সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : তাঁর লেখা গানেই উদ্বুদ্ধ হতেন মুক্তিযোদ্ধারা। একের পর এক গান তার প্রমান। সেই সময় স্বাধীন বাংলা বেতারে সম্প্রচারিত তার লেখা গানগুলি মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতো। উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরেই বেতারে সম্প্রচারিত হয়েছিল তাঁরই লেখা গান। তিনি গোবিন্দ হালদার। এই কলকাতারই মানুষ ছিলেন তিনি। থাকতেন মানিকতলায়। ২০১৫ সালে ৮৪ বছর বয়সে মারা যান তিনি। ২১ ফেব্রুয়ারির এমন দিনেই।

আয়কর বিভাগে কর্মরত অবস্থায় বন্ধু কামাল আহমেদের অনুপ্রেরণায় এবং উৎসাহে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর গান রচনা করেন। কামাল আহমেদ তাকে স্বাধীন বাংলা বেতারের কর্ণধার কামাল লোহানীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তার হাতে ১৫টি গানের একটি খাতা দেন। এই গানগুলোর মধ্যে স্বাধীন বেতারে প্রথম প্রচারিত হয় সমর দাসের সুরারোপিত পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে গানটি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই তার আরও কিছু গান স্বাধীন বেতারে সম্প্রচারিত হয়।

পাক বাহিনীর আত্মসমর্থনের খবর পাওয়ার পরপরই সন্ধ্যায় ১৬ই ডিসেম্বর প্রচারিত হয় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে গানটি যা সুর দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী আপেল মাহমুদ এবং মূল কণ্ঠ দিয়েছিলেন স্বপ্না রায়। আরও কণ্ঠ দিয়েছিলেন আপেল মাহমুদ এবং সহশিল্পীরা। গোবিন্দ হালদার পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর রচিত প্রথম কবিতা ছিল ‘আর কতদিন’। তিনি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কবিতা ও গান লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দূর দিগন্ত’।

তাঁর বিখ্যাত মুক্তিযুদ্ধের গান গুলির মধ্যে রয়েছে , এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, লেফট রাইট লেফট রাইট, হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার, পদ্মা মেঘনা যমুনা, চলো বীর সৈনিক, হুঁশিয়ার, হুঁশিয়ার বাংলার মাটি অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার বরেণ্য এ গীতিকারকে ‘মুক্তিযোদ্ধা মৈত্রী সম্মাননা’ দিয়ে সম্মানিত করে।

২০১৫ সালে মারা যান এই বিখ্যাত গীতিকার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি,লিভার ও স্নায়ু-জটিলতাসহ চর্মরোগ ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। শেষ দিকে এসে বাকশক্তিও অনেকাংশে লোপ পেয়েছিল। ভাল করে আর কথাও বলতেও পারতেন না। কিডনির অসুস্থতা নিয়ে ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর তিনি জীতেন্দ্রনাথ রায় হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। স্বাভাবিকভাবে খাদ্যগ্রহণে অক্ষম হয়ে পড়ায় তাকে রাইস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হত। বাংলাদেশবান্ধব এই গীতিকারের অসুস্থতা ও আর্থিক দুরবস্থার কথা শুনে তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারে সম্প্রচারিত তার লেখা গান মুক্তিযোদ্ধাদের আকুল ও অনুপ্রাণিত করতো করতো। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সম্প্রতি ভারত সফরে এসে অসুস্থ এই গীতিকারকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি তার চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছিলেন। ওই সময় রাষ্ট্রপতি আইসিইউতে থাকা গোবিন্দ হালদারকে বলেছিলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আপনার বড় ভূমিকা ছিল। আপনার অনেক গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ’

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

সিনেমার বড় পর্দা থেকে টেলি পর্দার জগতে কতটা সম্মান পাচ্ছেন মেয়েরা? জানাবেন মিডিয়া টিচার অনুজা বাগচী।