হল , কে বিজেপির হয়ে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হবেন? সেই লাখ টাকার প্রশ্নের উত্তর আসলেই, এই সমীকরণ ঘিরে জল্পনা আরও চরমে উঠবে।

মনোজ তিওয়ারির পালটা বিজেপির ঘুঁটি কি অশোক দিন্দা? জোর চর্চা রাজনৈতিকমহলে

More MAMATA BANERJEE News