ঋক বেদের কথা মনে করালেন বিচারক
এদিকে দিশার মুক্তির পরেই জামিনকে সমর্থন করে মঙ্গলবার নেটমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় দিশার সমর্থনকারীরা। এমনকী অভিযোগ এনেও উপযুক্ত তথ্য দাখিল করতে না পারায় দিল্লির পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন অনেকে। এদিকে দিশার জামিন দিতে গিয়ে ঋক বেদের কথা মনে করিয়ে দেন বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা। একইসাথে আদিমকাল থেকে ভারতে যে বরাবরই ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন মতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখতে পাওয়া গিয়েছে তাও তুলে ধরেন তিনি।
জামিন দিতে গিয়ে কী বললেন বিচারক ?
অন্যদিকে দিশার মুক্তির ব্যাপারে জোরালো সওয়াল করে ধর্মেন্দ্র রানা বলেন, " দিশাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার পক্ষে খুব সামান্য যে প্রমাণ দিল্লি পুলিশ আদালতে পেশ করেছে,তা অসম্পূর্ণ। শুধু তার ভিত্তিতে কেন কোনও পূর্ব অপরাধের রেকর্ড না থাকা ২১ বছরের তরুণীকে তাঁর জামিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না।" প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দিশাকে তাঁর বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা। দিশার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছিল তারা।
ভারতীয় সংষ্কৃতির বহুত্ববাদের কথা মনে কারাল আদালত
এদিকে গত সপ্তাহে দিশার বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ৩ দিন বাড়িয়েছিল দিল্লির পটিয়ালা হাউস কোর্ট। পরে তাঁর একদিনের পুলিশ হেফাজতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় এবার একটানা প্রায় ১০ দিন পর জামিন পেলেন তিনি। জামিন দেওয়ার সময় ঋক বেদে ভারতীয় সংষ্কৃতির বহুত্ববাদ, ভিন্ন মতের সহাবস্থানের পাশাপাশি ভরতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদের অবতারনা করে সাধারণ মানুষের বাক স্বাধীনতার উপরেও জোরালো সওয়াল করেন বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা।
‘দেশদ্রোহিতার’ প্রমাণ নেই
অন্যদিকে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কৃষকদের আন্দোলন সংক্রান্ত একটি ‘টুলকিট' টুইট করেছিলেন সুইডিশ পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। পুলিশের দাবি ওই টুলকিট এডিট করেছিলেন দিশা। এমনকী টুলকিটের স্রষ্টা পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের সঙ্গেও দিশার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। যারা আদপে নাকি খালিস্তান পন্থী। এমনকী দিশার টুলকিটেও দেশদ্রোহিতার বিশেষ কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও জানা ধর্মেন্দ্র রানা।
দুটি হাইপার লিঙ্কে আপত্তিকর কিছুই পেলনা আদালত
বিচারক ধর্মেন্দ্র রাণার সাফ বক্তব্য, দিশার টুলকিটে আদপে দুটি হাইপার লিঙ্কের দেখা মিলেছে যা আদপে গুগল ডকুমেন্ট ফরম্যাটে ছিল। কিন্তু তাতে বিশেষ আপত্তিকর কিছু নেই বলেই মনে করেছেন তিনি। এদিকে দিল্লি পুলিশের একের পর অভিযোগের মুখে পড়েও নিজের সমর্থনে দিশা অবশ্য বলেছিলেন, তিনি ওই টুলকিট তৈরি করেননি। ওই টুলকিটের দু'একটি ছত্র সম্পাদনা করেছিলেন। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাও ভিত্তিহীন।