থানাতে বেধড়ক মারধর নদ্বীপকে
নদ্বীপ তাঁর জামিনের আবেদনে তিনি আরও দাবি করেছেন যে তাঁকে গ্রেফতারের পর পুলিশের আধিকারিকেরা তাঁকে পুলিশ থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু থানায় কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী ছিল না সেই সময় এবং পুলিশের কর্মীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। নদ্বীপ তাঁর জামিনের আবেদন দায়ের করেন তাঁর আইনজীবী অর্শদীপ সিং চিমা ও পবনদীপ সিং ও অন্য আইনজীবীদের মাধ্যমে। মহিলা আন্দোলনকারীর পক্ষে শীর্ষ আইনজীবী আরএস চিমা জানিয়েছেন যে নদ্বীপকে মিথ্যাভাবে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা করে ফাঁসানো হয়েছে।
হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা
এখানে উল্লেখ্য যে, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হরিয়ানা পুলিশ কর্তৃক ২৩ বছর বয়সী শ্রমিক আন্দোলন কর্মী নদ্বীপ কউরকে (মজদুর অধিকার সংগঠনের সদস্য) অবৈধভাবে বন্দি করে রাখার অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে। বিচারপতি অরুণ কুমার ত্যাগির একক বেঞ্চ তাঁর নির্দেশে এটা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে ২০২১ সালের ৬ ও ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত এক ই-মেল মারফৎ জানতে পারে যে হরিয়ানা পুলিশ দলিত শ্রমিক আন্দোলনকারী নদ্বীপ কউরকে অবৈধভাবে বন্দি করে রেখেছে।
জামিনের আবেদনে অন্যান্য বিষয়
নদ্বীপকে লক্ষ্য করার উদ্দেশ্য ছিল তিনি যাতে শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ করতে না পারেন কারণ তিনি কৃষক প্রতিবাদের পক্ষে বিপুল সমর্থন আদায় করতে সফল হয়েছিলেন এবং যা প্রশাসনকে হতাশ করেছিল।
ফার্স্ট ক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রটের নির্দেশ সত্ত্বেও নদ্বীপকে বহুদিন মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়নি।
পুলিশ আধিকারিকদের দাবি করা তথ্য অনুসারে ৩৪৪ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করা হয়নি।
পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন নদ্বীপের ওপর অত্যাচার করা হয় এবং তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজেসই করিয়ে নেওয়া হয়।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি অবনীশ ঝিঙানের বেঞ্চের সামনে এই আবেদন দায়ের করা হয়েছে, তবে আদালত আদেশ দিয়েছে যে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্বতঃপ্রণোদিত মামলার পাশাপাশি এই আবেদনটি তালিকাভুক্ত করা হবে।
নদ্বীপ কউর কে
নদ্বীপ কউর মজদুর অধিকার সংগঠনের সদস্য এবং গত ১২ জানুয়ারি হরিয়ানা-দিল্লির মাঝে সিংঘু সীমান্তে অবৈতনিক শ্রমিকদের প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন তিনি, সেই সময় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং তারপর থেকে তিনি হরিয়ানার কর্নাল জেলে রয়েছেন। ১২ জানুয়ারি সোনিপথ পুলিশ নদ্বীপকে গ্রেফাতারের পর তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, হিংসাত্মক ঘটনা এবং কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে মারধর করার ধারা দায়ের করা হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় আদালত নদ্বীপের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। যদিও সোনিপথ পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে ওইদিন কুণ্ডলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিটের পরিচালন ব্যবস্থার আধিকারিকের সঙ্গে কর্মীদের হাতাহাতি শুরু হয়েছে এবং কর্মীরা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশের কাছে এই খবর আসা মাত্র ঘটনাস্থলে যায় তারা সেখানে নদ্বীপ এবং তাঁর সংগঠনের কর্মীরা লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়, যাতে সাতজন পুলিশ কর্মী আহত হন। এই ঘটনার পর নদ্বীপকে গ্রেফতার করা হয় কিন্তু তাঁর সহযোগীরা পালাতে সক্ষম হন। পুলিশ এও জানিয়েছে যে মেডিক্যাল অফিসারের কাছে বা মুখ্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পুলিশ তাঁকে মারধর করেছে এই বিষয়টি কখনই জানাননি নদ্বীপ।
মিনা হ্যারিসের সমর্থন
তবে নদ্বীপ কউরের এই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকী নদ্বীপকে সমর্থন করে টুইটও করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বোনঝি মিনা হ্যারিসও।