কলকাতাঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই নোটিশ পাঠানো আসলে বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্ত। এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রবিবার দুপুরে সিবিআই আধিকারিকরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে সিআরপিসি আন্ডার সেকশন ১৬০ ধারায় নোটিশ দেয়।
এই ঘটনাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে কুণাল ঘোষ মন্তব্য করে বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কোনও রকম প্রমাণ ছাড়াই তাঁকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। আসলে অমিত শাহকে অভিষেকের অভিযোগের ভিত্তিতে আগামীকাল আদালতে হাজির হওয়ার সমন দেওয়া হয়েছে। তাই অভিষেকের স্ত্রীর নামে সিবিআই নোটিশ পাঠানো হল। অভিষেক আইনীভাবে মাথা উঁচু করে এই লড়াইয়ে জয়ী হবেন।” প্রসঙ্গত কয়লাকাণ্ডে এর আগেই বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ধরা হয়েছে। এই ব্যবসায়ীদের জেরা করে সিবিআই এমন কিছু তথ্য পেয়েছে যার ভিত্তিতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে সাক্ষী হিসাবে সিবিআই জেরা করতে চাইছে।
এর আগেই তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রকে নোটিশ করেছে সিবিআই। তিনি এখন পলাতক। সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে কয়লা পাচারকাণ্ডে যাদের এ পর্যন্ত সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন, তাদের কাছে যে তথ্য পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতেই রুজিরাকে জেরা করতে চাইছে সিবিআই।
এদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বারুইপুরের বিজেপির সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্য রাখার সময় একটি চেকের রেপ্লিকা তুলে দেখান। তারপর শুভেন্দু বলেন, “ম্যাডাম নারুলা কে? এই দেখুন এখানে প্রমাণ আছে কে তোলাবাজির টাকা ব্যাংককে পাঠান। এই ম্যাডাম নারুলা হলেন তিনি, যিনি গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিমানবন্দরে সোনা সহ ধরা পড়েছিলেন। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এই ম্যাডাম নারুলা কে।”
তবে এর উত্তর কাঁথির সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়ে বলেছিলেন, “একজন ভাষণ দিতে উঠে সারাদিন শুধু অভিষেক অভিষেক করছেন। আমার সঙ্গে না পেরে এখন আমার স্ত্রীকে আক্রমণ করছে।”
তবে এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “জানাই ছিল, রাজনৈতিক ভাবে না পেরে বিজেপি এসব করবে। আসলে বিজেপির তো কারও সঙ্গে সুসম্পর্ক নেই শুধু সিবিআই আর ইডির সঙ্গেই সুসম্পর্ক আছে। তাই এটা করছে।”
তবে সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজই তারা অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে জেরা করতে চাইছে। সেই মতো তারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর বাড়িতেই নোটিশ দিয়ে এসেছে। সিআরপিসির ১৬০ ধারায় দেওয়া এই নোটিশে সিবিআই অভিষেকের স্ত্রীকে তাঁ বাড়িতে, আজই জেরা করতে চাইছে। তাই নোটিশে সিবিআই অধিকারিকদের মোবাইল নাম্বার দিয়ে তাতে উল্লেখ করেছে, রুজিরাদেবী বাড়ি ফিরেই যেন সিবিআই আধিকারিকদের দেওয়া মেবাইল নাম্বারে ফোন করে। কেননা সিবিআই আজই রুজিরাকে কয়লাকাণ্ডে জেরা করতে চায়।
এদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “ভোটের আগে এসব হচ্ছে কিন্তু তদন্ত যেন শ্লথ হয়ে না যায়।” বিজেপি নেতা ও রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “সিবিআই তদন্ত করতে চাইলেই বলা হয় এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য করা হয়। আবার তদন্ত গতি হারা হলে বলা হয় মোদী-মমতা গটআপ। আমি চাই আইন আইনের পথে চলবে।”
প্রসঙ্গত গত ১৫ দিন আগেই সিবিআইর নজরে আসে কয়লাকাণ্ডে রুজিরাদেবীর নাম। সিবিআই তাঁর অ্যাকাউন্টে নজরদারি চালিয়ে এমন কিছু তথ্য পেয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে রুজিরাদেবীর অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংকক ও লন্ডনে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। তার পরই আজ রবিবার দুপুর ২ টোর কিছু আগে সিবিআইর ছয় প্রতিনিধি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসে তাঁর স্ত্রী রুজিরাদেবীর খোঁজ করেন। তারপর তারা জানতে পারেন রুজিরা বাড়িতে নেই। সিবিআইর এই প্রতিনিধিদলে মহিলা অধিকারিকও ছিলেন। তবে সিবিআইর তরফে রুজিরাদেবীকে নিজাম প্যালেসে তলব না করে তাঁর বাড়িতে বসে আজই জেরা করতে চেয়ে নোটিশ দিয়ে এসেছে।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.