পুজোর সময় থেকে সম্পর্ক প্রকাশ্যে
পুজোর সময় বর্তমান রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিমল গুরুং-এর সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে বসে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি বিজেপিকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। বিজেপি তাঁকে বছরের পর ধোঁকা দিয়েছে বলে অভিযোগ করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের জন্য যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা করেছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন গোর্খাদের সঙ্গে প্রতারণা করলে কী হয়, তা তিনি রাজু বিস্তা ও দিলীপ ঘোষদের বুঝিয়ে দেবেন।
বলেছিলেন উত্তরবঙ্গের সব আসন তৃণমূলের
বিমল গুরুং দাবি করেছিলেন, তাঁর সাহায্য নিয়েই রাজ্যে একটি আসন পেয়েছিল বিজেপি। এখন তা থেকেই বেড়ে হয়েছে ১৮ টি। কিন্তু সামনের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ৭০ থেকে ৮০ টির বেশি আসন পাবে না। পাশাপাশি তৃণমূল উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ আসন পাবে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে পাহাড় ও ডুয়ার্সে তৃণমূলের হয়ে বেশ কিছু সভা করে ফেলেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন পাহাড়ে দুজন সম্পর্কে ভাবতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁরা হলেন, পাহাড়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিনয় তামাং এবং অনিত থাপা।
২০১৭ সালে উত্তপ্ত হয়েছিল পাহাড়
আলাদা রাজ্যের দাবিতে ২০১৭-তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাহাড়। দিনের পর দিন বনধের পাশাপাশি ছিল নাশকতামূলক কাজও। সেই সময় গুরুং সমর্থন পেতেন বিজেপির থেকে। পুলিশ অফিসারকে হত্যার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা করেছিল সরকার। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার সংখ্যা শতাধিক বলেই জানা গিয়েছে। বিমল গুরুংকে খুঁজে না পাওয়ায় আদালতের মাধ্যমে তাঁর পাতলেবাসের বাড়ির দখল নিয়েছিল রাজ্য সরকার।
এবার মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ
এবার বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এব্যাপারে শনিবার নবান্ন থেকে দার্জিলিং পুলিশের কাজে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। এব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর জন্য সরকারি আইনজীবীকে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের কারণ জানাতে হবে। বিচারক তা গ্রহণযোগ্য হলে, নির্দেশ দেবেন। তবে খুন ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে।
এব্যাপারে সমালোচনায় সরব হয়েছে বাম-বিজেপি। শিবির বদলানোয় রাজনৈতিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে তারা। পাল্টা তৃণমূল বলেছে, ভোটের মুখে তারা কেবল রাজনীতির কথাই ভাবছে। আদালতের প্রক্রিয়া মেনেই সব কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।